গত ১২ জুন, আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে যাত্রা করা এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই১৭১, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্যের মধ্যে ২৪১ জনের প্রাণহানি ঘটে। তাদের মধ্যে ছিলেন গুজরাটের তরুণ প্রতিভা দীর্ধ প্যাটেল (Young Cricketer)। এই ঘটনাটি ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনাগুলির মধ্যে একটি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় মাত্র একজন যাত্রী বেঁচে ফিরেছেন।
২৩ বছর বয়সী দীর্ধ প্যাটেল, হাডার্সফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন এবং টেক ইন্ডাস্ট্রিতে ক্যারিয়ার শুরুর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গুজরাটের বাসিন্দা দীর্ধ সম্প্রতি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি যুক্তরাজ্যের লিডস মডার্নিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলতেন। ২০২৪ সালের মরশুমে বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে তিনি মাত্র ২০টি ম্যাচে ৩১২ রান সংগ্রহ করেন এবং ২৯টি উইকেট নেন।
হাডার্সফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের রিডার ড. জর্জ বার্গিয়ান্নিস তাঁর প্রয়াত ছাত্রের প্রশংসা করে বলেন, “দীর্ধ শুধু তাঁর একাডেমিক দক্ষতার জন্যই নয়, তাঁর উষ্ণতা, উৎসাহ এবং প্রতিশ্রুতির জন্যও আমার কাছে বিশেষ ছিলেন।
তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ ব্যক্তি, সবসময় জ্ঞানপিপাসু এবং গভীর বোঝাপড়ার সঙ্গে প্রশ্ন করতেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল বিশাল, এবং তিনি তাঁর শিক্ষাকে বিশ্বে ইতিবাচক প্রভাব ফেলার জন্য ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। তাঁর এই মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের জীবনের নশ্বরতার একটি করুণ স্মারক। আমার সমবেদনা তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সহপাঠী এবং যারা তাঁকে চিনতেন তাদের প্রতি। তাঁর স্মৃতি আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।”
লিডস মডার্নিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাব, যেখানে দীর্ধ খেলতেন, একটি শোকবার্তায় বলেছে, “ক্লাবের সকলের চিন্তা দীর্ধের পরিবার এবং তাঁকে যারা চিনতেন তাদের সঙ্গে।” এয়ারডেল অ্যান্ড হোয়ারফেডেল সিনিয়র ক্রিকেট লিগের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, দীর্ধ তাঁর পেশাগত জীবন শুরু করার পরেও ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁর ভাই ক্রুতিক, যিনি পুল ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলতেন, তাঁকেও স্মরণ করা হয়েছে। সপ্তাহান্তে উভয় ক্লাবে দীর্ধের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়।