দার্জিলিংয়ের(Darjeeling) মেগিটার সংলগ্ন বিস্তীর্ণ বনভূমি এক ভয়াবহ আগুনের কবলে পড়ে গেছে, যার ফলে বন্যপ্রাণী এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুকনো আবহাওয়ার কারণে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো কাইলাজয় জঙ্গলে তা আছড়ে পড়ে। এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে স্থানীয় মানুষ এবং বন বিভাগের কর্তৃপক্ষ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দার্জিলিংয়ের পুলবাজার-বিজনবাড়ি ব্লকের মেগিটার এলাকায় সোমবার রাতে কাইলাজয় জঙ্গলে আগুনের সূত্রপাত ঘটে এবং তা দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
আগুনের সূত্রপাতের কারণ এখনও নিশ্চিত করা যায়নি, তবে শুকনো আবহাওয়ার ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানানো হচ্ছে। পুলবাজার এবং বিজনবাড়ি এলাকার দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন, কিন্তু তীব্র বাতাস এবং শুকনো পাতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বিশেষ করে যখন দার্জিলিংয়ের গ্রীষ্মকালীন পর্যটন মরসুমের শুরু হয়েছে, তখন পর্যটন শিল্পের জন্য এক বড় বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দার্জিলিংয়ে পর্যটকদের আগমন শুরু হয়েছে। তবে মেগিটার মত জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রের কাছে এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং পরিবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া না গেলেও, বন্যপ্রাণী এবং বনভূমির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, আগুনে অনেক বন্যপ্রাণী নিহত বা আহত হতে পারে। এছাড়া বহু পুরনো এবং বড় গাছেরও ক্ষতি হয়েছে, যা বহু বছর পর পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।
পুলবাজার-বিজনবাড়ি দমকলকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছেন, তবে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠছে। শুকনো গাছপালা, ডালপালা এবং বড় গাছের আগুনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। হাওয়ার গতি বেশি থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও, দমকলকর্মীরা নিরলসভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন আগুনটি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার।
পুলিশও ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে এবং পরিস্থিতি মনিটর করছে। যদিও আগুন কিছুটা কমেছে, তবে এখনও পুরোপুরি নিভে যায়নি। কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।
এদিকে আগুনের দ্রুত বিস্তার দেখে অনেকেই সন্দেহ করছেন যে এটি হয়তো দুর্ঘটনাজনিত নয়। আগুনের সুত্রপাত কোথা থেকে হলো এবং কেন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে শুকনো আবহাওয়ার কারণে আগুনের বিস্তার দ্রুত হতে পারে, কিন্তু এ ধরনের আগুন কি কোনোভাবেই পরিকল্পিত হতে পারে? স্থানীয় পুলিশ এবং বনদপ্তর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
দার্জিলিংয়ের মেগিটার বনভূমিতে এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণীর ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও দমকল কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন, তবে এই বিপর্যয়ের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পরিবেশ এবং পর্যটন শিল্পে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। আগুনের কারণ জানতে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রশাসনকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।