দিল্লির নব নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Kejriwal) বিরুদ্ধে জনগণের কষ্টার্জিত টাকা অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, কেজরিওয়াল তাঁর ব্যক্তিগত বিলাসিতার জন্য দিল্লির জনগণের টাকায় একটি বিলাসবহুল ‘শীশ মহল’ নির্মাণ করেছিলেন।
এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলেও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, কারণ এটি জনগণের অর্থের অপব্যবহার এবং শাসনের স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলেছে। রেখা গুপ্তা(Kejriwal)জোর দিয়ে বলেছেন, “আমরা জনগণের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দেব। পূর্ববর্তী শীশ মহলকে তার মূল উদ্দেশ্যে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এটাই আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি।” দিল্লির রাজনৈতিক মঞ্চে ‘শীশ মহল’ এখন একটি বিতর্কিত শব্দ। রেখা গুপ্তার অভিযোগ, অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Kejriwal) তাঁর ব্যক্তিগত আরাম ও বিলাসিতার জন্য জনগণের করের টাকায় একটি বিলাসবহুল বাংলো তৈরি করেছিলেন, যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘শীশ মহল’।
এই বাংলোতে ব্যয়বহুল সজ্জা, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং বিলাসবহুল আসবাবপত্রের ব্যবহার করা হয়েছিল, যা জনগণের অর্থের অপচয়ের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। গুপ্তা বলেন, “দিল্লির মানুষ যখন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অবকাঠামোর জন্য সংগ্রাম করছে, তখন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ব্যক্তিগত বিলাসিতার জন্য জনগণের টাকা অপব্যবহার করেছেন।”
বর্তমান সরকার এই শীশ মহলকে (Kejriwal) জনগণের সুবিধার জন্য উৎসর্গ করেছে। রেখা গুপ্তা জানিয়েছেন, এই ভবনটি এখন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে, যাতে এটি জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়। তিনি বলেন, “এটাই পূর্ববর্তী সরকার এবং বর্তমান সরকারের মধ্যে পার্থক্য। আমরা জনগণের টাকাকে জনগণের জন্যই ব্যবহার করব।”
জনগণের টাকার অপব্যবহার: একটি গুরুতর অভিযোগরেখা গুপ্তার এই বক্তব্য দিল্লির রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, কেজরিওয়ালের (Kejriwal) আমলে জনগণের টাকা শুধু শীশ মহলের জন্যই নয়, বরং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পেও অপব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “দিল্লির মানুষ তাঁদের কষ্টার্জিত টাকা সরকারের উপর ভরসা করে দিয়েছিলেন, কিন্তু সেই টাকা ব্যক্তিগত বিলাসিতার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। এটা একটা অপরাধ।
আমরা এই টাকা জনগণের কাছে ফেরত দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর।” দিল্লির জনগণের মধ্যেও এই ঘটনা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, যখন তাঁরা স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও পরিবহনের মতো মৌলিক সুবিধার জন্য সংগ্রাম করছেন, তখন সরকারি তহবিলের এমন অপব্যবহার ক্ষমার অযোগ্য।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমরা ট্যাক্স দিই যাতে আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। কিন্তু আমাদের টাকায় বিলাসবহুল বাংলো তৈরি হলে আমরা কীভাবে সরকারের উপর ভরসা করব?”রেখা গুপ্তার প্রতিশ্রুতিরেখা গুপ্তা জানিয়েছেন, তাঁর সরকার জনগণের প্রতি স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ থাকবে। তিনি বলেন, “আমরা শীশ মহলকে জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছি।
এটি এখন জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহৃত হবে। আমরা নিশ্চিত করব যে জনগণের টাকা শুধুমাত্র জনগণের উন্নয়নের জন্য ব্যবহৃত হয়।” তিনি আরও বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে যে অর্থ অপব্যবহার করা হয়েছে, তা ফেরত আনার জন্য তাঁরা তদন্ত শুরু করবেন। এই তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
দিল্লির এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকে এই ঘটনার সঙ্গে রাজ্যের বাংলার সিন্ডিকেট সংস্কৃতির তুলনা করছেন। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনকালে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জনগণের অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগ বারবার উঠেছে। বজবজ এর এলপিজি কারখানার সাম্প্রতিক ঘটনার পর এই বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, (Kejriwal) দিল্লির শীশ মহল বিতর্ক এবং পশ্চিমবঙ্গের সিন্ডিকেট সংস্কৃতি একই সমস্যার দুটি ভিন্ন রূপ। উভয় ক্ষেত্রেই জনগণের টাকা শাসকদলের ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে।কী করা উচিত?রেখা গুপ্তার বক্তব্য জনগণের মধ্যে নতুন আশা জাগিয়েছে। তবে এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন যেমন শীশ মহল নির্মাণে ব্যয়িত অর্থের উৎস এবং ব্যবহারের বিষয়ে একটি স্বচ্ছ তদন্ত করতে হবে।
সরকারি তহবিলের ব্যবহারে কঠোর নজরদারি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। শীশ মহলের মতো সম্পদ জনগণের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে হবে। যাঁরা জনগণের অর্থ অপব্যবহার করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
নতুন সাবমেরিন পাবে ভারতীয় নৌসেনা, ১৫০০ কিলোমিটার দূরে বসে থাকা শত্রুদের আক্রমণ করবে
দিল্লির (Kejriwal) শীশ মহল বিতর্ক জনগণের অর্থের অপব্যবহার এবং শাসনের স্বচ্ছতার অভাবের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। রেখা গুপ্তার নেতৃত্বে দিল্লির বর্তমান সরকার এই সমস্যার সমাধানে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে এই ঘটনা শুধু দিল্লির নয়, গোটা দেশের জন্য একটি শিক্ষা।
পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যেও সিন্ডিকেটের (Kejriwal) মাধ্যমে জনগণের অর্থের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। জনগণের টাকা জনগণের জন্যই ব্যবহৃত হওয়া উচিত। রেখা গুপ্তার এই প্রতিশ্রুতি যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে তা অন্যান্য রাজ্যের জন্যও একটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।