Murshidabad: আজব কাণ্ড, বাংলাদেশি নাগরিক রেশন তোলেন ভারত থেকে! কীভাবে সম্ভব?

মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি এলাকার ঘোষপাড়া থেকে বেরিয়ে এসেছে এক বিস্ফোরক অভিযোগ। ওই এলাকার বাসিন্দা বুলবুল আহমেদ বকুল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি…

Person from Murshidabad Found to Be a Citizen of Both India and Bangladesh

short-samachar

মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি এলাকার ঘোষপাড়া থেকে বেরিয়ে এসেছে এক বিস্ফোরক অভিযোগ। ওই এলাকার বাসিন্দা বুলবুল আহমেদ বকুল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও ভারতে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন এবং ভারতীয় ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, রেশন কার্ড, খাদ্য সুরক্ষা কার্ডসহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধা গ্রহণ করছেন। এই ঘটনাটি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে এবং নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত বিষয়টি পৌঁছেছে।

   

এছাড়া, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন এবং বলেছেন যে, সম্ভবত এখানকার ভোটার তালিকা থেকে বকুলের নাম মুছে দেওয়া হয়নি, কারণ অনেক ক্ষেত্রে ভুল হয়ে থাকে। কিন্তু যে রকম অভিযোগ উঠেছে, তা নতুনভাবে সবার নজরে এসেছে।

এটি একটি গভীর উদ্বেগজনক ঘটনা, কারণ একই ব্যক্তি দুই দেশের নাগরিকত্ব থাকার বিষয়টি অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বুলবুল আহমেদ বকুল বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকায় বাস করছেন, কিন্তু তিনি ভারতে ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড এবং রেশন কার্ডও চালাচ্ছেন। এমনকি তাঁর নামে নিয়মিত রেশন তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মুর্শিদাবাদে এমন একটি ঘটনা সামনে আসায় এলাকার মানুষ ও প্রশাসনের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

তার পরিবার জানায়, বকুল ২০১৯ সালে ভারতের লোকসভা ভোট দিয়ে গিয়েছিলেন এবং ২০২০ সালে তাঁর বাবার নামে জমি রেজিস্ট্রি করানো হয়েছিল। কিন্তু সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, একই ব্যক্তি দুই দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে কীভাবে ভারতে সরকারি সুবিধা নিচ্ছেন, তা স্পষ্ট নয়।

বুলবুল আহমেদ বকুলের বাবা জানান, তাঁর ছেলে বাংলাদেশে বিয়ে করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। কিন্তু সেখানে বসবাস করার পরও তাঁর কাছে ভারতে নাগরিকত্বের সকল প্রমাণপত্র রয়েছে। এতদিন পর্যন্ত কীভাবে তিনি ভারতে রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড এবং প্যান কার্ড নিয়েছিলেন, তা নিয়ে কোনো পরিষ্কার উত্তর নেই। বিষয়টি প্রশাসনকে তদন্তের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে।

তৃণমূল বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক এই প্রসঙ্গে বলেন, “হয়ত এখানকার ভোটার তালিকা থেকে বকুলের নাম কাটানো হয়নি। এরকম ভুল অনেক জায়গায় হয়ে থাকে।” তিনি আরও জানান, “এই ধরনের ভুলের কারণে অনেক মানুষ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, যদিও সচেতনতার অভাব রয়েছে।” তাঁর মতে, সরকারি সুবিধা ঠিকভাবে উপভোগ করতে হলে প্রতিটি নাগরিকের সঠিক তথ্য নিশ্চিত করা জরুরি।

এই ঘটনা সারা রাজ্যেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে। তারা অভিযোগ তুলছে যে, ভোটার তালিকায় ভুল এবং অবৈধভাবে মানুষের নাম থাকার কারণে অনেকেই অপব্যবহার করে সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন। এদিকে, নির্বাচন কমিশনও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

প্রশাসন এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ একটি নাগরিক যে দুই দেশে ভোটার কার্ড নিয়ে রাষ্ট্রীয় সুবিধা গ্রহণ করছে, তা দেশের নিরাপত্তা এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য এক বড় প্রশ্নবোধক সংকেত।

বাংলাদেশি নাগরিকের ভারতে ভোটার কার্ড এবং অন্যান্য সরকারি সুবিধা পাওয়া একটি বড় আইনগত এবং প্রশাসনিক প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। এই ধরনের ঘটনা, যেখানে একজন ব্যক্তি একাধিক দেশের নাগরিকত্ব এবং ভোটার কার্ড ধারণ করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন, তা দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার উপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তাই বিষয়টি যথাযথভাবে তদন্ত করা এবং এর দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।