প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে (Indian National Congress) নিয়ে কটাক্ষের জেরে রাজ্য বিধানসভায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। রাজস্থান বিধানসভায় শুক্রবার এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। ওই কটাক্ষের পর সাসপেন্ড হতে হয়েছে ৬ কংগ্রেস বিধায়ককে। তারা দিনভর ওয়েলে থাকেন এবং রাতে সেখানেই ঘুমোতে বাধ্য হন।
ঘটনা শুরু হয় ‘কোয়েশ্চেন আওয়ার’ চলাকালীন। রাজ্যের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রী অবিনাশ গেহলট বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটেও প্রতিবারের মতো আপনারা একটি প্রকল্পের নামকরণ করেছেন আপনাদের ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধীর নামে।’ তার এই মন্তব্যে চরম বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বিরোধী নেতা টিকারাম জুলি তৎক্ষণাৎ এর প্রতিবাদ করেন। তিনি দাবি করেন, ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নামের সঙ্গে এই ধরনের অনুপযুক্ত শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে। এটি রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়া উচিত।’
এই মন্তব্যের পর কংগ্রেস বিধায়করা প্রতিবাদে (Indian National Congress) ওয়েলে নেমে আসেন। তারা স্লোগান দিতে শুরু করেন। প্রথমে অধিবেশন আধঘণ্টার জন্য মুলতুবি রাখা হয়। পরে তা চারটা পর্যন্ত বাড়ানো হয়। নতুন করে অধিবেশন শুরু হলে সরকারের মুখ্য সচেতক যোগেশ্বার গর্গ বলেন, বিরোধীরা নিজেদের সীমানা অতিক্রম করেছেন। তিনি বলেন, ‘স্পিকারের দিকে বিরোধীরা যে আচরণ করেছে তা নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’ এরপর তিনি প্রস্তাব দেন, ওই ৬ বিধায়ককে সাসপেন্ড করার।
এর প্রতিবাদে টিকারাম জুলি বলেন, ‘অবিনাশ গেহলট সম্মাননীয় নেত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে কটু মন্তব্য করেছেন। তিনি যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন দেশের জন্য। কিন্তু আমাদের বিধায়কদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। এর থেকেই বোঝা যায় বিজেপি একনায়কের মেজাজে কাজ করতে চায়। রাজ্যপালের ভাষণের জবাবে বিরোধী দলনেতাকে ভাষণ দিতে না দেওয়া, আর এখন ৬ বিধায়ককে সাসপেন্ড করা—সবই বিজেপির বিরোধীদের কণ্ঠস্বর দমন করার মানসিকতা প্রকাশ করে।’
বিরোধীদের প্রতিবাদ জারি থাকে। সাসপেন্ড হওয়া ৬ বিধায়ক ওয়েলে থাকেন। কংগ্রেসের অন্য বিধায়করা সেখানে উপস্থিত হয়ে স্লোগান দেন। রাত বাড়লে, সাসপেন্ড হওয়া বিধায়কদের সেখানেই ঘুমোতে দেখা যায়। এই ঘটনা রাজস্থান বিধানসভায় এক নতুন নাটক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ঘটনার পর রাজ্য রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সরকারের কঠোর সমালোচনা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে, বিজেপি বিরোধীদের দমন-পীড়ন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে, রাজ্যপালের ভাষণের পর বিরোধীদের কর্মসূচি বন্ধ করার চেষ্টা বিজেপির দমননীতির অংশ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই বিতর্কের মধ্যে, অনেকেই মনে করছেন, এই ঘটনা রাজনীতি ও গণতন্ত্রের একটি বড় প্রশ্ন তুলে ধরছে।