নয়াদিল্লি: ২৬ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মীর চাকরি বাতিল মামলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আর্জিতে আংশিক সাড়া দিল সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাঁরা ‘দাগি’ বা ‘অযোগ্য’ হিসাবে চিহ্নিত নন, তাঁরা আপাতত স্কুলে যেতে পারবেন ও কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। (SSC case Supreme Court verdict)
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্য সরকারকে অবশ্যই চলতি বছরের মধ্যেই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। এ বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে আগামী ৩১ মে। এছাড়া নির্দেশ, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
আদালতের হুঁশিয়ারি, এই সময়সীমা মানা না হলে, পরবর্তী শুনানিতে বর্তমান নির্দেশ প্রত্যাহার করে নতুন আদেশ জারি করা হতে পারে।
পর্ষদের যুক্তি ও শীর্ষ আদালতের অবস্থান SSC case Supreme Court verdict
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে জানায়, এসএসসি কেলেঙ্কারির জেরে প্যানেল বাতিল হওয়ায় রাজ্যের ৯,৪৮৭টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৬,৯৫২টি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অনেক স্কুলে পড়ানোর মতো শিক্ষক নেই।
এই পরিস্থিতিতে যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন বা ‘দাগি’ নন, তাঁদের আপাতত শিক্ষাকাজ চালিয়ে যেতে দেওয়ার আর্জি জানায় পর্ষদ। বৃহস্পতিবার সেই আর্জিতেই সাময়িক ছাড় দিয়েছে আদালত।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য নিয়োজিত যাঁরা ‘টেন্টেড’ নন, তাঁরা আপাতত স্কুলে যেতে পারবেন এবং শিক্ষাদান চালিয়ে যেতে পারবেন।
পটভূমি SSC case Supreme Court verdict
গত ৩ এপ্রিল এসএসসি দুর্নীতি মামলায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ রায় দেয়, যেখানে ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল সম্পূর্ণরূপে বাতিল করা হয়। আদালত জানায়, প্যানেল প্রস্তুতিতে জালিয়াতি ও দুর্নীতির যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। সেই রায়ে ২৫,৭৩৫ জনের চাকরি বাতিল হয় এবং তাঁদের মধ্যে যাঁরা ‘অযোগ্য’ বা ভুয়ো প্রার্থী, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই রায়ের পর শিক্ষাঙ্গনে বিপর্যয় নেমে আসে বলে দাবি করে পর্ষদ। রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়ে শিক্ষক স্বল্পতার বাস্তব ছবি তুলে ধরা হয়। সেই আবেদন মেনে ‘অযোগ্য’ নন এমনদের জন্য আপাতত স্বস্তির পথ খুলে দিল শীর্ষ আদালত।
আসন্ন নির্দেশনা SSC case Supreme Court verdict
৩১ মে-র মধ্যে: রাজ্য ও এসএসসিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও হলফনামা জমা দিতে হবে।
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে: নিয়োগ পরীক্ষা ও সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
নির্দেশ কার্যকর না হলে: পরবর্তী শুনানিতে শীর্ষ আদালত এই ছাড় প্রত্যাহার করতে পারে।
এই নির্দেশে যেমন রাজ্য শিক্ষা দফতর সাময়িক স্বস্তি পেল, তেমনই বহু নির্দোষ চাকরিপ্রার্থী আবার স্কুলে ফিরতে পারবেন—যদিও চূড়ান্ত স্থায়ী সমাধানের জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে নতুন, স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার দিকে।