ভারতের আর্থিক ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হল প্যান (পার্মানেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর) কার্ড (PAN Card)। আয়কর দফতর দ্বারা জারি করা এই কার্ডটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া এবং উচ্চ-মূল্যের লেনদেনের মতো বিভিন্ন আর্থিক কর্মকাণ্ডে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্যান কার্ড আবেদন করার সময় প্রার্থীদের পরিচয়, ঠিকানা ও জন্ম তারিখ প্রমাণের নির্দিষ্ট কিছু নথি জমা দিতে হয়।
ভারতীয় নাগরিকদের জন্য অনলাইন প্যান কার্ড আবেদন
যারা অনলাইনে আবেদন করতে চান, তাদের তিনটি বিভাগে নথি জমা দিতে হয়: পরিচয় প্রমাণ, ঠিকানা প্রমাণ এবং জন্মতারিখ প্রমাণ।
- পরিচয়ের প্রমাণ (যেকোনো একটি নথি)
- আধার কার্ড
- ভোটার আইডি
- পাসপোর্ট
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- অস্ত্রের লাইসেন্স
- সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ছবি সহ পরিচয়পত্র
- সাংসদ (MP), বিধায়ক (MLA), পৌরসভার কাউন্সিলর বা পেনশন কার্ডে স্বাক্ষরিত পরিচয়পত্র
ঠিকানার প্রমাণ (যেকোনো একটি নথি)
- আধার কার্ড
- পাসপোর্ট
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- ভোটার আইডি
- ইলেকট্রিসিটি, গ্যাস, জল বা টেলিফোন বিল
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট
- পোস্ট অফিসের পাশবুক
- সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন নথি
- সম্পত্তি কর বিজ্ঞপ্তি
- ব্রডব্যান্ড বা ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্ট
- স্বামীর/স্ত্রীর পাসপোর্ট
- সরকারী বাসস্থানের বরাদ্দপত্র (৩ বছরের মধ্যে জারি হওয়া)
জন্ম তারিখের প্রমাণ (যেকোনো একটি নথি)
- পৌরসভা কর্তৃক জারি করা জন্ম সনদ
- পাসপোর্ট
- আধার কার্ড
- মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- পেনশন পেমেন্ট অর্ডার
- সরকার দ্বারা জারি করা ডোমিসাইল সার্টিফিকেট
- বিবাহের রেজিস্ট্রার অফিসের শংসাপত্র
- ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে শপথনামা
- সরকারী বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার আইডি কার্ড
- এনআরআই এবং হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের (HUFs) জন্য নথি
- Form 49A পূরণ করে নিম্নলিখিত নথিগুলি জমা দিতে হবে।
পরিচয়ের প্রমাণ (যেকোনো একটি)
- পাসপোর্ট
- ওসিআই/পিআইও কার্ড
- ট্যাক্সপেয়ারের আইডি (TIN)
- ন্যাশনাল আইডি কার্ড
- নাগরিকত্ব প্রমাণপত্র
ঠিকানার প্রমাণ (যেকোনো একটি)
- পাসপোর্ট
- বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট
- ওসিআই/পিআইও কার্ড
- এনআরই অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট
- বিদেশি রেজিস্ট্রেশন অফিসের সার্টিফিকেট
- ভারতীয় কোম্পানির নিয়োগপত্র এবং ঠিকানা সনদ
- বিদেশি ভিসা
- টিন বা নাগরিকত্ব আইডি (অ্যাপস্টিল বা ভারতীয় দূতাবাস দ্বারা স্বীকৃত)
- কোম্পানি ও সংস্থার প্যান কার্ড আবেদন
- ভারতীয় কোম্পানি
- কোম্পানি রেজিস্ট্রেশনের শংসাপত্র (ROC)
পার্টনারশিপ বা এলএলপি:
- রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা পার্টনারশিপ ডিড
- ট্রাস্ট বা এসোসিয়েশন
ট্রাস্ট ডিড বা চ্যারিটি কমিশনারের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট
বিদেশি কোম্পানি
- ভারতে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট
- ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন
- নিজ দেশের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (অ্যাপস্টিল/দূতাবাস কর্তৃক প্রমাণিত)
বিদেশি ট্রাস্ট বা সংস্থা:
- প্রতিষ্ঠানের বৈধ রেজিস্ট্রেশন ডকুমেন্ট
- শিক্ষার্থী ও নাবালকদের জন্য প্রয়োজনীয় নথি
- ঠিকানার প্রমাণ (যেকোনো একটি)
- আধার কার্ড
- পাসপোর্ট
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- গত ৩ মাসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট
- বিদ্যুৎ, গ্যাস বা টেলিফোন বিল
- ভোটার আইডি
- সরকার জারি করা ডোমিসাইল সার্টিফিকেট
- গেজেটেড অফিসার বা বিধায়কের স্বাক্ষরিত ঠিকানা শংসাপত্র
- সরকারী আবাসন বরাদ্দপত্র
পরিচয়ের প্রমাণ (যেকোনো একটি)
- আধার কার্ড
- ভোটার আইডি
- পাসপোর্ট
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
- রেশন কার্ড
- গেজেটেড অফিসার বা বিধায়কের স্বাক্ষরিত পরিচয় শংসাপত্র
- ব্যাঙ্ক সার্টিফিকেট (ছবি ও স্বাক্ষর সহ, শাখা ব্যবস্থাপক দ্বারা স্বাক্ষরিত)
অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
প্যান কার্ড আবেদনের সময় জমা দেওয়া সমস্ত নথি স্পষ্ট, বৈধ ও আপ-টু-ডেট হতে হবে। নাবালক প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অভিভাবকের নথি জমা দিতে হতে পারে। বিদেশি নাগরিকদের জন্য সকল ডকুমেন্ট উপযুক্তভাবে স্বীকৃত হতে হবে, যেমন—ভারতীয় দূতাবাস, কনস্যুলেট বা অ্যাপস্টিল দ্বারা অনুমোদনপ্রাপ্ত।
ঠিক নথি জমা দেওয়ার মাধ্যমে প্যান কার্ড আবেদনের প্রক্রিয়া দ্রুত ও সমস্যা-মুক্ত হয়। তাই আবেদনপত্র জমা দেওয়ার আগে সব প্রমাণপত্র ভালভাবে যাচাই করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।