কসবা কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে চাঞ্চল্য

কসবা কাণ্ডে বিতর্ক উস্কে দিয়ে সমাজ মাধ্যমে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে পোস্ট কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police)। কলকাতা পুলিশের জারি করা এই বিজ্ঞপ্তি ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে তীব্র…

Clashes Erupt at Jadavpur 8B Bus Stand on India Bandh Day, Tensions Escalate

কসবা কাণ্ডে বিতর্ক উস্কে দিয়ে সমাজ মাধ্যমে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে পোস্ট কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police)। কলকাতা পুলিশের জারি করা এই বিজ্ঞপ্তি ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। এই বিজ্ঞপ্তিতে সংবাদ মাধ্যম, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং সাধারণ জনগণকে গুজব, অপ্রমাণিত তথ্য এবং ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশের বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে।

কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) তার পোস্টে জানিয়েছে, এই ধরনের কার্যকলাপ তদন্তে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে এবং এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রসঙ্গত যে ঘটনায় অভিযোগকারিণীর বয়ানের ভিত্তিতে অভিযুক্তরা হাতে নাতে ধরা পড়েছে। সেই সঙ্গে মূল অভিযুক্তের নামে থাকা অজস্র অভিযোগ উঠে আসছে সাধারণ মানুষের সামনে। ঠিক এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুলিশের এই পোস্ট কিসের ইঙ্গিত।

   

কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কসবা কাণ্ডের তদন্ত সংক্রান্ত কোনও তথ্য পুলিশের কোনও আধিকারিক সূত্র গণমাধ্যমের সঙ্গে ভাগ করেনি। শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশের অফিসিয়াল বিবৃতি বা যোগাযোগকেই সত্য ও প্রামাণিক হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। তাহলে প্রশ্ন মূল অভিযুক্তের নামে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ সেগুলি কি মিথ্যে বলে প্রমাণিত হল।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, অপ্রমাণিত বা জল্পনা-কল্পনা ভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ বা শেয়ার করা তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে পারে। পুলিশ গণমাধ্যম ও জনগণকে এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেছে।

এছাড়া, (Kolkata Police) বিজ্ঞপ্তিতে ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গেই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যাবহারকারী সরাসরি প্রশ্ন করেছেন, এফ আই আর কপি তে নামের আদ্যাক্ষর ব্যবহার করে পুলিশ কি প্রমান করতে চায়।

কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) বলছে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস), ২০২৩-এর ৭২ ধারা অনুযায়ী, ভুক্তভোগীর পরিচয় সরাসরি বা পরোক্ষভাবে প্রকাশ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা (নিপুন সাক্সেনা বনাম ভারত সরকার, ২০১৮) লঙ্ঘন করে। কলকাতা হাইকোর্টও অন্য ব্যক্তিদের ভুক্তভোগী হিসেবে ভুলভাবে চিহ্নিত করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে, যা তাদের মর্যাদাহানি করে এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করে।

কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) স্পষ্ট করেছে যে, গুজব, ভুয়ো তথ্য বা ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশকারী কনটেন্ট ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের মতে সাম্প্রতিক সময়ে, কসবা কাণ্ড নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন গুজব এবং অপ্রমাণিত তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যা তদন্তে জটিলতা সৃষ্টি করছে।

Advertisements

কসবা কাণ্ড পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিরোধী দলগুলি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলেছে। এই পোস্ট কে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। রাহনৈতিক মহলের একাংশ বলেছে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এই ধরণের বিজ্ঞপ্তি উদ্দেশ্যপ্রনোদিত।

শাসক দল আগেই জানিয়েছে সরকার এই ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বেশিরভাগ ই বলেছেন কলকাতা পুলিশের এই পোস্ট গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ। আবার কেউ কেউ বলেছেন এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

তবে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) মতে এই ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে এবং যা একটি গুরুতর অপরাধ। কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে গুজব এবং ভুয়ো তথ্য ছড়ানোর ফলে তদন্ত প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিয়েছে, এবং ভুক্তভোগীর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা এবং বিএনএস-এর ৭২ ধারা অনুযায়ী, ভুক্তভোগীর পরিচয় প্রকাশ করা গুরুতর অপরাধ।

যদিও কলকাতা হাইকোর্টও এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, ভুলভাবে অন্য ব্যক্তিকে ভুক্তভোগী হিসেবে চিহ্নিত করা ব্যক্তির মর্যাদাহানি করে এবং জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। পুলিশ এই ধরনের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

‘নিরামিষাশী’ শ্যামাপ্রসাদের জন্মদিন আমিষ আয়োজন, বির্তকে জড়াল বিজেপির একাংশ

কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এই বিজ্ঞপ্তি কসবা কাণ্ডের তদন্তের স্বচ্ছতার ব্যাপারে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে সমাজ মাধ্যমের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ইঙ্গিত দেয় পুলিশের উপরে মানুষের অনাস্থা জন্মেছে এবং এই ধরণের ঘটনার পরে পুলিশের তরফ থেকে এই ধরণের পোস্ট জনসাধারণ এবং গণ মাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা ছাড়া আর কিছু নয়।