টানা এক সপ্তাহের ডিজিটাল ধর্মঘট (CPI M Digital Strike)। আধঘণ্টা করে মোবাইল অফ! বাম সমর্থকদের মধ্যেই প্রশ্ন ধুর এমনটা হয় নাকি!এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে (CPIM) সিপিআইএম। দলটির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এম এ বেবি আহ্বান জানিয়েছিলেন ফিলিস্তিনিদের উপর ইজরায়েলের হামলার প্রতিবাদে ৬ জুলাই থেকে টানা সাত দিন ধরে রাত ৯টা- ৯ . ৩০ মিনিট পর্যন্ত সবাই মোবাইল বন্ধ রাখুন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অভিনব তবে কতটা কার্যকরী হবে?
দলীয় অনুশাসন মেনে সিপিআইএম পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার রাজ্য কমিটি তাদের সব সংগঠনের মাধ্যমে দুই রাজ্যে ডিজিটাল ধর্মঘট নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছে। লক্ষ্যনীয় মোবাইল অফ করার এমন অভিনব ধর্মঘটের সমর্থনে মন্তব্য উপচে পড়লেও কার্যকরী ততটা নয়।
বাস্তবতা ভিন্ন। বাম সমর্থকদেরই প্রশ্ন এভাবে টানা সাত দিন রোজ রাতে ৯টা থেকে আধঘণ্টা মোবাইল অফ রাখার যুক্তি ধোঁয়াটে। কারণ মোবাইল গুরুত্বপূর্ণ। ওই সময় কোনও দরকারি কাজ অথবা বিপদ-আপদ হলে কীভাবে যোগাযোগ সম্ভব। তাদের কটাক্ষ বিপদ কি আর বলে কয়ে আসে!
সিপিআইএম দলটি কেরলে ক্ষমতাসীন। ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধী দল, তামিলনাড়ুতে অ-বিজেপি জোট সরকারের শরিক। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় না থাকলেও বামপন্থী গণসংগঠনগুলি তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির পালে হাওয়া তুলেছে। তবে এক সপ্তাহ ধরে ডিজিটাল ধর্মঘট মানতে নারাজ সংগঠক ও সমর্থকরা। সিংহভাগ বাম সমর্থকের মোবাইল খোলা। তবে গুটিকয়েক এমন ধর্মঘটি মিলবে।
বাম ঘরে ‘অবাস্তব’ ডিজিটাল ধর্মঘট সফল নয়। নেতৃত্বরা প্রকাশ্যে সেটি মানতে নারাজ। তাদের অনেককেই ভিন্ন মোবাইল নম্বরে ফোন করলে পাওয়া যাচ্ছে।
সিপিআইএম ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক ও বিরোধী দলনেতা জীতেন্দ্র চৌধুরী ডিজিটাল ধর্মঘটের থেকে বেশি ব্যস্ত আগামী ৯ জুলাই কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকে দেশ জুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের প্রচারে। ২০১৮ সালে ত্রিপুরায় টানা আড়াই দশকের বাম জমানা অবসানের পর সাধারণ ধর্মঘটে শক্তি দেখিয়ে সফল হয়েছে সিপিআইএম। বারবার বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা স্তব্ধ হয়েছে। ফের শক্তি দেখাতে মরিয়া বাম শিবির।
ত্রিপুরার মতো পশ্চিমবঙ্গে সিপিআইএমকে চাঙ্গা করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন দলটির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি ডিজিটাল ধর্মঘট পালনের পাশাপাশি সাধারণ ধর্মঘট সফল করার বার্তা দেন। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনসমূহ ও শিল্প ও ক্ষেত্রভিত্তিক ফেডারেশনগুলির ডাকে ৯ জুলাই দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে ৭ জুলাই কলকাতায় হবে কেন্দ্রীয় মিছিল।
ন্যূনতম ২৬০০০ টাকা বেতন, ২০০ দিনের কাজ ও দিনে ৬০০ টাকা মজুরি প্রকল্প কর্মীদের সরকারী কর্মীর স্বীকৃতি, শ্রমকোড বাতিল, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি ও সামাজিক সুরক্ষা, রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্র বেসরকারিকরণ বন্ধ, মূল্য বৃদ্ধি রোধ, কৃষিপণ্যের সহায়ক মূল্য আইন ও কৃষি ঋণমকুব, রেগায় বকেয়া মজুরি সহ ১৭ দফা দাবিতে ধর্মঘট হবে বলে জানিয়েছে বাম-ডান কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগ়টনগুলি। ধর্মঘটে সামিল হচ্ছে, শিল্প ও ক্ষেত্রভিত্তিক কর্মচারী সংগঠনসমূহ, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা ও ক্ষেত মজুর সংগঠন।