কার্নির ডাকে ৫১তম জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে কানাডায় মোদী

শুক্রবার (৬ জুন ২০২৫) সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (modi) কানাডার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মার্ক জে. কার্নির কাছ থেকে একটি ফোন কল পান। এই কথোপকথনের সময়…

modi is going for g7 summit in canada

শুক্রবার (৬ জুন ২০২৫) সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (modi) কানাডার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মার্ক জে. কার্নির কাছ থেকে একটি ফোন কল পান। এই কথোপকথনের সময় কার্নি মোদীকে এই মাসের শেষে কানাডার কানানাস্কিসে অনুষ্ঠিতব্য ৫১তম জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

কার্নিকে  অভিনন্দন (modi)

মোদী এক্স-এ (modi) এই কথোপকথনের বিবরণ শেয়ার করে কার্নিকে তার সাম্প্রতিক নির্বাচনী জয়ের জন্য অভিনন্দন জানান এবং আমন্ত্রণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “কানাডার প্রধানমন্ত্রী র কাছ থেকে ফোন পেয়ে আনন্দিত।

   

তাকে তার সাম্প্রতিক নির্বাচনী জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি এবং এই মাসের শেষে কানানাস্কিসে জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ দিয়েছি। গভীর জনগণের সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ প্রাণবন্ত গণতন্ত্র হিসেবে, ভারত এবং কানাডা পারস্পরিক সম্মান ও সাধারণ স্বার্থের দ্বারা পরিচালিত হয়ে নতুন উদ্যমে একসঙ্গে কাজ করবে। সম্মেলনে আমাদের সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষায় রয়েছি।”

ভারত-কানাডা সম্পর্কের উন্নতি

এই আমন্ত্রণ ভারত-কানাডা সম্পর্কের উন্নতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত। সম্প্রতি কানাডায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মার্ক কার্নির নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি জয়লাভ করে, এবং কার্নি তার পূর্বসূরি জাস্টিন ট্রুডোর কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

ট্রুডোর আমলে ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক

ট্রুডোর আমলে ভারতের সঙ্গে কানাডার (modi) সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে শীতল হয়ে পড়েছিল, বিশেষ করে ২০২৩ সালে খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ট্রুডোর ভারতীয় সরকারের বিরুদ্ধে “সম্ভাব্য” জড়িত থাকার অভিযোগের পর। ভারত এই অভিযোগকে “অযৌক্তিক” এবং “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে প্রত্যাখ্যান করে। এই ঘটনার পর দুই দেশ একে অপরের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের মান নিম্নমুখী হয়।

কার্নির নির্বাচনের পর ভারত-কানাডা সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের আশা জাগে। মোদী (modi) কার্নির জয়ের পর এক্স-এ পোস্ট করে বলেন, “মার্ক জে. কার্নিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার জন্য এবং লিবারেল পার্টির জয়ের জন্য অভিনন্দন। ভারত এবং কানাডা সাধারণ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আইনের শাসনের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি এবং প্রাণবন্ত জনগণের সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ। আমি আপনার সঙ্গে কাজ করে আমাদের

অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করতে এবং আমাদের জনগণের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করতে উন্মুখ।” ট্রুডোর বিপরীতে, কার্নি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পক্ষে সরব হয়েছেন। তিনি পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পর শোক প্রকাশ করে এবং দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

জি৭ শীর্ষ সম্মেলন

জি৭ শীর্ষ সম্মেলন বিশ্বের সাতটি উন্নত অর্থনীতির দেশ—ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান, ইটালি, কানাডা (modi) এবং যুক্তরাজ্য—এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি অনানুষ্ঠানিক সমাবেশ। প্রতি বছর এই শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্ব অর্থনীতি এবং ভূ-রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ভারত জি৭-এর সদস্য না হলেও, ২০১৯ সাল থেকে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান এবং ইটালি তাদের আউটরিচ সেশনে ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এই আমন্ত্রণ ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তার ভূমিকার স্বীকৃতি।

Advertisements

এই বছরের জি৭ শীর্ষ সম্মেলন ১৫ থেকে ১৭ জুন কানাডার আলবার্টার কানানাস্কিসে অনুষ্ঠিত হবে। কার্নির নেতৃত্বে এই সম্মেলনে বৈশ্বিক শান্তি, অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল রূপান্তরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ভারত ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, মেক্সিকো, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইউক্রেনের মতো দেশগুলোকে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারত-কানাডা সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়

কার্নির আমন্ত্রণ এবং মোদীর (modi) অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত ভারত-কানাডা সম্পর্কের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। ট্রুডোর আমলে সম্পর্কের অবনতির পর, কার্নির সরকার ধীরে ধীরে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের দিকে এগোচ্ছে। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দ সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সাধারণ অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করেন। আনন্দ বলেন, এই সম্পর্ক পুনরুদ্ধার “এক ধাপে এক ধাপে” এগোবে।

ভারত (modi) আশা করছে যে কার্নির সরকার ট্রুডোর তুলনায় আরও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি পরিচালনা করবে। নয়াদিল্লি (modi) কানাডার কাছে ভারতীয় কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এবং ভারত-বিরোদ্ধী চরমপন্থী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। সম্মেলনের পাশাপাশি একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক দুই নেতার জন্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের একটি মূল্যবান সুযোগ হতে পারে।

দেখা মিলল Tesla Model Y Juniper-এর, ভারতে আসছে টেসলার বৈদ্যুতিক গাড়ি?

এই ঘটনা ভারতের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক প্রভাবেরও প্রতিফলন। মোদী (modi)গত বছর ইটালিতে জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন, যা ছিল তার পঞ্চম টানা অংশগ্রহণ। কানাডার এই আমন্ত্রণ এবং মোদীর অংশগ্রহণ ভারতের বৈশ্বিক মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সহযোগিতার সম্ভাবনাকে তুলে ধরে। সামাজিক মাধ্যমে এই খবর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ফেলেছে, অনেকে এটিকে ভারত-কানাডা সম্পর্কের নতুন শুরু হিসেবে দেখছেন।

জি৭ শীর্ষ সম্মেলনে মোদী (modi) এবং কার্নির সাক্ষাৎ দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ভিত্তিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। এটি ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তি এবং বৈশ্বিক নেতৃত্বের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের আস্থার প্রতিফলন।