ভাঁড়ে মা ভবানী! জঙ্গিদের মদতদাতা পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াল চিন

China supports terror-linked Pakistan: আর্থিক দেউলিয়া হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানকে ফের বড়সড় আর্থিক সহায়তা দিল তাদের পুরনো মিত্র চিন। সম্প্রতি প্রকাশিত এক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট…

China Pakistan Loan in Yuan

China supports terror-linked Pakistan: আর্থিক দেউলিয়া হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানকে ফের বড়সড় আর্থিক সহায়তা দিল তাদের পুরনো মিত্র চিন। সম্প্রতি প্রকাশিত এক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, চিন পাকিস্তানকে ৩.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ঋণ পুনঃনির্ধারণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে দুই অঙ্কে রাখতে সাহায্য করবে। তবে এবার এই ঋণ চিনের নিজস্ব মুদ্রা রেনমিনবি (RMB)-তে দেওয়া হচ্ছে, ডলারে নয়।

এই সিদ্ধান্ত যে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিক এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও গভীর তাৎপর্যপূর্ণ—তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষত এমন এক সময়ে, যখন পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে অভিযুক্ত এবং একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপের পেছনে তাদের সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তখন এই আর্থিক সহায়তা চিনের অবস্থানকেই স্পষ্ট করছে।

   

পাকিস্তানের আর্থিক সংকট
বর্তমানে পাকিস্তানের অর্থনীতি চরম সংকটে। বৈদেশিক ঋণের বোঝা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদের হুমকি তাদের আন্তর্জাতিক লগ্নিকারীদের আস্থা হারাতে বাধ্য করেছে। এরই মাঝে ২০২৫ সালের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে চলা ঋণগুলির পুনঃঅর্থায়নের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছিল ইসলামাবাদ।

এই প্রেক্ষিতে, চিনের এই সহায়তা একপ্রকার লাইফলাইন হয়ে দাঁড়াল পাকিস্তানের জন্য। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা শুধু আর্থিক দিক থেকে নয়, চিন-পাকিস্তান সম্পর্কের জঙ্গি কার্যকলাপে সম্ভাব্য প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

ডলার বাদ, রেনমিনবির জোর
এই ঋণ সংক্রান্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, চিন এবার মার্কিন ডলারের পরিবর্তে নিজের মুদ্রা রেনমিনবিতে ঋণ দিচ্ছে। এতে একদিকে যেমন তারা নিজেদের “ডলারের উপর নির্ভরতা কমানোর কৌশল” সফলভাবে এগিয়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে পাকিস্তানকে চীনা আর্থিক ব্যবস্থার মধ্যে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে ফেলছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে পাকিস্তানের আর্থিক স্বাধীনতা আরও ক্ষুণ্ণ করতে পারে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে চিনের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টারও একটি কৌশল এটি।

Advertisements

ভারতের দৃষ্টিকোণ
ভারতের পক্ষে এই ঘটনা উদ্বেগজনক। একদিকে পাকিস্তান সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদত দিচ্ছে, অন্যদিকে চিন তার পাশে দাঁড়িয়ে আর্থিকভাবে তাকে শক্তিশালী করে তুলছে। এর ফলে, পাক-চিন আঁতাত নতুন মাত্রা পাচ্ছে। বিশেষত এমন সময়ে, যখন পহেলগামে জঙ্গি হামলার মতো ঘটনা ঘিরে ভারত জঙ্গিবাদবিরোধী অবস্থানকে জোরদার করছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, “চিনের এই ঋণ সহায়তা আসলে পরোক্ষভাবে জঙ্গিবাদের অর্থ জোগানোর পৃষ্ঠপোষকতা। পাকিস্তান যদি এই অর্থ দেশের বিকাশে না খরচ করে বরং জঙ্গি সংগঠনগুলির লালনপালনে ব্যয় করে, তাহলে তা গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক।”

এটি স্পষ্ট যে, পাকিস্তান আজ চূড়ান্তভাবে চিনের উপর নির্ভরশীল। আর চিনও সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে, একদিকে যেমন মার্কিন ডলারের আধিপত্য খর্ব করতে চাইছে, অন্যদিকে পাকিস্তানকে নিজের কৌশলগত উপনিবেশে পরিণত করছে। পশ্চিমের বিশ্লেষকেরা বলছেন, “এই ঋণ আসলে জাল। এই জালে পাকড়াও হয়ে পাকিস্তান নিজের সার্বভৌমত্বও একদিন বিকিয়ে দেবে।”

আর ভারতের কাছে এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করল—জঙ্গিবাদ শুধু সীমান্তে নয়, অর্থনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। এবং তার বড় পৃষ্ঠপোষক এখন চিন।