চন্ডিগড়ে পুলিশের হাতে গোমাংস উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য

চণ্ডীগড় পুলিশ গত শুক্রবার (Beef Seized)একটি গোপন সূত্রের ভিত্তিতে শহরের সেক্টর ৩৮ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪১ কেজি সন্দেহজনক গোমাংস উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় চণ্ডীগড় পুলিশের…

Beef Seized by police in chandigarh

চণ্ডীগড় পুলিশ গত শুক্রবার (Beef Seized)একটি গোপন সূত্রের ভিত্তিতে শহরের সেক্টর ৩৮ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪১ কেজি সন্দেহজনক গোমাংস উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় চণ্ডীগড় পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর গুরজিওয়ান সিং জানিয়েছেন, “যারা এই মাংস উদ্ধার করেছে, তারা দাবি করছে এটি গোমাংস।

আমি মেডিকেল টিমকে ডেকেছি এবং একটি অভিযোগও দায়ের করেছি। মাংসের ওজন ৪১ কেজি। ডাক্তাররা নমুনা সংগ্রহ করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এই ঘটনায় চণ্ডীগড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। গোমাংসের বিক্রি ও সংরক্ষণ পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় কঠোর আইন দ্বারা নিষিদ্ধ।

   

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সেক্টর ৩৮-এর একটি গোডাউনে গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে একটি ফ্রিজারে রাখা ৪১ কেজি মাংস উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় বাসিন্দারা এবং পুলিশ কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন যে এটি গোমাংস হতে পারে। তবে, মাংসের প্রকৃতি নিশ্চিত করতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে।

গুরজিওয়ান সিং জানিয়েছেন, “আমরা কোনও তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। মেডিকেল টিম এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা মাংসের নমুনা পরীক্ষা করছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”এই ঘটনায় পাঞ্জাব গো-সংরক্ষণ আইন, ১৯৫৫ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় গো-হত্যা ও গোমাংস বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, এবং এই ধরনের অপরাধে জড়িত থাকলে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং জরিমানার বিধান রয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে গোডাউনের মালিক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। তবে, এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, কারণ তদন্ত ফরেনসিক প্রতিবেদনের উপর নির্ভরশীল।

এই ঘটনা স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। সেক্টর ৩৮-এর বাসিন্দারা এবং বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে এবং দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতা রমেশ শর্মা বলেছেন, “গোমাংসের বিক্রি আমাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের উপর আঘাত।

পুলিশকে অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।” অন্যদিকে, কিছু স্থানীয় বাসিন্দা এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন এবং শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।চণ্ডীগড় পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সম্ভাব্য অপরাধী চক্রের তদন্ত করছে। সাব-ইন্সপেক্টর গুরজিওয়ান সিং বলেছেন, “আমরা জানার চেষ্টা করছি এই মাংস কোথা থেকে এসেছে এবং কীভাবে গোডাউনে পৌঁছেছে।

Advertisements

ফরেনসিক প্রতিবেদনের পর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।” তিনি আরও জানিয়েছেন যে পুলিশ এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে এবং জনসাধারণের মধ্যে শান্তি বজায় রাখতে সতর্ক রয়েছে।এই ঘটনা পাঞ্জাব ও হরিয়ানার মতো রাজ্যে গোমাংস নিয়ে সংবেদনশীলতাকে আবারও সামনে এনেছে।

গত কয়েক বছরে এই ধরনের ঘটনাগুলি প্রায়ই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার কারণ হয়েছে। ২০২৩ সালে হরিয়ানার গুরুগ্রামে একটি অনুরূপ ঘটনায় গোমাংস উদ্ধারের পর স্থানীয় বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনাগুলি শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলার সমস্যা নয়, বরং সামাজিক সম্প্রীতির উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

চণ্ডীগড়ের স্থানীয় নাগরিক সংগঠনগুলি এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত এবং স্বচ্ছতার দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে, তারা জনগণকে শান্ত থাকার এবং গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছে, যেখানে কেউ কেউ এটিকে অপরাধী চক্রের কাজ বলে মনে করছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে ধর্মীয় সংবেদনশীলতার সঙ্গে জড়িয়ে ফেলছেন।

রক্ষণে শৃঙ্খলা, আক্রমণে ঝড়! ISL ইতিহাসে সাফল্যের প্রতীক প্রাক্তন বাগান কোচ

এই ঘটনা চণ্ডীগড় পুলিশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ফরেনসিক প্রতিবেদনের ফলাফল এই মামলার দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে। পাশাপাশি, এই ঘটনা আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসনের দক্ষতার উপরও নতুন প্রশ্ন তুলেছে। আগামী দিনে এই তদন্তের ফলাফল এবং এর সামাজিক প্রভাব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।