উত্তরপ্রদেশের (uttar-pradesh) আলীগড় রেলওয়ে স্টেশনে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ৪০ বছর বয়সী দেবেন্দ্র কুমার নামে এক ব্যক্তিকে গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত দেবেন্দ্র কুমার ট্রেনে ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) হিসেবে ছদ্মবেশ ধারণ করে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।
জিআরপি (uttar-pradesh) এবং রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের (আরপিএফ) যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে ১৩টি নকল টিকিট, ৩,৩০৫ টাকা নগদ, একটি নকল আইডি কার্ড, একটি মোবাইল ফোন এবং একটি ফাঁকা চেক উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় রেলওয়ে আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আলীগড় (uttar-pradesh) রেলওয়ে স্টেশনে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটি গত ৭ জুন রাতে সামনে আসে, যখন আমৃত্যার-কাটিহার এক্সপ্রেস (ট্রেন নম্বর ১৫৭০৭) ট্রেনে একজন যাত্রী টিকিট পরীক্ষক দিনেশ কুমারকে দেবেন্দ্র কুমারের সন্দেহজনক কার্যকলাপের কথা জানান। টিকিট পরীক্ষক দিনেশ কুমার, মনোজ চৌহান, গুরপ্রীত সিং এবং ওম রাজের নেতৃত্বে একটি দল দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।
তারা দেখতে পান যে দেবেন্দ্র কুমার কালো ইউনিফর্ম পরে যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা করছেন এবং তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন। যখন তাকে তার পরিচয়পত্র এবং অনুমোদনের নথি দেখাতে বলা হয়, তিনি প্রথমে দাবি করেন যে তিনি নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত টিটিই। কিন্তু পরে তিনি স্বীকার করেন যে তার কাছে কোনও অনুমোদনের নথি নেই। আলীগড় জিআরপি থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সজ্জন সিংয়ের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
এই ঘটনায় দেবেন্দ্র কুমারের কাছ থেকে উদ্ধার করা আইটেমগুলির মধ্যে ছিল একটি ফর্জি আইডি কার্ড, যা তিনি টিটিই হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। তিনি কিউআর কোডের মাধ্যমে যাত্রীদের কাছ থেকে ডিজিটাল পেমেন্ট গ্রহণ করছিলেন, যা তাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, দেবেন্দ্র কুমার যাত্রীদের কাছ থেকে টিকিট চেক করার নামে অবৈধভাবে টাকা আদায় করছিলেন (uttar-pradesh)এবং নকল টিকিট তৈরি করে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলেন। তার বিরুদ্ধে রেলওয়ে আইনের ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনা ভারতীয় রেলের নিরাপত্তা এবং যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। আলীগড়(uttar-pradesh) জিআরপি থানার পুলিশ সুপার অভিষেক বর্মার নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়। তিনি জানান, এই ধরনের প্রতারণা রোধে রেলওয়ে পুলিশ সর্বদা সতর্ক রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি যাত্রীদের সতর্ক থাকার এবং টিকিট পরীক্ষকদের পরিচয়পত্র যাচাই করার পরামর্শ দিয়েছেন।
এই ঘটনা আলীগড় (uttar-pradesh) প্রথম নয়। এর আগেও ভারতের বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে নকল টিটিই ধরা পড়েছে। গত বছর, লুধিয়ানা রেলওয়ে স্টেশনে একই ধরনের একটি ঘটনায় একজন নকল টিটিইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যিনি আমৃত্যার-কাটিহার এক্সপ্রেসে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছিলেন।
এছাড়াও, ঝাঁসিতে একজন নকল মহিলা টিটিই হিসেবে ধরা পড়েছিলেন, যিনি পাটালকোট এক্সপ্রেসে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলেন। এই ঘটনাগুলি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের জন্য একটি সতর্কবার্তা, যারা যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং সুবিধা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর নজরদারির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এই ঘটনার পর স্থানীয় যাত্রী সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ রেলওয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতির দাবি তুলেছে। অনেকে মনে করেন, ট্রেনে টিকিট চেকিং প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা এবং ডিজিটাল যাচাই ব্যবস্থা চালু করা উচিত। একজন যাত্রী, রাকেশ কুমার, বলেন, “আমরা প্রায়ই ট্রেনে টিকিট পরীক্ষকদের উপর ভরসা করি, কিন্তু এই ধরনের ঘটনা আমাদের আস্থা নষ্ট করে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উচিত টিটিইদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য একটি অ্যাপ বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা।”
দেবেন্দ্র কুমারের এই প্রতারণার ঘটনা আলীগড়ের (uttar-pradesh) বাইরেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এক্স প্ল্যাটফর্মে অনেকে এই ঘটনাকে রেলওয়ে ব্যবস্থার নিরাপত্তা ত্রুটির উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “ফর্জি টিটিই ধরা পড়ছে, কিন্তু এটা কি শুধুই একক ঘটনা? রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা দরকার।”
মাত্র ১৭ বছর বয়সেই রিয়াল মাদ্রিদে আর্জেন্টিনার বিস্ময়বালক ফ্রাঙ্কো
এই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, দেবেন্দ্র কুমারের অপরাধমূলক পটভূমি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি কতদিন ধরে এই প্রতারণা চালাচ্ছিলেন এবং আরও কতজন যাত্রী তার শিকার হয়েছেন, তা জানতে তদন্তকারীরা তার মোবাইল ফোন এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ পরীক্ষা করছে। জিআরপি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধরনের অপরাধ দমনে তারা কঠোর পদক্ষেপ নেবে এবং যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য নিয়মিত চেকিং অভিযান চালানো হবে।
এই ঘটনা ভারতীয় রেলের (uttar-pradesh) জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং আস্থা বজায় রাখতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আরও সতর্ক এবং প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেবেন্দ্র কুমারের গ্রেপ্তারি রেলওয়ে পুলিশের সতর্কতার প্রমাণ হলেও, এই ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন।