গণহত্যা নিয়ে পরস্পর বিরোধী মন্তব্য শোনা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতার মুখে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আলোচিত দুই নেতা হলেন- কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) এবং অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)।
রামপুরহাট গণহত্যার পরে সেখানে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। কোন উপায়ে মামলা সাজানো হবে সেই বিষয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
তৃণমূলের দাপুটে নেতা এবং জেলা সভাপতি হলেও কোনও প্রশাসনিক পদে নেই অনুব্রত মন্ডল ওরফে কেষ্ট। ফলে এই নির্দেশ দেওয়া নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। যা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “অনুব্রত মন্ডল বড় নেতা, বেশি বোঝেন। তাঁর বিষয়ে মন্তব্য করার প্রয়োজন মনে করি না।”
কুণালের এই মন্তব্য থেকেই শুরু হয়েছে নয়া বিতর্ক। শাসক দলের দুই নেতার দূরত্বের বিষয়টিও প্রকাশ্যে এসেছে। পরে বোলপুরে অনুব্রত বলেন, কে কুনাল?
তৃণমূলের ইতিহাস বলছে কুণাল এবং কেষ্টর দূরত্ব নতুন নয়। সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।
২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে পুলিশকে বোম মারার কথা বলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তারপরে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া দূরের কথা, উলটে প্রিয় ভাই কেষ্টর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন যে দক্ষ সংগঠকের পাশে থাকবেন। অনুব্রত মন্ডলের সাংগঠনিক দক্ষতা প্রশ্নাতীত।
সেই সময়ে সারদা কেলেঙ্কারির জেরে শ্রীঘরে ছিলেন কুণাল। রাজনীতির ময়দানে থাকলেও সাংগঠনিক দক্ষতা তাঁর ছিল না। সারদা কাণ্ডে রাজ্য পুলিশের সিট গ্রেফতার করে কুণালকে। গ্রেফতার হওয়া সাংসদকে নিয়ে কখনও কোনও মন্তব্য করেননি মমতা।
দক্ষ সংগঠক পুলিশকে বোম মারার কথা বললেও তাঁর পাশে নেত্রী ছিলেন। কিন্তু দুর্দিনের সঙ্গী কুণালের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন মমতা। যা নিয়ে জেলে থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন কুণাল ঘোষ।
২০১৬ সালের শেষের দিকে ছাড়া পান কুণাল। ২০১৮ সাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে সক্রিয় হয়েছেন কুণাল। এখন দলের মুখপাত্র। একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও দলের হয়ে মাটি কামড়ে লড়াই করেছেন। কিন্তু কখনোই অনুব্রত মন্ডলের সঙ্গে কুণাল ঘোষের ঘনিষ্ঠতা দেখা যায়নি।