বিমানবন্দর বন্ধের সময় সীমা বাড়ল, রইল নতুন আপডেট

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং পাকিস্তানের ড্রোন হামলার প্রেক্ষাপটে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল (airport) মন্ত্রণালয় শুক্রবার দেশের ২৮টি বিমানবন্দরের বন্ধের সময়সীমা ১০ মে থেকে বাড়িয়ে…

airport closure extends

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং পাকিস্তানের ড্রোন হামলার প্রেক্ষাপটে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল (airport) মন্ত্রণালয় শুক্রবার দেশের ২৮টি বিমানবন্দরের বন্ধের সময়সীমা ১০ মে থেকে বাড়িয়ে ১৫ মে সকাল পর্যন্ত করেছে। একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।

ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স  জানিয়েছে (airport)

ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স (airport) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, নিম্নলিখিত গন্তব্য থেকে এবং এই গন্তব্যে সমস্ত ফ্লাইট অস্থায়ী বিমানবন্দর বন্ধের কারণে ১৫ মে সকাল ৫:২৯ পর্যন্ত বাতিল থাকবে।

   

শ্রীনগর, জম্মু, আমৃতসর, লে, চণ্ডীগড়, ধরমশালা, বিকানের, রাজকোট, যোধপুর এবং কিশানগড় বিমানবন্দর ১৫ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আপনার নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা এই পরিস্থিতি একসঙ্গে মোকাবিলায় অটল সমর্থন প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

এয়ার ইন্ডিয়া পরামর্শ জারি করেছে

এয়ার ইন্ডিয়াও (airport) যাত্রীদের জন্য একটি ভ্রমণ পরামর্শ জারি করেছে। এক্স-এ একটি পোস্টে তারা লিখেছে, “বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ভারতের একাধিক বিমানবন্দরের অব্যাহত বন্ধের কারণে জম্মু, শ্রীনগর, লে, যোধপুর, আমৃতসর, চণ্ডীগড়, ভুজ, জামনগর এবং রাজকোট স্টেশন থেকে এবং এই স্টেশনগুলোতে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটগুলো ১৫ মে সকাল ৫:২৯ পর্যন্ত বাতিল থাকবে। এই সময়ের জন্য বৈধ টিকিটধারী গ্রাহকদের পুনঃনির্ধারণের জন্য এককালীন চার্জ মওকুফ বা বাতিলের জন্য সম্পূর্ণ ফেরত দেওয়া হবে।”

পাকিস্তানের আক্রমণ ও ভারতের প্রতিক্রিয়া

এই সিদ্ধান্ত ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তে বড় ধরনের উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে। ৭ ও ৮ মে রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী একাধিকবার ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করে এবং ড্রোন অনুপ্রবেশের মাধ্যমে ভারতীয় সামরিক পরিকাঠামো লক্ষ্য করে।

শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি জানিয়েছেন, পাকিস্তান ৩৬টি স্থানে ৩০০ থেকে ৪০০টি ড্রোন মোতায়েন করেছিল, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি ভারতীয় বাহিনী কাইনেটিক এবং নন-কাইনেটিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ধ্বংস করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই ড্রোনগুলো ছিল তুর্কি নির্মিত অ্যাসিসগার্ড সোঙ্গার মডেল।

কর্নেল কুরেশি বলেন, “৭ ও ৮ মে রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করে সামরিক পরিকাঠামো লক্ষ্য করে। এছাড়াও, তারা নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারী ক্যালিবারের অস্ত্র দিয়ে গোলাবর্ষণ করে।

প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০টি ড্রোন ৩৬টি স্থানে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে।” তিনি যোগ করেন, “ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এই ড্রোনগুলোর অনেকগুলো ধ্বংস করেছে। এই বড় আকারের আকাশসীমা লঙ্ঘনের উদ্দেশ্য ছিল সম্ভবত ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরীক্ষা করা এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষের ফরেনসিক তদন্ত চলছে।”

হামাস-শৈলী হামলা

প্রতিরক্ষা সূত্রে এএনআই-কে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান বৃহস্পতিবার জম্মুতে হামাস-শৈলীর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে একাধিক এলাকা লক্ষ্য করে। এই হামলা ইসরায়েলে হামাসের আক্রমণের মতো ছিল, যেখানে স্বল্পমূল্যের একাধিক রকেট ব্যবহার করে শহরগুলোকে লক্ষ্য করা হয়। এই হামলা ছিল ভারতের অপারেশন সিন্দুরের প্রতিশোধ হিসেবে, যেখানে বুধবার পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে নির্ভুল হামলা চালানো হয়। এই অপারেশনটি ২২ এপ্রিল পাহালগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়া ছিল।

ভারতের মাটিতে ২০২৭ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল?

ভারতের সফল প্রতিরক্ষা

বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনাবাহিনী এলওসি এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত (আইবি) বরাবর বড় আকারের কাউন্টার-ড্রোন অপারেশনে ৫০টিরও বেশি পাকিস্তানি ড্রোন ধ্বংস করে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ৭-৮ মে রাতে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের একাধিক সামরিক স্থাপনায় পাকিস্তানের বড় আকারের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করে। এই প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের লাহোরে একটি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিরপেক্ষ করা হয়।

বিমানবন্দর বন্ধের প্রভাব

২৮টি বিমানবন্দর (airport) বন্ধের ফলে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের বিমান চলাচল ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে। শ্রীনগর, জম্মু, আমৃতসর, লে এবং যোধপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের সমস্যা বাড়বে। তবে, এয়ারলাইন্সগুলো যাত্রীদের জন্য পুনঃনির্ধারণ এবং ফেরতের সুবিধা প্রদান করছে। এই পদক্ষেপ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুর তাদের নাগরিকদের জম্মু ও কাশ্মীর এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। রাষ্ট্রসংঘ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সহ বিশ্ব নেতারা উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শন এবং কূটনৈতিক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের ২৮টি বিমানবন্দর বন্ধের সিদ্ধান্ত দেশের নিরাপত্তা অগ্রাধিকার প্রকাশ করে। অপারেশন সিন্দুর এবং তার পরবর্তী ঘটনাবলী ভারতের সামরিক ও কূটনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করেছে।

পাকিস্তানের তুর্কি ড্রোন ব্যবহার এবং হামাস-শৈলী হামলার প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘনের ইঙ্গিত দেয়। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারতের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শান্তির আহ্বান সংঘাত নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Advertisements