পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা আগে আত্মঘাতী বাঁকুড়ার জয়পুর থানার কারকবেড়িয়া গ্রামের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বর্ষা দে। স্থানীয় টানাদিঘি হাইস্কুলের এই ছাত্রী সোমবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসেছিলেন। কিন্তু সকালে স্নানের জন্য মায়ের ডাকার আগেই নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই ছাত্রী। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বর্ষার উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফল করার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ছিল। টেস্ট পরীক্ষায় ভালো ফল করলেও, পরীক্ষা যত এগিয়ে আসছিল, ততই তাঁর মধ্যে আত্মবিশ্বাস কমতে শুরু করে। মাকে বারবার সে কথা জানিয়েছিল বর্ষা। বাড়ির লোকজন তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু রবিবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর কাকা জানান, “বর্ষার মা ফোন করে বলছিল, বর্ষার শরীর খারাপ। আমি গিয়ে দেখি, ও বলছে, ‘কাকা, আমাকে যেন কেউ ডাকছে, ভীষণ উচাটন লাগছে।’” মামাও ফোন পেয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। বর্ষা তখন বমি করছে বলে জানায়। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু সোমবার সকালে ঘটে যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা।
সোমবার ভোরে উঠে পড়তে বসেছিল বর্ষা। মা যখন স্নানের জন্য ডাকতে যান, তখন দেখেন মেয়ে ঝুলছে। দ্রুত উদ্ধার করে কোতুলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরীক্ষার মানসিক চাপই এই ঘটনার কারণ বলে দাবি পরিবারের।
বর্ষার পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল রাজগ্রাম হাইস্কুলে। পড়াশোনায় মেধাবী এই ছাত্রীর এমন পরিণতিতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া। স্থানীয়রা বলছেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার চাপ কমাতে সমাজ ও শিক্ষাব্যবস্থার আরও সচেতনতা দরকার। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।