নয়াদিল্লি: মেলাস্ট্যাটিক স্তন ক্যানসার, গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার, ডায়াবিটিস, আলসার থেকে শুরু করে প্যারাসিটামল- একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের দাম এবার নিয়ন্ত্রণে আনল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের অধীনস্থ ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি (NPPA) সম্প্রতি একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ৭১টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম নির্ধারিত করা হয়েছে (drug price reduction)।
এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে নির্দিষ্ট কিছু সংস্থার তৈরি ওষুধের ক্ষেত্রে, যেখানে দাম আগের তুলনায় অনেকটাই কমতে পারে।
কোন ওষুধের দাম ঠিক কত?
‘রিলায়েন্স লাইফ সায়েন্সেস’-এর তৈরি ‘ট্রাস্টুজুমাব’, যা মেলাস্ট্যাটিক স্তন ক্যানসার ও গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, সেই ওষুধের প্রতি ভায়ালের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে ১১,৯৬৬ টাকা।
‘টরেন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল্স’-এর একটি পেপটিক আলসার চিকিৎসার ওষুধ, যেখানে ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন, এসোমেপ্রাজল ও অ্যামোক্সিসিলিন মিশ্রিত থাকে, তার প্রতি ট্যাবলেটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬২.৫০ টাকা।
ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত সিটাগ্লিপ্টিন যুক্ত ২৫টি ওষুধের দামও নতুন করে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিছু প্যারাসিটামল ওষুধের দামও এবার নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
দাম কমানোর সিদ্ধান্ত কেন?
এনপিপিএ জানিয়েছে, ২০১৩ সালের ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা অনুযায়ী এই দাম নির্ধারিত হয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষের চিকিৎসার খরচ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকে। অতীতে দেখা গিয়েছে, দামের লাগামছাড়া বৃদ্ধি চিকিৎসা ব্যয়কে সাধারণের নাগালের বাইরে নিয়ে যাচ্ছিল। এবার কিছুটা হলেও সেই বোঝা কমবে বলেই আশা।
অতীতে কী হয়েছিল?
এপ্রিল ২০২৫-এ দেশে ৭৪৮টি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের দাম ১.৭৪ শতাংশ বাড়াতে ছাড়পত্র দিয়েছিল এনপিপিএ। ২০২৪ সালের অক্টোবরে, কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির ফলে অ্যাজ়মা, গ্লকোমা, থ্যালাসেমিয়া, যক্ষ্মা ও মানসিক অসুস্থতার ওষুধের দাম অন্তত ৫০% বা তার বেশি হারে বেড়েছিল। সেই সময়ই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এবার উপকারে সাধারণ মানুষ
এই সিদ্ধান্তে পরিষ্কার, কেন্দ্র চাইছে রোগী-ভিত্তিক ওষুধপ্রয়োগ সহজ, কার্যকর এবং সাশ্রয়ী করতে। বিশেষ করে যেসব অসুখে চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী হয়, সেসব রোগীদের জন্য এটি স্বস্তির খবর।