আইপিএল ২০২৫-এ দিল্লি ক্যাপিটালস (DC) তাদের প্রথম তিনটি ম্যাচ জিতে দুর্দান্ত শুরু করেছিল। দলটি একটি সুসংহত এবং শক্তিশালী ইউনিটের মতো মাঠে নেমেছিল। কিন্তু রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে তৃতীয় ম্যাচে একটি ঘটনা তাদের সাফল্যের ধারাকে পাল্টে দেয়। এই ম্যাচে দিল্লি হারের মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল। এর নায়ক ছিলেন ফর্মে থাকা কেএল রাহুল। তিনি ৫৩ বলে অপরাজিত ৯৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে তার প্রাক্তন দল আরসিবিকে সহজেই পরাজিত করেন। ম্যাচের পর তিনি “এটা আমার মাঠ” বলে কান্তারা (Kantara) উদযাপন করেন, যা তার প্রাক্তন দলকে উপহাস করার মতো মনে হয়। কিন্তু এই উদযাপনই যেন দিল্লির জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়।
কান্তারা অভিশাপের ছায়া
তিনটি ম্যাচ জয়ের পর আরসিবির বিরুদ্ধে দাপট দেখানো দিল্লির আইপিএল অভিযান হঠাৎই নিম্নমুখী হয়। পরবর্তী ছয়টি ম্যাচে তারা মাত্র দুটি জয় পায়। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এর বিরুদ্ধে পরবর্তী ম্যাচে তারা হেরে যায়। এরপর রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে সুপার ওভারে জয় পায়। গুজরাট টাইটান্স এর বিরুদ্ধে হার পায় । কিন্তু লখনউ সুপার জায়ান্টস বিরুদ্ধে দুর্দান্ত জয়ের পরও দলটি ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। এরপরে আরসিবি এবং কলকাতা নাইট রাইডার্স বিরুদ্ধে টানা দুটি হার তাদের অবস্থানকে আরও নাজুক করে তোলে। কেএল রাহুলের কান্তারা উদযাপন আরসিবির বিরুদ্ধে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। জনপ্রিয় বিশ্বাস অনুসারে, এই উদযাপনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা দল পরাজয়ের মুখ দেখে, যা কেএল রাহুল এবং দিল্লির ক্ষেত্রে সত্যি হয়।
সোমবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে দিল্লি ক্যাপিটালসের ম্যাচ বৃষ্টির কারণে বাতিল হয়। ফলে, হায়দরাবাদ প্লে-অফের দৌড় থেকে ছিটকে যায়। অন্যদিকে দিল্লির পথ কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ তাদের বাকি ৩ ম্যাচের মধ্যে ২টি জিততে হবে। আশুতোষ শর্মা ও ট্রিস্টান স্টাবস ৪১ রান করে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ২০ ওভারে ১৩৩/৭-এ নিয়ে যান। প্যাট কামিন্স তিন উইকেট নিয়ে হায়দরাবাদের হয়ে দারুণ বোলিং করেন। হায়দরাবাদ অধিনায়ক করুণ নায়ার, অভিষেক পোরেল ও ফাফ ডু প্লেসিসকে আউট করে দলকে শক্তিশালী শুরু এনে দেন। হরষাল পটেল অক্ষর পটেলকে আউট করেন, আর জয়দেব উনাদকাট কেএল রাহুলের উইকেট নেন। বিপ্রজ নিগম রান-আউট হন। ইশান মালিঙ্গা আশুতোষ শর্মাকে আউট করেন। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ টস জিতে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
কান্তারা অভিশাপের প্রভাব?
কান্তারা উদযাপনের পর থেকে দিল্লির পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতার অভাব স্পষ্ট। কেএল রাহুলের ব্যক্তিগত ফর্মও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সমর্থকদের মধ্যে এই অভিশাপ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি কেবল কাকতালীয় হতে পারে। দিল্লির হারের পিছনে কৌশলগত ভুল সম্ভবনা বেশি। দিল্লির সামনে এখন চ্যালেঞ্জ হলো এই সংকট কাটিয়ে উঠে প্লে-অফের দৌড়ে ফিরে আসা। তবে এই কান্তারা অভিশাপের গল্প আইপিএল ২০২৫-এর একটি আলোচিত অধ্যায় হয়ে থাকবে।