পহেলগাঁও নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের দেড় ঘণ্টার বৈঠক, সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিশ্ব

পাকিস্তানের অনুরোধে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত হল এক দেড় ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক। আলোচনার মূল কেন্দ্রে ছিল পহেলগাঁও হামলা এবং ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনা। বৈঠক শেষে…

UNSC holds closed-door meeting

পাকিস্তানের অনুরোধে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত হল এক দেড় ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক। আলোচনার মূল কেন্দ্রে ছিল পহেলগাঁও হামলা এবং ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনা। বৈঠক শেষে কোনো বিবৃতি বা ঘোষণা না আসায় আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—এই বৈঠকের আদৌ কোনও তাৎপর্য ছিল কি না।

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্য পাকিস্তান

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে বর্তমানে পাকিস্তান অস্থায়ী সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত, আর চলতি মাসে পরিষদের সভাপতিত্ব করছে গ্রিস। তাদের উদ্যোগেই সোমবারের এই বিশেষ বৈঠকের সূচি নির্ধারিত হয়। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য—আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, চিন ও ফ্রান্স ছাড়াও অন্যান্য অস্থায়ী সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন আলোচনায়।

   

ভারতের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন আগেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ‘‘এ ধরনের বৈঠক থেকে বিশেষ কিছু আশা করা উচিত নয়।’’ তাঁর মতে, যদি কোনও পক্ষ বারবার ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে সেখানে গঠনমূলক ফলাফল পাওয়া দুরূহ।

পহেলগাঁওকে কাশ্মীর ইস্যুর সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা UNSC holds closed-door meeting

এই মন্তব্যের তাৎপর্য পরিষ্কার হয় বৈঠকের পর। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান এই বৈঠকে পহেলগাঁও হামলাকে সরাসরি কাশ্মীর ইস্যুর সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের স্থায়ী প্রতিনিধি অসীম ইফতিখার আহমেদ একাধিকবার আলোচনাকে কাশ্মীরের স্বশাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দিকেই নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি ভারতের সেনাবাহিনীর কার্যকলাপকে ‘আগ্রাসী’ এবং ‘অমানবিক’ বলে অভিহিত করেন।

পাকিস্তান আরও অভিযোগ তোলে ভারতের সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করার সম্ভাবনা নিয়ে। তাদের মতে, এটি আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘনের সামিল এবং একটি বিপজ্জনক নজির। তবে বৈঠকে উপস্থিত কোনও দেশ এই বিষয়ে প্রকাশ্যে পাকিস্তানের বক্তব্যকে সমর্থন করেনি, যা ভারতের কূটনৈতিক সফলতা হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

হামলার পিছনে পাকিস্তান মদতপুষ্ট গোষ্ঠী

ভারতের পক্ষ থেকে এই বৈঠকে বিশেষ কোনও কূটনৈতিক প্রচার না চালালেও, তারা পূর্বেই স্পষ্ট করে দেয় যে এই হামলার পিছনে পাকিস্তান মদতপুষ্ট গোষ্ঠীগুলোর হাত রয়েছে। পহেলগাঁও হামলায় একাধিক নিরীহ পর্যটক এবং নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন, যার জন্য ভারতের অভ্যন্তরে পাকিস্তানবিরোধী মনোভাব প্রবল হয়ে ওঠে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের এই বৈঠকের পরেও যেহেতু কোনো যৌথ বিবৃতি বা মতামত প্রকাশিত হয়নি, তাই অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এটি ছিল মূলত পাকিস্তানের কূটনৈতিক প্রচারের একটি অংশ, যার মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের বিরুদ্ধে মনোভাব গড়ার চেষ্টা করেছে। তবে এ বৈঠকে সেই উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি বলেই অনুমান করা হচ্ছে।

সমগ্র পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, পহেলগাঁও ইস্যুতে রাষ্ট্রপুঞ্জে আয়োজিত বৈঠক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে পারেনি। বরং এই বৈঠক আরও একবার প্রমাণ করল, ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে রাষ্ট্রপুঞ্জের ভূমিকায় সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের বৈঠক আদৌ কোনো বাস্তব সমাধান আনতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

 World: UNSC holds closed-door meeting requested by Pakistan on Pahalgam attack and India-Pakistan tensions. No statement issued, raising questions about its significance. Pakistan attempts to link attack to Kashmir issue.

Advertisements