কলকাতা: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন৷ তার আগে ডাক্তারদের জন্য বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ইন্টার্ন, হাউজস্টাফ, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিদের ১০ হাজার টাকা বেতন বাড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন তিনি। পাশাপাশি সর্বস্তরের সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন ১৫ হাজার টাকা করে বাড়ানো হবে বলেও জানালেন তিনি৷
পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দফতরের ‘চিকিৎসার আরেক নাম সেবা’ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিকিৎসকদের জন্য এই ঘোষণাটি করেন৷ কলকাতার ধনধান্য অডিটোরিয়াম থেকে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইন্টার্ন, হাউজস্টাফ এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিদের বেতন ১০ হাজার টাকা বাড়ানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি, রাজ্য সরকার সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন ১৫ হাজার টাকা বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে, ডিপ্লোমাধারী সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন ৬৫ হাজার থেকে বেড়ে ৮০ হাজার, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন ৭০ হাজার থেকে বেড়ে ৮৫ হাজার এবং পোস্ট ডক্টরেট সিনিয়র রেসিডেন্টদের বেতন ৭৫ হাজার থেকে বেড়ে ১ লক্ষ টাকা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “চিকিৎসকরা আমাদের সমাজের অমূল্য রত্ন। তাঁদের পরিশ্রম ও অবদান মূল্যায়িত হওয়া উচিত, এবং এটাই রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য।”
এই ঘোষণা চিকিৎসক মহলে স্বাগত জানানো হয়েছে, এবং রাজ্য সরকারের প্রতি তাদের আস্থা আরও দৃঢ় করেছে।
কিছুদিন আগেই স্বাস্থ্য ভবনের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, সরকারি চিকিৎসকরা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। পাশাপাশি, এও বলা হয় যে, প্রতিটি চিকিৎসককে সপ্তাহে ন্যূনতম ৬ দিন এবং ৪২ ঘণ্টা ডিউটি করতে হবে। চিকিৎসকরা কর্মস্থল থেকে ২০ কিলোমিটারের বাইরে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছিল। প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে হলে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ নিতে হবে ডিরেক্টর অব হেলথ সার্ভিস বা ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশন থেকে।
তবে আজ, কলকাতায় আয়োজিত চিকিৎসকদের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তে বড় পরিবর্তন আনেন। তিনি ঘোষণা করেন, রাজ্য সরকার ২০ কিলোমিটার প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সীমা বাড়িয়ে ৩০ কিলোমিটার করা হবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সিনিয়র ডাক্তারদের আমি অনুরোধ করব, দয়া করে সব দায়িত্ব জুনিয়রদের ওপর ছেড়ে দেবেন না। অন্তত আট ঘণ্টা সরকারি পরিষেবা দিন, তারপরে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করুন—এতে আমার কোনও আপত্তি নেই। ২০ কিলোমিটার সীমাকে ৩০ কিলোমিটার করে দিলাম। কারণ, কলকাতার ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে অনেক হাসপাতাল রয়েছে। তবে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার সময় প্লিজ অন্য কোথাও যাবেন না। দরকার হলে হাসপাতালেই ডাকুন। আমাদের পরিকাঠামো রয়েছে, সেখানে যা করার করতে পারেন।”
রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এই বড় পরিবর্তন, বিশেষত আরজি করের ঘটনার পর চিকিৎসকদের আন্দোলনের আবহে, বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।