জাতীয় রাজধানী দিল্লির রাস্তাঘাটে গবাদি পশু, বিশেষ করে গরু ঘুরে বেড়ানোর সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন (rekha)। সরকার গো-আশ্রয়গুলির (গৌশালা) একটি বিস্তৃত সমীক্ষা চালাবে এবং এই সুবিধাগুলির মসৃণ পরিচালনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে।
রেখা গুপ্তা ঘোষণা করেন (rekha)
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা (rekha) বাওয়ানার গ্রামীণ গৌশালায় একটি জনসভায় এই পদক্ষেপগুলির ঘোষণা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিনি, তাঁর মন্ত্রীসভার সদস্যরা এবং বিজেপি বিধায়করা গরুকে ‘গৌ মাতা’ হিসেবে সম্মান করেন।
মুখ্যমন্ত্রী গুপ্তা (rekha) বলেন, “রাস্তায় গরুদের দুর্দশা দেখে আমাদের হৃদয়ে বড় আঘাত লাগে। তারা রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়, কখনো দুর্ঘটনার শিকার হয়। এর জন্য তারাই দায়ী, যারা গরুদের দুধ দোয়ানোর পর খাবারের জন্য তাদের রাস্তায় ছেড়ে দেয়।”
তিনি আরও জানান, দিল্লি সরকার গো-আশ্রয়গুলির অবস্থা পর্যালোচনা করতে এবং তাদের পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক ও প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গো-আশ্রয় জরিপের উদ্দেশ্য।
ট্রাফিক সমস্যা
দিল্লির রাস্তায় গরুদের অবাধ বিচরণ শুধু ট্রাফিক সমস্যাই সৃষ্টি করে না, বরং এই প্রাণীগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয় এবং খাদ্য ও জলের অভাবে কষ্ট পায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দিল্লির গো-আশ্রয়গুলির একটি সমীক্ষা করা হবে। এই সমীক্ষার মাধ্যমে গৌশালাগুলির অবকাঠামো, গরুদের সংখ্যা, তাদের স্বাস্থ্য পরিচর্যা, খাদ্য সরবরাহ এবং পরিচালন ব্যবস্থার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী (rekha) জানিয়েছেন, সমীক্ষার তথ্যের ভিত্তিতে সরকার একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে, যার মাধ্যমে গো-আশ্রয়গুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। এই সহায়তার মাধ্যমে গৌশালাগুলির পরিচালনা ব্যয়, গরুদের খাদ্য, চিকিৎসা এবং আশ্রয়ের মান উন্নত করা হবে। তিনি বলেন, “আমরা চাই, কোনো গরু যেন রাস্তায় ঘুরে না বেড়ায়। প্রতিটি গরুকে উপযুক্ত আশ্রয়, খাদ্য এবং পরিচর্যা দেওয়া হবে।”
গৌশালাগুলির বর্তমান চ্যালেঞ্জ
দিল্লিতে বর্তমানে বেশ কয়েকটি গো-আশ্রয় রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই আর্থিক সংকট এবং অবকাঠামোগত সমস্যার সম্মুখীন। অনেক গৌশালায় পর্যাপ্ত জায়গা, খাদ্য বা চিকিৎসা সুবিধার অভাব রয়েছে। এছাড়া, গরুদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত কর্মী নিয়োগও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে, অনেক গরু রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় এবং দুর্ঘটনা বা অপুষ্টির শিকার হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দিল্লির বাওয়ানা, নজফগড় এবং অন্যান্য গ্রামীণ এলাকায় অবস্থিত গৌশালাগুলিতে শত শত গরু রাখা হয়, কিন্তু তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল নেই। মুখ্যমন্ত্রী গুপ্তা (rekha) জানিয়েছেন, সরকার এই গৌশালাগুলির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করবে এবং তাদের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, “আমরা গৌশালাগুলির পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক করব এবং তাদের প্রয়োজনীয়তা বুঝে সহায়তা প্রদান করব।”
পাকিস্তান যে যুদ্ধবিমান নিয়ে গর্ব করে তা চিনের ‘লোকাল আইটেম’, এতে বাচ্চারাও ভয় পায় না
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
মুখ্যমন্ত্রী গুপ্তা (rekha) তাঁর বক্তৃতায় গরুর সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, “গৌ মাতা আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর প্রতি অবহেলা আমাদের সমাজের জন্য লজ্জার বিষয়।” তিনি আরও জানান, বিজেপি সরকার গরুর সুরক্ষা ও কল্যাণের জন্য সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার শুধু গরুদের দুর্দশা কমানোর চেষ্টাই করছে না, বরং জনগণের মধ্যে গরু সংরক্ষণের প্রতি সচেতনতা বাড়াতে চায়।
জনগণের প্রতিক্রিয়া
মুখ্যমন্ত্রীর (rekha) এই ঘোষণা স্থানীয় বাসিন্দা এবং গৌশালা পরিচালকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বাওয়ানার এক গৌশালা পরিচালক বলেন, “আর্থিক সহায়তা পেলে আমরা আরও গরুকে আশ্রয় দিতে পারব এবং তাদের জন্য ভালো পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে পারব।” তবে, কিছু বাসিন্দা মনে করেন, শুধু গৌশালাগুলিকে সহায়তা দেওয়াই যথেষ্ট নয়। রাস্তায় গরু ছেড়ে দেওয়া বন্ধ করতে গবাদি পশুর মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
দিল্লি সরকার জানিয়েছে, জরিপের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে এবং এর ফলাফলের ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া, সরকার গৌশালাগুলির জন্য একটি নির্দিষ্ট তহবিল গঠনের পরিকল্পনা করছে, যা দীর্ঘমেয়াদে তাদের পরিচালনা নিশ্চিত করবে। মুখ্যমন্ত্রী গুপ্তা (rekha) বলেন, “আমরা চাই, দিল্লির কোনো গরু যেন রাস্তায় কষ্ট না পায়।
এটি আমাদের নৈতিক ও সাংস্কৃতিক দায়িত্ব।” এই উদ্যোগের মাধ্যমে দিল্লি সরকার শুধু গবাদি পশুর সমস্যা সমাধানই করছে না, বরং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে। তবে, এই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করবে সঠিক পরিকল্পনা, সমন্বয় এবং জনসচেতনতার উপর।