কাকুর অডিয়োতে গলা পার্থ, অভিষেক, মানিকের! সুজয়ের কাছে ১৫ কোটি টাকা চেয়েছিলেন কে?

কলকাতা: স্কুলে বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য৷ কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দাবি, ২০১৭ সালে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র  কাছ থেকে…

কলকাতা: স্কুলে বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য৷ কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার দাবি, ২০১৭ সালে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র  কাছ থেকে ১৫ কোটি টাকা চেয়েছিলেন জনৈক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে, কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও কয়েকজন ওই সময় বেহালায় ‘কাকু’র বাড়িতে গিয়ে ঘুষের টাকা দেন। সিবিআইয়ের হাতে একটি অডিয়ো ক্লিপ এসেছে, যেখানে বেআইনি নিয়োগের চক্রের কাজকর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শোনা গিয়েছে। ওই অডিয়োতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্যের নামও উঠে এসেছে।

   

সিবিআই জানিয়েছে, ওই অডিয়ো ক্লিপে কীভাবে বেআইনি নিয়োগ চলত এবং এর সঙ্গে কারা যুক্ত ছিল, সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া, সিবিআইয়ের দাবি, এই নিয়োগ চক্রে আরও অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত ছিলেন।

২০১৭ সালে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের সঙ্গে কথোপকথন রেকর্ড করেছিলেন কুন্তল ঘোষের বেতনভুক্ত কর্মী অরবিন্দ রায়বর্মণ। সেই অডিয়ো ক্লিপটি পরে ল্যাপটপে সংরক্ষণ করা হয়, যা সিবিআইয়ের হাতে আসে।

চার্জশিটে বলা হয়েছে, ওই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করার জন্য সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্সেস ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, সুজয়কৃষ্ণ, কুন্তল এবং শান্তনুর কণ্ঠস্বরের নমুনাও পরীক্ষার জন্য দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে। সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, কিছু সাক্ষী ইতিমধ্যেই অডিয়োর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অডিয়ো ক্লিপটি এক ঘণ্টারও বেশি সময়ের, যেখানে বেআইনি নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নাম উঠে এসেছে। চার্জশিটে বলা হয়েছে, অডিয়োতে জনৈক ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের’ নাম শোনা গিয়েছে, তবে তাঁর পরিচয় সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। সিবিআই শুধু নামটুকু উল্লেখ করেছে, কিন্তু এ বিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য দেয়নি। সিবিআইয়ের অভিযোগ, ওই সময় কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আরও দুই ব্যক্তি, অরবিন্দ রায়বর্মণ এবং সুরজিৎ চন্দ উপস্থিত ছিলেন, যাঁদের গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, সিবিআই চার্জশিটে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম ‘প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী’ হিসেবে, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম ‘লিপ্‌স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এর চিফ অপারেটিং অফিসার হিসেবে উল্লেখ করেছে। শান্তনু ও সুজয়কৃষ্ণকে তৃণমূল কংগ্রেসের (যুবা) সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচয় নিয়ে সিবিআই কোনও বিস্তারিত তথ্য দেয়নি।

এই নতুন তথ্যের মাধ্যমে সিবিআই আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, অডিয়ো ক্লিপে কীভাবে বেআইনি নিয়োগ চলত এবং কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি এতে জড়িত ছিল, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ছিল। এখন সিবিআই তদন্ত আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।