জতুগৃহ! বিজেপি অসভ্য বর্বর বলা জ্যোতি বসুর প্রতি ‘প্রেম’ দেখিয়ে বিপাকে শমীক

‘বিজেপি অসভ্য বর্বর’ বলা কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসুর প্রতি প্রেম কেন? সমর্থকদের এমনই প্রশ্নবাণে ছিন্নভিন্ন হচ্ছেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। শমীকের মন্তব্য…

Jyoti Basu with LK advani

‘বিজেপি অসভ্য বর্বর’ বলা কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসুর প্রতি প্রেম কেন? সমর্থকদের এমনই প্রশ্নবাণে ছিন্নভিন্ন হচ্ছেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। শমীকের মন্তব্য বুমেরাং হয়ে তাঁরই দিকে ধেয়ে আসছে।

সদ্য নিজ দলের রাজ্য সভাপতি হয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। পদাধিকার গ্রহণ অনুষ্ঠান থেকে সংখ্যালঘু মুসলমানদের কাছে টানার বার্তা দেওয়ার পর বিজেপির কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের কটাক্ষ হজম করে চলেছেন। এবার জ্যোতি বসুর প্রতি ‘প্রেম’ দেখিয়ে বিপাকে শমীক।

   

জনসংঘ প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মদিবসে শমীক ভট্টাচার্য মন্তব্য, নিজের মতাদর্শ সরিয়ে রেখে শ্যামাপ্রসাদের প্রস্তাবে ভোট দিয়েছিলেন জ্যোতি বসু। এটা পশ্চিমবঙ্গ রক্ষার লড়াই। ইন্দিরা গান্ধীর হাতে সব অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন অটলবিহারি বাজপেয়ী। আজকের লড়াইটাও রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার লড়াই। জ্যোতি বসুকে সম্মান করলে তাঁর গড়া পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন।

উল্লেখ্য, জনসংঘ অবলুপ্ত হয়ে বিজেপি তৈরি হয়। আর কমিউনিস্ট নেতা তথা সিপিআইএমের ‘নবরত্ন’ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বিজেপি একটি অসভ্য বর্বর দল বলে কটাক্ষ করেছিলেন।

Samik Bhattacharya Opens Up on Non-Active Dilip Ghosh: "He Was, He Is, He Will Be"
Samik Bhattacharya Opens Up on Non-Active Dilip Ghosh: “He Was, He Is, He Will Be”

বিজেপির মেরুদণ্ড হিন্দুত্ববাদী সংঘ পরিবার বারবার স্পষ্ট করেছে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ কমিউনিস্টরা। আর সিপিআইএমেরও দাবি, তাদের প্রধান শত্রু সংঘ নেতৃত্বাধীন বিজেপি ও ধর্মীয় মৌলবাদ। দুই পক্ষ নিজ নিজ অবস্থানে কট্টর।

Advertisements

এরকম কট্টর অবস্থান থেকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য সরাসরি জ্যোতি বসুর প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল কংগ্রেস শাসন থেকে রাজ্য বাঁচানোর বার্তা দেন। তিনি বলেছেন,  “বামপন্থীদের মনে রাখতে হবে, সুভাষ চক্রবর্তী বলতেন, লিডার অফ দ্য লিডার্স। তাঁর দূরদর্শিতা ছিল। জানতেন, এমন পরিণতি হবে একদিন। তাই ১৯৪৭ সালে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট দিয়েছিলেন। আজ সেই ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আনা হয়েছে পয়লা বৈশাখে। সেই বিধায়কদের শ্রদ্ধা জানাই, যাঁরা কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচিত বলেও, শ্যামাপ্রদের প্রস্তাবে ভোট দিয়েছিলেন। প্রণাম জানাই জ্যোতি বসু এবং রতনলাল ব্রাহ্মণকে, যাঁরা পশ্চিমবঙ্গ তৈরি করেছিলেন। সেই ইতিহাস যাঁরা কলঙ্কিত করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

উল্লেখ্য, ভারত ভাগ হবার আগেই তৎকালীন বাংলা প্রদেশের আইনসভায় তিনজন কমিউনিস্ট নির্বাচিত হন। এই তিনজন ছিলেন জ্যোতি বসু, রতনলাল ব্রাহ্মণ ও রূপনারায়ণ রায়। পরে দেশ ভাগ হলে রূপনায়রণ রায় পাকিস্তানের নাগরিকত্ব নেন। কারণ তার নির্বাচন ক্ষেত্র দিনাজপুর পড়ে পাকিস্তানে। পরবর্তীতে বাংলাদেশে।

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে শমীক ভট্টাচার্যের তরফে জ্যোতি বসুকে সামনে রেখে মহাজোট বার্তা আসে। তবে সিপিআইএমের তরফে এমন বার্তা উড়িয়ে দেওয়া হয়। বামপন্থী সামাজিক মাধ্যমগুলিতে বিজেপিকে অসভ্য বর্বর দল বলা জ্যোতি বসুর মন্তব্য পুনরায় দেওয়া শুরু হয়।

সিপিআইএম সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ঘটার পর গোটা দেশে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল।এই ঘটনার ঠিক পরেই জ্যোতি বসু বলেছিলেন “বিজেপি একটা অসভ্য বর্বর দল। এরা গণতন্ত্রের শত্রু। ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। সংবিধানকে এরা অপমান করেছে।” তাঁর এই মন্তব্যে দেশের সর্বত্র রাজনৈতিক আলোড়ন ফেলেছিল।