Mamata Banerjee: বন্যা পরিস্থিতি রুখতে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ মমতার, ফের তুললেন ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দাবি

বর্ষা এলেই রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে ফেরে বন্যার আতঙ্ক। বিশেষ করে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমা ও সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রতি বছর জল জমে, বাসিন্দারা আশ্রয় নেন ত্রাণশিবিরে।…

Mamata Banerjee OBC reservation

বর্ষা এলেই রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে ফেরে বন্যার আতঙ্ক। বিশেষ করে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমা ও সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রতি বছর জল জমে, বাসিন্দারা আশ্রয় নেন ত্রাণশিবিরে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কেন্দ্রের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ডিভিসি (Damodar Valley Corporation)-কে কার্যত কাঠগড়ায় তুলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভাঙার অভিযোগ আনলেন তিনি।

ম্যান-মেড বন্যার তত্ত্ব ফের মুখ্যমন্ত্রীর মুখে
মমতার বক্তব্য, “ডিভিসি এবারে আগাম না জানিয়েই জল ছেড়েছে। এটা কোন নিয়মে পড়ে? রাজ্যকে আগাম সতর্ক না করে কীভাবে এমন বিপদ ডেকে আনা যায়?”
তিনি অভিযোগ করেন, ঝাড়খণ্ড ও বিহার থেকে ইচ্ছেমতো জল ছেড়ে দেওয়াই বাংলায় বারবার বন্যার পরিস্থিতি তৈরি করে। আর সেই জলে ভাসে ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, কেশপুরের মতো এলাকা। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে রাজ্য কোষাগার থেকে। অথচ, কেন্দ্র কোনও সাহায্য করছে না।

   

বরাদ্দ নেই, অসম পেল অর্থ, বঞ্চিত বাংলা?
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, “অসমকে কেন্দ্র আর্থিক সাহায্য করলেও বাংলাকে এক পয়সাও দেয়নি। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য বরাদ্দ দেড় হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র দেয়নি।” ডিভিসির ড্রেজিং না করার দায়ও তিনি কেন্দ্রের কাঁধে চাপিয়েছেন। তাঁর দাবি, যদি ঠিকভাবে ড্রেজিং হত, তবে ৪ লক্ষ কিউসেক জল আটকে রাখা যেত ডিভিসির জলাধারে। সেক্ষেত্রে বাংলার উপর এতটা চাপ পড়ত না।

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান: রাজ্য এগোচ্ছে একাই
এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য রাজ্য নিজেই দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। আগামী দু’বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, পরিকল্পনার রুট নির্ধারণে এই বিষয়টি খেয়াল রাখা হবে যাতে কোনও জনবসতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

Advertisements

উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৪, ২০১৯ এবং ২০২৪— তিনটি লোকসভা ভোটেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান ছিল শাসকদলের অন্যতম প্রধান ইস্যু। ২০২৪-এর ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, কেন্দ্র যদি না দেয়, তাহলে রাজ্য একাই কাজ করবে। সেই ঘোষণা বাস্তবায়নের দিকেই এখন এগোচ্ছে প্রশাসন।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বার্তা
মুখ্যমন্ত্রী আরও প্রশ্ন তোলেন, “ইন্ডিয়া-ভুটান রিভার কমিশনে বাংলার কোনও প্রতিনিধি নেই কেন? আমরা কি ভারতের অংশ নই?” এই বক্তব্যে তিনি ফের কেন্দ্রের ‘বঞ্চনার রাজনীতি’-র দিকেই ইঙ্গিত করেন।

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রাজ্যের জন্য শুধুই একটি প্রকল্প নয়— এটি একটি প্রতিশ্রুতি, যা বারে বারে রাজনৈতিক আবহে ফিরে আসে। এবারের বর্ষা আবারও দেখিয়ে দিল, এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কতটা জরুরি। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, কেন্দ্র সাহায্য না করলেও, রাজ্য একাই লড়বে বন্যার বিরুদ্ধে।