নির্ভয়া তহবিলের টাকা এখনও খরচ হয়নি। এই নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে (TMC) একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সংসদের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নারী সুরক্ষা নিয়ে কেন্দ্র সরকার উদাসীন বলে অভিযোগ করেছেন তারা। বিশেষ করে, মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস হওয়ার পরেও তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকার কেন পদক্ষেপ নেয়নি, সে বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস স্পষ্ট প্রশ্ন তুলেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে গত বৃহস্পতিবার থেকে। বিশেষত এবারের বাজেটে সীমান্ত পরিকাঠামোর জন্য প্রায় আশি শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই বৃদ্ধি কেন এবং কোন খাতে করা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সংসদীয় বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়ান পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেছেন, ‘কেন নির্ভয়া তহবিলের বরাদ্দের মাত্র এক তৃতীয়াংশ খরচ হয়েছে? বাকি টাকা কোথায় গেছে? এই তহবিলের অর্থ মহিলাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা মজবুত করার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু আজও তার ব্যবহার হচ্ছে না।’
এর পাশাপাশি, মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস হওয়া সত্ত্বেও তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছে। মহিলাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সরকার কেন যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তা নিয়ে তৃণমূল নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এই বৈঠকে তৃণমূলের প্রতিনিধিরা আরও এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন। তারা উল্লেখ করেছেন যে, সরকার জেল আধুনিকীকরণের জন্য বরাদ্দের মাত্র এক চতুর্থাংশ খরচ করতে পেরেছে। সেই সঙ্গে আন্দমান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং লাক্ষাদ্বীপের জন্য ৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও, সেখানে মাত্র এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে—এই প্রশ্নও তোলা হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) অভিযোগ, সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে। সঠিকভাবে বরাদ্দের টাকা খরচ না হলে, জনগণের কাছে এই সমস্ত প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হবে।
কংগ্রেস সাংসদ অজয় মাকেনও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি দিল্লি পুলিশের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের কত মামলা নথিভুক্ত হয়েছে এবং মোট কত মামলা বকেয়া রয়েছে?’ তিনি দাবি করেছেন, ‘মহিলাদের সুরক্ষায় সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না এবং পুলিশও অপরাধী শনাক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।’
বিজেপি সাংসদ নবীন জিন্দালও তাদের দাবিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি দিল্লি-হরিয়ানার সিঙ্ঘু সীমানা দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকার কারণে মানুষের সমস্যা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন। সিংঘু সীমানায় কৃষক আন্দোলনের কারণে মানুষ ভীষণভাবে সমস্যায় পড়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি দ্রুত সুরাহা করা প্রয়োজন, এমনটাই দাবি করেছেন তিনি।
এই বৈঠকে সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী দলগুলোর সরব হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে যে, সরকার তাদের বরাদ্দের টাকা কীভাবে ব্যবহার করছে এবং নারীদের নিরাপত্তার জন্য কেন যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।