‘ছয় যমদূতের এনকাউন্টার চাই’, সেনাবাহিনীকে অনুরোধ সঞ্জয় রাউতের

শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত (sanjay-raut) বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠকে অপারেশন সিঁদুরের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাউত…

sanjay-raut on millitants

শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত (sanjay-raut) বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠকে অপারেশন সিঁদুরের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাউত জানান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বৈঠকে বলেছেন, অপারেশন সিঁদুর চলমান এবং এটি অব্যাহত থাকবে।

“আমরা এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছি

“আমরা এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছি এবং বলেছি, যতক্ষণ না সেই ছয় জঙ্গি—যারা ছয় ‘যমদূত’ হিসেবে গ্রামে ঢুকে আমাদের ২৬ বোনের কপালের সিঁদুর মুছে দিয়েছে—ধরা ও নির্মূল না হয়, ততক্ষণ এই অভিযান বন্ধ করা উচিত নয়,” । তিনি আরও বলেন, “এই ছয় জঙ্গি, এই যমদূতদের এনকাউন্টারে হত্যা করা উচিত নয়।

   

শুধু বলা উচিত নয়, ‘আমরা তাকে গুলি করেছি, মেরে ফেলেছি।’ না, তাদের জীবিত অবস্থায় দিল্লিতে আনা হোক, ইন্ডিয়া গেটে দাঁড় করানো হোক। যে মহিলারা হামলার শিকার হয়েছেন, তাদের মধ্যে মাত্র দুজন বেঁচে আছেন, তারা তাদের শনাক্ত করবেন। শনাক্তকরণের পরই তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক। তারপর তাদের দেহ পাকিস্তান সীমান্তের বাইরে ফেলে দেওয়া হোক। তবেই প্রকৃত পরিবর্তন আসবে।”

সর্বদলীয় বৈঠক ও শিবসেনার অবস্থান (sanjay-raut)

কেন্দ্রীয় সরকার অপারেশন সিন্দুরের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনের অ্যানেক্সি ভবনে একটি সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করে। এই বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং রাজনৈতিক নেতাদের ভারতের সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করেন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডা, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীসহ আরও অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

রাউত সাংবাদিকদের বলেন

রাউত (sanjay-raut) সাংবাদিকদের বলেন, “যখন যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করা হয়। এই ধরনের বৈঠকে সবাই একমত হয় যে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হবে। এবারও তাই হয়েছে, এবং এটা হওয়া উচিত।” তিনি জানান, প্রতিটি দল তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছে, এবং শিবসেনাও গর্বের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, অপারেশন সিন্দুরে ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে, যদিও সম্পূর্ণ মূল্যায়নের জন্য সময় লাগবে। রাউত বলেন, “প্রতিটি দল তাদের মতামত তুলে ধরেছে, এবং বৈঠকটি ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শিবসেনা দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেছে, যা আমি মনে করি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার উপর জোর

রাউত (sanjay-raut) ভারতের অভ্যন্তরে স্লিপার সেল সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “পাকিস্তান চুপ করে থাকবে না। তারা সরাসরি সংঘর্ষে না গিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে তাদের স্লিপার সেল ব্যবহার করে। এগুলো এখন সক্রিয় হবে।”

তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উদ্দেশে বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এখন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করা আপনার দায়িত্ব। আপনি কী পদক্ষেপ নেবেন, তা আমাদের জানান। কারণ আপনার তত্ত্বাবধানেও আমাদের ২৬ জন মানুষ নিহত হয়েছে। এটা আবার ঘটতে দেওয়া উচিত নয়।”

রাউত (sanjay-raut) জানান, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। “আমরা এই দুটি বিষয় উত্থাপন করেছি, এবং আমি মনে করি সবাই এতে প্রায় একমত হয়েছে,” তিনি যোগ করেন।

হুমকির মধ্যেই ম্যাচের পূর্বে ড্রোন হামলায় গুড়িয়ে গেল স্টেডিয়ামের একাংশ

অপারেশন সিঁদুরের পটভূমি

৭ মে ভোরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান ও পিওজেকে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই অভিযান ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে পরিচালিত হয়, যেখানে ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়। হামলায় বাহাওয়ালপুর, মুরিদকে, সরজাল, মেহমুনা জয়া এবং পিওজেকের ভিম্বর, কোটলি ও মুজাফফরাবাদের পাঁচটি স্থান ধ্বংস করা হয়। সূত্র জানায়, এই অভিযানে ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে।

জবাবে, পাকিস্তান ৭ মে রাতে উত্তর ও পশ্চিম ভারতের একাধিক সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলার চেষ্টা করে। ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এই হামলা প্রতিহত করে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

এই সংঘাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় দেশকে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সামরিক সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন। চীন, বাংলাদেশ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত শান্তি আলোচনার সমর্থন করেছে।

শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের (sanjay-raut) বক্তব্য অপারেশন সিন্দুরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন। তবে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং স্লিপার সেলের হুমকি মোকাবিলায় সরকারের কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তিনি তুলে ধরেছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উভয় পক্ষের সংযম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Advertisements