গুজরাটের আহমেদাবাদে আজ এক বড় বিমান দুর্ঘটনার (Ahmedabad Plane Crash) খবর শোকের সঙ্গেই এসেছে। শহরের মেঘানিনগর এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বিমান ভেঙে পড়েছে, যা দেশের আকাশে এক নতুন বিপর্যয়ের জন্ম দিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করার পর কিছু সময় পরই দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এতে কমপক্ষে ১৩৫ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদিও এই সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হয়নি। দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশ, দমকল বাহিনী এবং উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছে গিয়েছে এবং উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। তবে, এই ঘটনার প্রকৃত কারণ বা কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পরপরই শহরের আকাশে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে, যা গোটা এলাকা ঢেকে ফেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিমানটি যাত্রী নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করছিল। বিমানটির উড্ডয়ন হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই এই দুর্ঘটনা ঘটে। এটি আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৭.৬ কিলোমিটার দূরে মেঘানিনগরের একটি জনবহুল এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। বিমানটির ভেঙে পড়ার মুহূর্তে আকাশে কালো ধোঁয়া দেখা যায়, যা এলাকাবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
আতঙ্কিত এলাকার লোকেরা জানান, দুর্ঘটনার পর প্রথম দিকে তারা ভেবেছিলেন, এটি একটি বড়ো বিস্ফোরণ বা আগুনের ঘটনা হতে পারে। পরে জানা যায়, এটি একটি বিমান দুর্ঘটনা। স্থানীয় দমকল বাহিনী এবং পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে, তবে উদ্ধারকাজ এখনও চলমান। উদ্ধারকার্য চলাকালীন বিমানটিতে থাকা নিহতদের সঠিক সংখ্যা জানানো সম্ভব হয়নি, তবে নিহতের সংখ্যা ১৩৫-র আশপাশে হতে পারে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিমান চালক ক্যাপ্টেন অনিন্দ্য বিশ্বাস টিভি৯ বাংলাকে জানিয়েছেন, তিনি জানতে পেরেছেন যে বিমানটি বোয়িং এআই ১৭১ ছিল, যা আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে উড্ডয়ন করেছিল। তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে সঠিকভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না, তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে, এটি ইঞ্জিনের কোনো ত্রুটির কারণে ঘটেছে। যদি ইঞ্জিনের সমস্যা হয়ে থাকে, তবে বিমান চালক হয়তো সামাল দেওয়ার সময় পাননি। এই ত্রুটির কারণে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে।
আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার ঘটনার পর এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার জন্য তদন্ত শুরু করেছে। তারা নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে তাদের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য তারা পুরো বিমান সংস্থার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে পুনরায় পর্যালোচনা করবেন।
এদিকে, ভারতীয় বিমান সংস্থা কর্তৃপক্ষও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে জরুরি বৈঠক আয়োজন করতে পারে, যাতে এমন দুর্ঘটনা পুনরায় না ঘটে। আর, এই দুর্ঘটনা আন্তর্জাতিক বিমান নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকেও উদ্বিগ্ন করেছে, কারণ এটি সাধারণ একটি বিমান দুর্ঘটনা নয়, বরং একটি বড়ো বিপর্যয়, যা দেশের আকাশপথের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এমন ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। বিশেষ করে, লন্ডনের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলি পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত তদন্তে প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং ভবিষ্যতে এমন বিপর্যয় এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এটি যে শুধু ভারত, তা নয়, বিশ্বজুড়ে বিমান নিরাপত্তার বিষয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা শুরু করবে। বিমান যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।