আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে কৃষি খাতে সাফল্যের নজির গড়ল ভারত

ভারতের নেতৃত্বে পূর্ণ শস্য মিলেটের (Agriculture) জন্য একটি গ্রুপ স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়নের কাজ গত বছর কোডেক্স অ্যালিমেন্টারিয়াস কমিশনের (সিএসি৪৭) ৪৭তম অধিবেশনে অনুমোদিত হয়েছিল। এই উদ্যোগটি সম্প্রতি…

Agriculture mile stone for India

ভারতের নেতৃত্বে পূর্ণ শস্য মিলেটের (Agriculture) জন্য একটি গ্রুপ স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়নের কাজ গত বছর কোডেক্স অ্যালিমেন্টারিয়াস কমিশনের (সিএসি৪৭) ৪৭তম অধিবেশনে অনুমোদিত হয়েছিল। এই উদ্যোগটি সম্প্রতি ১৪ থেকে ১৮ জুলাই, ২০২৫ পর্যন্ত ইতালির রোমে ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত কোডেক্স অ্যালিমেন্টারিয়াস কমিশনের ৮৮তম নির্বাহী কমিটির অধিবেশন (সিসিইএক্সইসি৮৮)-এ ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

ভারত এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে, এবং মালি, নাইজেরিয়া এবং সেনেগাল এই কাজে সহ-সভাপতি হিসেবে অংশ নিচ্ছে। কমিটি এই কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছে এবং ভারতের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছে।মিলেট, যা বিশ্বব্যাপী পুষ্টিকর শস্য হিসেবে পরিচিত, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

   

ভারত, যিনি বিশ্বের বৃহত্তম মিলেট উৎপাদক, এই শস্যের পুষ্টিগুণ এবং টেকসই চাষের সম্ভাবনাকে বিশ্বব্যাপী প্রচার করার জন্য ‘আন্তর্জাতিক মিলেট বছর ২০২৩’-এর মাধ্যমে নেতৃত্ব দিয়েছিল। এই গ্রুপ স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়নের উদ্যোগটি মিলেটের গুণমান, নিরাপত্তা এবং বাণিজ্যিকীকরণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড তৈরির লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে।

এটি বিশ্ববাজারে মিলেটের চাহিদা বাড়াতে এবং কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করবে।কোডেক্স অ্যালিমেন্টারিয়াস কমিশন, যা রাষ্ট্রসংঘের এফএও এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দ্বারা পরিচালিত, খাদ্য নিরাপত্তা ও গুণমানের জন্য আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ করে। ভারতের নেতৃত্বে এই গ্রুপ স্ট্যান্ডার্ডে পূর্ণ শস্য মিলেটের প্রকারভেদ, পুষ্টিগুণ, প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি এবং প্যাকেজিংয়ের মান নির্ধারণ করা হবে।

এই মানটি বিশ্বব্যাপী মিলেটের বাণিজ্য সহজতর করবে এবং ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর পণ্য নিশ্চিত করবে। সিসিইএক্সইসি৮৮ অধিবেশনে ভারতের প্রতিনিধি দল এই প্রকল্পের অগ্রগতি উপস্থাপন করে জানিয়েছে যে এই স্ট্যান্ডার্ড ২০২৬ সালের মধ্যে চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারতের কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এপিইডিএ) এই প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এপিইডিএ-র চেয়ারম্যান অভিষেক দেবরায় জানিয়েছেন, “মিলেটের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মান প্রণয়ন ভারতের কৃষকদের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

এটি বিশ্ববাজারে ভারতীয় মিলেটের চাহিদা বাড়াবে এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।” তিনি আরও বলেছেন যে মালি, নাইজেরিয়া এবং সেনেগালের সঙ্গে সহযোগিতায় এই প্রকল্প আফ্রিকান দেশগুলির সঙ্গে ভারতের কৃষি সহযোগিতাকে শক্তিশালী করছে।অধিবেশনে ভারতের প্রতিনিধি দল মিলেটের পুষ্টিগুণ এবং এর টেকসই উৎপাদনের উপর জোর দিয়েছে।

Advertisements

মিলেট জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চাষ করা যায় এবং এটি জল ও রাসায়নিক সারের উপর নির্ভরতা কম। এই শস্যটি পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং এটি বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা ও অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। ভারতের কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে এই স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়নের মাধ্যমে ভারত বিশ্বব্যাপী মিলেটের উৎপাদন ও বাণিজ্যের নেতৃত্ব দেবে।

এই অধিবেশনে মালি, নাইজেরিয়া এবং সেনেগালের প্রতিনিধিরা ভারতের সঙ্গে তাদের সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন। মালির প্রতিনিধি বলেছেন, “মিলেট আমাদের দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের নেতৃত্বে এই স্ট্যান্ডার্ড আমাদের কৃষকদের জন্য নতুন বাজারের সম্ভাবনা তৈরি করবে।”

সেনেগালের প্রতিনিধি জানিয়েছেন যে এই উদ্যোগ আফ্রিকান দেশগুলির কৃষি উন্নয়নে সহায়তা করবে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে অবদান রাখবে।এই সাফল্য ভারতের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী নেতৃত্বের প্রমাণ।

সোনা, এফডি না শেয়ার, কোন সম্পদে মিলছে সবচেয়ে লাভজনক লোন?

কোডেক্সের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে ভারতের ভূমিকা শুধুমাত্র দেশের কৃষকদের জন্যই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আগামী দিনে এই স্ট্যান্ডার্ড চূড়ান্ত হলে, ভারতীয় মিলেট বিশ্ববাজারে আরও শক্তিশালী অবস্থান অর্জন করবে।