আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) নিশ্চিত কোয়ালিফায়ার ১ টিকিটের খোঁজে পাঞ্জাব কিংসকে (Punjab Kings) বড় ধাক্কা খেল শনিবার। জয়পুরের সাওয়াই মানসিং স্টেডিয়ামে দিল্লি ক্যাপিটালসের (Delhi Capitals) বিরুদ্ধে ছয় উইকেটে পরাজিত হয়। ম্যাচটি শুরু হয়েছিল দুই সপ্তাহ আগে, কিন্তু ধর্মশালায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। সেই দিনের দশ ওভারের খেলা বাতিল করে নতুন করে শুরু হয় ম্যাচটি জয়পুরে।
দিল্লি ক্যাপিটালস এবারের আইপিএল ২০২৫ প্রথমার্ধে দুর্দান্ত ফর্মে থাকলেও সাম্প্রতিক পাঁচ ম্যাচে জয়হীন থাকায় তারা ইতিমধ্যেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছে। বিশেষ করে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তারা একেবারে বিধ্বস্ত হয়েছিল। অপরদিকে, পাঞ্জাব কিংস ভালো ফর্মে থাকায় কোয়ালিফায়ার ১ জায়গা পাওয়ার জন্য বড় ফেভারিট ছিল। এই ম্যাচটি ছিল জয়পুরে তাদের টানা তিনটি ম্যাচের দ্বিতীয়টি, যেখানে তারা আত্মবিশ্বাসী ছিল দিল্লির দুর্বল ফর্মের সুযোগ নিতে।
তবে পাঞ্জাবের সব পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালসের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের সামনে। ২০৭ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দিল্লির ব্যাটসম্যানরা দেখিয়েছেন অসাধারণ প্রতিভা ও ধৈর্য। বিশেষ করে তরুণ ব্যাটসম্যান সামির রিজভী দুর্দান্ত এক অর্ধশতক হাঁকিয়ে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন। দিল্লির ব্যাটিংয়ে চার উইকেট পড়লেও তারা আত্মবিশ্বাস হারায়নি, আর রিজভীর সেই সাহসী ইনিংসই দিল্লির জয়ের অন্যতম প্রধান ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।
এর আগে, প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাঞ্জাব কিংস করেছিল ২০৬ রান ৮ উইকেটের বিনিময়ে। অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার করেন ৫৩ রান ৩৪ বলে, আর মার্কাস স্টোইনিস মাত্র ১৬ বলে ৪৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। দিল্লি বোলিং বিভাগে ছিল নজরকাড়া। মোস্তাফিজুর রহমান ৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ছিলেন সেরা বোলার, অন্যদিকে কুলদীপ যাদব ও ভিপ্রাজ নিগম দু’জনেই পান ২টি করে উইকেট।
পাঞ্জাব কিংসের দৃষ্টিকোণ থেকে, এই হার এক বড় ধাক্কা। ম্যাচ শুরুর আগে তারা ছিল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুইয়ের দৌড়ে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা দলগুলোর একটি। তবে এই হার তাদের সেই পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তারা এখনও কোয়ালিফায়ার ১-এ ওঠার সম্ভাবনা ধরে রেখেছে, তবে তা এখন নির্ভর করবে বাকি ম্যাচগুলোর ফলাফলের উপর।
এই ম্যাচটি আবারও প্রমাণ করল, টি২০ ক্রিকেটে কোনো কিছুই নিশ্চিত নয় যতক্ষণ না শেষ বলটি খেলা হয়। দিল্লি ক্যাপিটালস টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়লেও তারা যে এখনও নিজেদের প্রমাণ করতে পারে, সেটাই তারা দেখাল। তরুণ খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ভবিষ্যতের জন্য বড় আশার আলো হয়ে থাকল দিল্লির জন্য।
অন্যদিকে, পাঞ্জাব কিংসকে নিজেদের ঘুরে দাঁড়ানোর কৌশল খুঁজে বের করতে হবে। পরের ম্যাচেও যদি তারা জয়হীন থাকে, তবে তাদের কোয়ালিফায়ার ১-এর স্বপ্ন ভেস্তে যেতে পারে। এখন পাঞ্জাবের সামনে শুধু একটাই পথ—পরের ম্যাচগুলো জিতে নিজের ভাগ্য নিজের হাতে রাখার চেষ্টা করা।
সামনের ম্যাচগুলোতে কী হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়, তবে এই হারের পর পাঞ্জাব কিংসের জন্য পথটা যে কিছুটা কঠিন হয়ে গেল, তা বলাই বাহুল্য।