হাওড়া: তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস উপলক্ষে ২১ জুলাই (July 21 Rally) কলকাতায় আয়োজিত হতে চলেছে দলের অন্যতম বড় রাজনৈতিক সমাবেশ। প্রতিবারের মতো এবারও এই সমাবেশে যোগ দিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা কলকাতায় আসছেন। সেই উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই হাওড়া স্টেশনে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন হাজার হাজার মানুষ, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কর্মীরা। তাঁদের থাকার ও খাওয়ার জন্য হাওড়া জেলায় শ্যাম গার্ডেনে প্রায় ২০ হাজার মানুষের উপযুক্ত বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
রবিবার সকাল থেকেই শিলিগুড়ি, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, মালদহ, দিনাজপুর সহ একাধিক জেলা থেকে ট্রেনে চেপে হাওড়া পৌঁছেছেন তৃণমূলের কর্মীরা। হাওড়া স্টেশনের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে ‘রিসিভিং গেট’ এবং একটি অস্থায়ী মঞ্চ। সেখান থেকেই তাঁদের স্বাগত জানিয়ে বাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্যাম গার্ডেন, সালকিয়া শ্রীরাম বাটিকা, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, সল্টলেক স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র ইত্যাদি অস্থায়ী ক্যাম্পগুলিতে।
খাদ্য ও থাকার বন্দোবস্ত ঘিরে হাওড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। রবিবার সকালে রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রী অরূপ রায় ও উত্তর হাওড়ার বিধায়ক তথা হাওড়া সদর জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌতম চৌধুরী শ্যাম গার্ডেনে উপস্থিত থেকে রান্না ও অন্যান্য প্রস্তুতির তদারকি করেন।
এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী অরূপ রায় জানান, “আমরা প্রায় ২০ হাজার কর্মী-সমর্থকের থাকার ও খাওয়ার বন্দোবস্ত করেছি। আজ রাতে তাঁদের ডিম-আলু ও ভাত পরিবেশন করা হবে। কাল সকালে খিচুড়ি ও চাটনি দিয়ে সকালের জলখাবার করিয়ে তাঁদের ধর্মতলার সভাস্থলে নিয়ে যাওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে চলছি। ধর্মতলায় সভার কারণে শহরের কোথাও ট্র্যাফিক অবরোধ করব না। সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে পৌঁছে যাবেন সভাস্থলে।”
জানা গেছে, প্রতিটি ক্যাম্পে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হাওড়া শহরের পুলিশ প্রশাসন ও পুরসভা যৌথভাবে সমস্ত পরিকাঠামো নিশ্চিত করতে কাজ করছে। হাওড়ার তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এবার ধর্মতলার সভা থেকে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন, যার দিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্য।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরে এই শহিদ দিবস সমাবেশ তৃণমূলের কাছে একপ্রকার শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ। এই মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করে তুলতে চাইবেন এবং বিজেপিকে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
শেষমেশ, ২১ জুলাই শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, বরং এটি রাজ্যের শাসক দলের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার দিন, যেখানে তাদের সাংগঠনিক দক্ষতা, জনসংযোগ এবং ভবিষ্যৎ কৌশলের ঝলক স্পষ্ট হবে।