বড়বাজার হোটেল দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ঘোষণা প্রধান মন্ত্রীর

কলকাতার বড়বাজার (burrabazar) এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক হোটেল দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন। এই দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজনের…

burrabazar fire modi announces compensation

কলকাতার বড়বাজার (burrabazar) এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক হোটেল দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন। এই দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু এবং অনেকে আহত হয়েছেন, যা শহরবাসীর মধ্যে ব্যাপক শোকের সৃষ্টি করেছে। প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

হোটেলে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ড (burrabazar)

গত সপ্তাহে বড়বাজারের (burrabazar) একটি জনপ্রিয় হোটেলে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে এই আগুনের সূত্রপাত হয়, যা দ্রুত পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। হোটেলটিতে থাকা অতিথি এবং কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, এবং অনেকে ধোঁয়ায় আটকে পড়েন। দমকল বাহিনী তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকার্য শুরু করে, কিন্তু ততক্ষণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয় এবং অনেকে গুরুতরভাবে আহত হন।

   

এই দুর্ঘটনায় মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে, এবং প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, এবং তাদের চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর শোকবার্তা

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনার পর তাঁর অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে একটি শোকবার্তা পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, “বড়বাজারের হো(burrabazar) টেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানি এবং আহতদের খবরে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। আমার চিন্তাভাবনা এবং প্রার্থনা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই কঠিন সময়ে সম্পূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”

পহেলগাঁও হামলা পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আজ ‘সুপার ক্যাবিনেট’ বৈঠক, পৌরহিত্য করবেন মোদী

ক্ষতিপূরণের ঘোষণা

ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, মৃতদের পরিবারগুলি প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা পাবেন। এছাড়া, গুরুতরভাবে আহত ব্যক্তিরা ৫০,০০০ টাকা এবং সামান্য আহতরা ২৫,০০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন। এই তহবিল দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য সরকারের ভূমিকা

রাজ্য সরকারও এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আলাদা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন উপলক্ষে ব্যস্ত থাকার কারণে সেখান থেকেই এই ঘোষণা করেছেন এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই দুর্ঘটনা আমাদের সকলকে মর্মাহত করেছে। আমরা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রাজ্য সরকার ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে।”

হোটেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন

এই ঘটনায় হোটেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে হোটেলটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না, এবং জরুরি প্রস্থানের পথগুলি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। তদন্ত কমিটি এই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখছে এবং দায়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে।

স্থানীয় সংগঠন এবং স্বেচ্ছাসেবী দলগুলি ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। তারা খাদ্য, পানীয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে। এছাড়া, কিছু সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য আর্থিক সহায়তা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে।

এই দুর্ঘটনা শহরের (burrabazar) পুরনো ভবনগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কলকাতার অনেক পুরনো হোটেল এবং বাণিজ্যিক ভবনে আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন এই ধরনের ভবনগুলির নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী এই ঘটনার তদন্ত ত্বরান্বিত করার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এই ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, তার জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের প্রথম দায়িত্ব।”
বড়বাজারের (burrabazar) এই দুর্ঘটনা কলকাতার বাসিন্দাদের মনে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। তবে, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের তৎপরতা এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্তরা আশা করছেন, তারা এই দুঃখজনক পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।