থাইল্যান্ডকে হারিয়ে এশিয়ান কাপে ভারত, মোটা অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা ফেডারেশনের

ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের (Indian Football Team) দুর্দান্ত সাফল্যে মুখর গোটা দেশ। থাইল্যান্ডে (Thailand) অনুষ্ঠিত এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপ (AFC Womens Asian Cup 2026) যোগ্যতা…

Indian Football Team step away from Womens Asian Cup qualification after blanking Iraq

ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের (Indian Football Team) দুর্দান্ত সাফল্যে মুখর গোটা দেশ। থাইল্যান্ডে (Thailand) অনুষ্ঠিত এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপ (AFC Womens Asian Cup 2026) যোগ্যতা অর্জন পর্বে অনবদ্য পারফরম্যান্সে নজর কেড়েছে সকলের। এবার ব্লু টাইগ্রেসদের জন্য আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করল সর্ব ভারতীয় ফুটবল সংস্থা (AIFF)। ৫০,০০০ মার্কিন ডলারের পুরস্কার পাচ্ছেন সঙ্গীতা বাসফোর, মনীষা কল্যাণরা।

   

বাছাইপর্বে ভারতের মেয়েরা একেবারে দুরন্ত ফর্মে ছিলেন। প্রথম ম্যাচে মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে ১৩-০ গোলের বড় জয় দিয়ে শুরু হয় ভারতের অভিযান। এরপর তিমুর-লেস্তেকে হারানো হয় ৪-০ গোলে। তৃতীয় ম্যাচে ইরাককে ৫-০ গোলে পরাজিত করে ব্লু টাইগ্রেসরা পৌঁছে যায় গুরুত্বপূর্ণ ফাইনাল সদৃশ ম্যাচে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল স্বাগতিক ও র‍্যাঙ্কিংয়ে উচ্চতর থাইল্যান্ড। সেই ম্যাচে ২-১ গোলের ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়ে ভারতীয় দল নিশ্চিত করে ২০২৬ এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপের মূলপর্বে জায়গা।

এই জয় যদিও মাঠে দেখলে সহজ মনে হতে পারে, কিন্তু এর পিছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও পরিকল্পনা। ফেডারেশন এবং স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (SAI) যৌথ উদ্যোগে গত কয়েক বছরে গড়ে তোলা হয়েছে মজবুত যুব কাঠামো এবং ঘরোয়া লিগ ব্যবস্থা।

ফেডারেশনের অন্যতম সফল উদ্যোগ ‘আসমিতা মহিলা ফুটবল লিগ’ (ASMITA Women’s Football Leagues)। ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনূর্ধ্ব ১৩, ১৫, ১৭ স্তরে মোট ১৫৫টি লিগ আয়োজন করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ সিজনে ৬,৩০৫ জন জুনিয়র মহিলা ফুটবলার অংশ নিলেও, ২০২৪-২৫ মরসুমে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮,৬৫৮ তে। এর ফলে দেশের রেজিস্টার্ড মহিলা ফুটবলারের সংখ্যা গত এক বছরে ২৩২ শতাংশ বেড়েছে যা এক বিশাল মাইলফলক।

বাছাইপর্বের আগে ভারতের প্রস্তুতি ছিল অত্যন্ত কঠোর এবং সুসংগঠিত। বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত ৫৩ দিনের জাতীয় ক্যাম্পে স্থানীয় প্রস্তুতি ম্যাচের পাশাপাশি দল খেলেছে দুটি ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ, প্রতিপক্ষ ছিল উজবেকিস্তান। এই আন্তর্জাতিক এক্সপোজার এবং টেকনিক্যাল প্রস্তুতিই মূলপর্বের টিকিট নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে।

Advertisements

ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে, “মেয়েদের এই অর্জন আমাদের দেশের ফুটবলের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়। আমরা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ওপর ভরসা রেখেছি, তারই ফল আমরা পাচ্ছি। কিন্তু কাজ এখানেই শেষ নয়, আগামী দিনে আরও কঠিন প্রতিযোগিতা অপেক্ষা করছে।”

২০২৬ সালের মার্চ মাসে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ান কাপ। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এশিয়ার সেরা দলগুলি। তাই এখন থেকে প্রস্তুতির কোনও ঘাটতি রাখতে চায় না AIFF। আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনিং ক্যাম্প, শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ—সবকিছুই থাকবে পরবর্তী পরিকল্পনার মধ্যে।

২০০৩ সালে শেষবার যোগ্যতা অর্জন করেই ভারত মহিলা এশিয়ান কাপে অংশ নিয়েছিল। ২০২২ সালে স্বাগতিক হিসেবে অংশ নেওয়ার পর এবার ফের যোগ্যতা অর্জন করে মূলপর্বে পৌঁছাল ভারত। এটি নিঃসন্দেহে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। দেশে ফিরেই নয়াদিল্লিতে ব্লু টাইগ্রেসদের জমকালো সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। গোটা দেশ আজ তাঁদের সাফল্যে গর্বিত। এই দলের সাফল্য শুধু এক টুর্নামেন্ট জেতা নয়, বরং একটি দীর্ঘ লড়াই, স্বপ্ন আর সংকল্পের প্রতিফলন। এই স্বপ্ন আজ পর্যন্ত ছেলেরা সত্যি করতে পারেননি, সেই স্বপ্ন দেখিয়ে বাস্তবের মাটিতে নামিয়ে এনেছেন ভারতীয় মহিলারা। এখন তাঁদের লক্ষ্য ২০২৬ সালে এশিয়ার সেরাদের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দেওয়া।

AIFF announces reward for fantastic Indian Football Team after qualify to AFC Womens Asian Cup 2026