পশ্চিমবঙ্গের জন্য পৃথক পতাকা (WB State Flag)। এমনটাই দাবি তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব রাজ্য সঙ্গীত এবং রাজ্য দিবস রয়েছে। এবার এই নতুন দাবিতে বঙ্গ রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
ভারত স্বাধীনতার পর প্রায় ৭ দশক পশ্চিমবঙ্গের কোনও রাজ্য সঙ্গীত বা দিবস ছিল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য সঙ্গীত ও রাজ্য দিবসের সূচনা হয়। বর্তমানে ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পয়লা বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
এদিকে, বুধবার বিধানসভায় বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী রাজ্য পতাকা (WB State Flag) চালুর দাবি তোলেন। সেসময় বিধানসভায় বিজেপির কোনও বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন না। তাই অধিবেশনে তেমন কোনও বিতর্ক হয়নি। তবে তার দাবি সামনে আসতেই রাজনীতিতে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।
মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলেন, ‘যেকোনো জাতি তার ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির মাধ্যমে বাঁচে। বাঙালি জাতির ভাষা এবং সাহিত্যকে সারা পৃথিবী গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভারতে বিভিন্ন রাজ্যে পৃথক রাজ্য সঙ্গীত এবং পতাকা রয়েছে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে এসব কিছুই ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সঙ্গীত দিয়েছেন, আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমাদের রাজ্যের কোনও পতাকা নেই।’
এটা সত্যি যে, ভারতের কোনও রাজ্যেই পৃথক পতাকা নেই। ২০১৯ সালের আগে শুধুমাত্র জম্মু ও কাশ্মীরের পৃথক পতাকা ছিল। ৩৭০ ধারা রদের পর সেখানে রাজ্য পতাকা বিলুপ্ত হয়ে যায়। তবে কর্ণাটকে কন্নড় জাতির পতাকা উড়লেও তা রাজ্য পতাকা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিভিন্ন দেশে পৃথক রাজ্য পতাকা (WB State Flag) রয়েছে কিন্তু ভারতের পরিস্থিতি ভিন্ন।
মনোরঞ্জনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে, তিনি কি দেশভাগ চান? শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘সরকারি পর্যায়ে এমন কোনও প্রস্তাব আমাদের কাছে আসেনি। মনে হচ্ছে মনোরঞ্জনবাবু দলের মধ্যে কোণঠাসা। মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের দাবি নিয়ে খুশি।’ তিনি আরও বলেন, ‘মনোরঞ্জনদা প্রধানমন্ত্রীর মতো সুখ ভোগ করার চেষ্টা করছেন। তারা হয়তো নোট ছাপানোর দাবি করতে পারে। তৃণমূল দলের সম্পর্ক তো নোটের সঙ্গে।’
মনোরঞ্জন ব্যাপারীর দাবি রাজ্যে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তৃণমূলের মধ্যে এই ধরনের দাবির পেছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে এটা স্পষ্ট যে, রাজ্যের পতাকা বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তীব্র আলোচনার শুরু হয়েছে।