বজবজে সিলিন্ডার কারখানায় ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা, তৃণমূলের সিন্ডিকেটকে আক্রমণ শুভেন্দুর

বজবজে (Budge Budge) ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেডের (আইওসি) এলপিজি কারখানায় গতকাল ঘটে যায় এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। শ্রমিকদের লোডিং-আনলোডিং কাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীগুলির মধ্যে…

Budge Budge case suvendu pointed out the syndicate

বজবজে (Budge Budge) ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেডের (আইওসি) এলপিজি কারখানায় গতকাল ঘটে যায় এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। শ্রমিকদের লোডিং-আনলোডিং কাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীগুলির মধ্যে লোভ ও ক্ষমতার লড়াই এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এই ঘটনা পুরো অঞ্চলকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিতে পারত।

   

গতকাল ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রাস্তায় গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদ শুরু করেন, যা একটি মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হতে পারত। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন। তিনি এই ঘটনায় তৃণমূলের সিন্ডিকেট সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলেছেন।

শুভেন্দু অধিকারী (Budge Budge) বলেছেন একটি মাত্র স্ফুলিঙ্গই এই কারখানা, পাশের বজবজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (বিবিআইটি) কলেজ, জগন্নাথ গুপ্ত ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতাল এবং আশপাশের এলাকাগুলিতে ভয়ঙ্কর অগ্নিকান্ড ডেকে আনতে পারত।

এই ঘটনায় শুধুমাত্র সম্পত্তি নয়, অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকাও বিপন্ন হতে পারত ।কী ঘটেছিল বজবজে ?গতকাল, বজবজের (Budge Budge) এলপিজি বোতলজাতকরণ কারখানায় শ্রমিকদের একটি বড় অংশ প্রতিবাদে নামেন। তাঁদের অভিযোগ, টিএমসি’র স্থানীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রিত সিন্ডিকেটগুলি কারখানার লোডিং-আনলোডিং কাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু করেছে।

এই কাজগুলি শ্রমিকদের জীবিকার প্রধান উৎস, কিন্তু সিন্ডিকেটের নেতারা নিজেদের লাভের জন্য শ্রমিকদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, তাঁদের কাজের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে এবং ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করছে। ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা এই শোষণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছেড়ে দেওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ নেন।

এই ঘটনা শুধুমাত্র প্রতিবাদের একটি রূপ ছিল না, বরং এটি একটি সম্ভাব্য বিপর্যয়ের সূচনা করতে পারত, যা পুরো এলাকাকে ধ্বংস করে দিতে পারত। বিরোধী দলনেতার মতে সিন্ডিকেট রাজের ভয়াবহতাপশ্চিমবঙ্গে টিএমসি’র শাসনকালে সিন্ডিকেট সংস্কৃতি একটি ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। নির্মাণ শিল্প থেকে শুরু করে শিল্প কারখানা, সর্বত্রই স্থানীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রিত সিন্ডিকেটগুলি তাদের আধিপত্য বিস্তার করছে।

বজবজের (Budge Budge) এই ঘটনা এই সংস্কৃতির একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। শ্রমিকদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের নেতারা তাঁদের কাজের সুযোগ কেড়ে নিয়ে নিজেদের লোকদের দিয়ে কাজ করাচ্ছে, যার ফলে সাধারণ শ্রমিকরা তাঁদের জীবিকা হারাচ্ছেন। এই ক্ষমতার লড়াই শুধু শ্রমিকদের উপরই প্রভাব ফেলছে না, বরং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকেও বিপন্ন করছে।

গতকালের ঘটনায় দেখা গেছে, কীভাবে একটি ছোট প্রতিবাদ একটি বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারত।শ্রমিকদের কষ্ট ও শোষণবাজবাজের এলপিজি কারখানায় শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে শোষণের শিকার। তাঁদের ন্যায্য মজুরি, কাজের নিরাপত্তা এবং সামাজিক সুরক্ষার অভাব রয়েছে। সিন্ডিকেটের চাপে অনেক শ্রমিক তাঁদের কাজ হারিয়েছেন, এবং যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদেরও প্রায়শই মজুরি থেকে একটি অংশ সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দিতে হচ্ছে।

Advertisements

এই অবস্থা শ্রমিকদের (Budge Budge) মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দিয়েছে, যা গতকালের প্রতিবাদে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শ্রমিকরা বলছেন, “আমরা শুধু আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই। আমরা কঠোর পরিশ্রম করি, কিন্তু আমাদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য কিছুই থাকে না।”সরকারের নীরবতা ও দায়িত্বহীনতাএই ঘটনায় রাজ্য সরকারের নীরবতা উদ্বেগজনক।

টিএমসি’র নেতারা (Budge Budge) সিন্ডিকেট সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে এটিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। স্থানীয় প্রশাসনও এই বিষয়ে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বজবজের মতো শিল্পাঞ্চলে এই ধরনের ঘটনা শুধু শ্রমিকদের জীবনই নয়, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলছে।

এই পরিস্থিতি প্রশ্ন তুলছে, সরকার কি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ও জনগণের নিরাপত্তার প্রতি দায়বদ্ধ?কী হওয়া উচিত?বজবজের ঘটনা আমাদের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছে—পশ্চিমবঙ্গে এই সিন্ডিকেট রাজ কতদিন চলবে? এই অরাজকতা ও শোষণের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া সরকারের কর্তব্য বলে দাবি বিরোধী শিবিরের ।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকদের দাবি শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কাজের নিরাপত্তা এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, এলপিজি কারখানার মতো স্পর্শকাতর শিল্পে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে এবং গতকালের ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।

শুভেন্দু আরও (Budge Budge) বলেন বজবজের এই ঘটনা কেবল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং এটি পশ্চিমবঙ্গের শাসনব্যবস্থার গভীর সমস্যার একটি প্রতিফলন। টিএমসি’র সিন্ডিকেট সংস্কৃতি শ্রমিকদের শোষণ করছে, জনগণের নিরাপত্তা বিপন্ন করছে এবং রাজ্যের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে।

নিয়মিত আয়ের জন্য ডিভিডেন্ড ফান্ড কেন অপরিহার্য? জেনে নিন ৫টি কারণ

এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে, এমন বিপজ্জনক ঘটনা বারবার ঘটতে থাকবে। পশ্চিমবঙ্গের জনগণ ন্যায়বিচার, নিরাপত্তা এবং শান্তি চায়। এখন সময় এসেছে এই সিন্ডিকেট রাজ ভেঙে ফেলার এবং শ্রমিক ও জনগণের জন্য একটি ন্যায্য ও নিরাপদ সমাজ গড়ার।