কলকাতা: বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থার অভিযোগ ফের তীব্র হয়ে উঠেছে। এবার রাজস্থানে উত্তর দিনাজপুরের শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করার অভিযোগে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেন, “বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে! তাহলে বলে দিন বাংলা ভাষা নিষিদ্ধ!”
৩০০ শ্রমিক রাজস্থানে আটক
মুখ্যমন্ত্রী জানান, উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের মান্নাই অঞ্চলের খিসাহার গ্রাম সহ আশপাশের প্রায় ৩০০ জন শ্রমিককে রাজস্থানে আটক করে রাখা হয়েছে বাংলাদেশি সন্দেহে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই স্থানীয় বিধায়ক মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বিষয়টি নজরে রেখে বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “বাংলায় কথা বলার জন্য যদি বাংলাদেশি বানানো হয়, তাহলে তামিল বললে কি শ্রীলঙ্কায় পাঠাবে? গোর্খারা নেপালে যাবে? বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ কোন ভাষায় কথা বলতেন? তাহলে কি বাংলা ভাষারই এখন অপরাধ?”
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা পড়ানো বন্ধ Mamata condemns Bengali harassment
তিনি দাবি করেন, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা পড়ানো বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ। “শেমলেস ইস্যু” বলে তীব্র কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলার ২২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক দেশের নানা প্রান্তে কাজ করেন। তাদের সম্মান না করলে, সম্মান পাবে না কেউ। প্রতিবাদে আমরা পথে নামব।”
তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, “গত কয়েক দিন ধরেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাঙালি ভাষাভাষীদের উপর একের পর এক নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে। দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, এবার রাজস্থান…বাংলা শুনলেই এরা জ্বলে ওঠে। এটা বিজেপির দলীয় অবস্থান। আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী হয়তো জানেন না এই ঘটনা। তবে তাঁকে জানানো দরকার।”
এই ঘটনায় নতুন করে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে জাতীয় রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি হতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।