ইম্ফল: আগামী ৮ মার্চ থেকে মণিপুরের রাস্তায় বিনা বাধায় চলাচল করতে পারবেন সাধারণ মানুষ।
উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি সাফ জানিয়েছে, কেউ যদি মণিপুরের সড়কে সাধারণ মানুষকে চলাচলে বাধা দেয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
আজ দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মণিপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে একটি পর্যালোচনা বৈঠক হয়। মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির পর এটি ছিল প্রথম নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনা। বৈঠকে রাজ্যের হিংসা পরিস্থিতি আলোচনার পাশাপাশি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মণিপুরের রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লা এবং অন্যান্য সরকারি আধিকারিকেরা।
মণিপুরে গত দেড় বছর ধরে জাতিগত হিংস চলছে। ২০২৩ সালের মে মাসে মৈতৈ সম্প্রদায়ের তফশিলি (আদিবাসী) মর্যাদা দাবি নিয়ে রাজ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এরপর থেকেই মৈতৈ ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বেড়ে যায়। এখনো সেই হিংসা থামেনি৷
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, “মণিপুরকে মাদকমুক্ত করতে হলে, মাদক চক্রের সমস্ত নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলতে হবে।”
রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লা ২০ ফেব্রুয়ারি এক আলটিমেটাম দিয়েছিলেন, লুট হওয়া অবৈধ অস্ত্র ফেরত দিতে হবে। এর সাত দিনের মধ্যে ৩০০টিরও বেশি অস্ত্র জমা পড়ে৷ যার মধ্যে ২৪৬টি অস্ত্র জমা দেয় মৈতৈ গোষ্ঠী আরাম্বাই তেংগোল।
শুক্রবার, রাজ্যপাল সোপর্দের সময়সীমা আরও একদিন বাড়িয়ে ৬ মার্চ পর্যন্ত করেছেন।
মণিপুরে হিংসার প্রথম দিকে বহু অস্ত্র পুলিশ স্টেশন থেকে লুট হয়ে যায়। এখন কেন্দ্র সরকার সেগুলো উদ্ধার করার জন্য কাজ করছে।
মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। এন. বিরেন সিং এর পদত্যাগের পর রাজ্য সরকার স্থগিত হয়ে গিয়েছে এবং এখন কেন্দ্র সরকার রাজ্য পরিচালনা করছে।
রাজ্যে হিংসার সূত্রপাত হয়েছিল ৩ মে, ২০২৩ সালে৷ সেই সম ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’ নামে এক প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়৷ মৈতৈ সম্প্রদায়ের এসটি মর্যাদা দাবি নিয়ে ওই মিছিলটি করা হয়েছিল। এরপর থেকেই রাজ্যে অস্থিরতা বেড়ে যায়।
সরকারের তরফ থেকে এখন সড়কে চলাচল নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অস্ত্র সোপর্দের পাশাপাশি মাদক নির্মূলের কাজও চলছে। তবে, রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে কিছুটা সময় লাগবে বলেই মনে করছে সরকার।