দাড়ি কাটতে নারাজ স্বামীকে ছেড়ে দেওরের ঘরে মৌলানার স্ত্রী!

উত্তরপ্রদেশের মীরাট (Meerut )জেলায় ঘটল এক চাঞ্চল্যকর এবং সামাজিক বিতর্ককে উসকে দেওয়া ঘটনা। এক মৌলানার দাড়ি না কাটার জেদেই তার স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে পালিয়ে গেলেন…

Meerut Woman Elopes With Brother-in-Law After Maulana Husband Refuses to Shave Beard

উত্তরপ্রদেশের মীরাট (Meerut )জেলায় ঘটল এক চাঞ্চল্যকর এবং সামাজিক বিতর্ককে উসকে দেওয়া ঘটনা। এক মৌলানার দাড়ি না কাটার জেদেই তার স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে পালিয়ে গেলেন দেওরের সঙ্গে। শুধু তাই নয়, তিনি স্বামী মৌলানার কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করায় পুরো ঘটনাটি আরও বিতর্কিত হয়ে উঠেছে।

ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন মীরাটের বাসিন্দা মৌলানা শাকির। তিনি জানান, তার স্ত্রী বহুদিন ধরেই তার দাড়ি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। স্ত্রীর দাবি ছিল, তিনি যেন দাড়ি কেটে ফেলেন। কিন্তু একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও আলেম হিসেবে মৌলানা শাকির দাড়ি কাটা অনুচিত বলে মনে করেন এবং স্ত্রীর অনুরোধে সাড়া দেননি।

   

“আমার বেগম প্রায়ই আমার দাড়ি নিয়ে তর্ক করত। বলত, দাড়ি কেটে ফেল না কেন? আমি বলেছি, এটা আমার ধর্মীয় পরিচয় ও বিশ্বাসের অংশ। এটা আমি ছাড়তে পারব না,” বলেন মৌলানা শাকির।

কিছুদিন আগে, হঠাৎ করেই তার স্ত্রী নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবারের সবাই খোঁজাখুঁজি করলেও পরে জানা যায়, তিনি স্বামীর ছোট ভাই অর্থাৎ দেওরের সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনায় শাকির পরিবার ও প্রতিবেশীরা রীতিমতো হতবাক।

“আমার স্ত্রী এখন আমার ছোট ভাইয়ের সঙ্গে পালিয়ে গেছে। আমি কখনো ভাবিনি সে এমন কাজ করতে পারে। ধর্ম ও পরিবারকে অপমান করে সে নিজের খেয়ালে চলে গেছে,” ক্ষুব্ধ সুরে জানান মৌলানা।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। মৌলানার অভিযোগ, তার স্ত্রী এখন তার কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করছে। এই দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অবৈধ বলে তিনি মনে করেন। তিনি এ বিষয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন।

এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে নানান প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন, ধর্মীয় অনুশাসনের জন্য একজন নারীকে স্বাধীনতা ও পছন্দের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। অন্যদিকে কেউ বলছেন, ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য একজনের প্রতি এহেন প্রতারণা ও সংসার ভাঙা অনুচিত।
স্থানীয় সমাজকর্মী ও মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধরণের ঘটনায় পারিবারিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে ওঠে। কেউ যদি দাম্পত্য জীবনে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়া না রাখতে পারেন, তাহলে এমন পরিণতি অনিবার্য।

মীরাট পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৌলানা শাকিরের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। তার স্ত্রী ও ছোট ভাইয়ের খোঁজ চলছে। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় পুলিশ সর্তকতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছে।

এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, ব্যক্তিগত বিশ্বাস বনাম পারিবারিক সম্পর্ক – কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? একজন মানুষের ধর্মীয় পরিচয় যদি তার প্রিয়জনদের দূরে ঠেলে দেয়, তাহলে সেটা কতটা গ্রহণযোগ্য? আবার, বিশ্বাসের নামে কি পারিবারিক বন্ধনকে ভেঙে দেওয়া ন্যায্য?
সময় বলবে এই পরিবারের ভবিষ্যৎ কোনদিকে মোড় নেয়, তবে আপাতত এই ঘটনার জেরে মীরাটে চলছে চাঞ্চল্যের পাশাপাশি নানা বিতর্ক।