ফের চর্চায় দিলীপ ঘোষ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশংসা করে বিতর্কের মুখে

নয়াদিল্লি: বঙ্গ বিজেপির অন্দরমহলে ফের শোরগোল ফেলে দিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ফের ইতিবাচক মন্তব্য করে বিতর্কের কেন্দ্রে প্রাক্তন রাজ্য…

Dilip Ghosh Explains Why He Praised Mamata Banerjee

নয়াদিল্লি: বঙ্গ বিজেপির অন্দরমহলে ফের শোরগোল ফেলে দিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ফের ইতিবাচক মন্তব্য করে বিতর্কের কেন্দ্রে প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘সমস্যাটা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে এত গুরুত্ব দিয়েছিলেন কেন? এই জন্য অনেকে কষ্ট পেয়েছেন৷’’

বিগত কয়েকমাস ধরেই বঙ্গ বিজেপিতে ‘পাশাপাশি রাজনীতি’ এবং দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েনের ছবি উঠে আসছে। সেই প্রেক্ষিতেই সদ্য রাজ্য সভাপতি হিসাবে শমীক ভট্টাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পরে অনেকদিন বাদে বিজেপির সল্টলেকের দপ্তরে পা রেখেছিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। রাজনৈতিক মহলের মতে, এটা ছিল দলের ভাঙন মেরামতির এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। তবে সেই সাময়িক ঐক্যের ছবির মধ্যেও দিলীপের মন্তব্য ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

   

একুশের ভোটের সময় থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন দিলীপ (Dilip Ghosh)। কখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, কখনও দিঘায় মমতার পাশে বসে প্রসাদ খাওয়া, আবার কখনও প্রশংসার ঢেউ। এইসব পর্বেই একাধিকবার দলের অন্দরে রোষের মুখে পড়েন তিনি। আবারও দিল্লিতে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, “আমি তো সবার প্রশংসা করি। দেখেছেন আমায় কখনও বিনা কারণে কারও বিরুদ্ধে কিছু বলতে? কারও সাথে শত্রুতা নেই, প্রশংসা করব না কেন?”

দিলীপ (Dilip Ghosh) আরও বলেন, “প্রশংসা করিনি, আমি বলেছি—যার নামে কোনও মামলা নেই, তার সঙ্গে বসে খেলে আমি কীভাবে খারাপ হয়ে যাব? যারা বড় বড় কথা বলছে, তাদের বিরুদ্ধেও তো মামলা আছে।” এই মন্তব্যের পরেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, দলীয় শৃঙ্খলার সীমা ছাড়িয়ে আবারও দলনেতাদের দিকেই কটাক্ষ করলেন দিলীপ।

Advertisements

সাম্প্রতিক কালে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) সস্ত্রীক দিল্লি গিয়েছেন। বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সাক্ষাতের সেই সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জল্পনা। অনেকের ধারণা, তাঁকে জাতীয় স্তরে কোনও নতুন দায়িত্বে দেখা যেতে পারে। যদিও দিলীপ নিজে সেই বিষয়ে মুখ খোলেননি।

দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে প্রণাম নেওয়া ও প্রসাদ গ্রহণ—এই ঘটনার পর থেকেই দলীয় অন্দরে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। দিলীপ (Dilip Ghosh) বলেন, “সেই ঘটনায় দলের সব কর্মীরা অস্বস্তিতে ছিলেন না, কয়েকজন ছিলেন। তাঁরা কষ্ট পেয়েছিলেন এই ভেবে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে এত গুরুত্ব দিলেন কেন।”

সব মিলিয়ে, নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে যখন রাজ্য বিজেপি সংগঠন মেরামতির পথে হাঁটছে, তখন দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) এই ধরণের মন্তব্য দলের অন্দরে বিভাজনের ইঙ্গিত দিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপি নেতৃত্ব তাঁর বক্তব্যকে কতটা গুরুত্ব দেয়, তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত বঙ্গ রাজনীতিতে ‘দিলীপ-মমতা’ সমীকরণ আবারও নতুন করে উসকে দিয়েছে বিতর্কের আগুন।