ডব্লিউপিএলের (WPL) উদ্বোধনী ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (Royal Challengers Bengaluru) মুখোমুখি হয়েছিল গুজরাত জায়ান্টসর (Gujarat Giants) বিরুদ্ধে। সেখানে বেঙ্গালুরুর এলিস ঘোষের ক্যাচ ফস্কানোর মূল্য চোকাতে হল গুজরাতকে। গুজরাতের হারের কারণ ছিল মূলত পেরি ও রিচার দাপটেই যাওয়া ম্যাচটি মাঠে ফেলে আসা।
ম্যাচটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ডব্লিউপিএলে (WPL) সর্বাধিক রান তাড়া করে জয়ী হওয়ার নজির গড়ল গতবারের চ্যাম্পিয়ন আরসিবি। ২০২৪ সালে ট্রফি জিতে যেই জায়গায় শেষ করেছিল আরসিবি সেই জায়গা থেকে শুরু হলো তাদের নতুন যাত্রা। তাদের জয়ের পথের প্রথম ধাপ ছিল একটি নাটকীয় জয়। এদিন তারা ২০ ওভারে ২০১ রান তাড়া করে জিততে সক্ষম হয়েছে যা এখন আর দুর্লঙ্ঘ্য শৃঙ্গ নয়।
ম্যাচের প্রথমভাগে অনেক চমক ছিল। আয়ুষ্মান খুরানা এবং মধুবন্তী বাগচির গান পারফরম্যান্সের পরেও আরও উত্তেজনা অপেক্ষা করছিল দর্শকদের জন্য। গুজরাতের ইনিংসের ১২.২ ওভারে ১০৯ রানে চারটি উইকেট পড়ে যাওয়ার পরেও সবচেয়ে বড় আরসিবি সমর্থকও হয়তো মনে করেননি যে তাদের দল ম্যাচটি জিতে উঠতে পারবে। কিন্তু রিচা ঘোষের দ্যুতিময় ব্যাটিং তাকে দলকে জয় এনে দেয়। মাত্র ২৭ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচটি শেষ করেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল সাতটি চার এবং চারটি ছক্কা।
অন্যদিকে এলিস পেরি (Ellyse Perry) ৩৪ বলে ৫৭ রান করে ম্যাচে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ছ’টি চার ও দুটি ছক্কা দিয়ে এই ইনিংস সাজানো ছিল। গুজরাতের ডিফেন্সের বিরুদ্ধে তাদের অসাধারণ ব্যাটিং ছিল একদম নিখুঁত।
গুজরাতের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ শুরুতে আশার আলো দেখালেও পরে তা হতাশায় পরিণত হয়। গুজরাতের বোলারদের মধ্যে গার্ডনার ছিল সবচেয়ে সফল। তবে ম্যাচের ফল বদলে দিয়েছিলেন রিচা ঘোষ এবং এলিস পেরি।
গুজরাতের প্রথম ইনিংসে ৬.৪ ওভারে ৪১ রানে দুই উইকেট পড়ার পর, মুনি এবং গার্ডনার তিন নম্বরে এসে গুজরাতকে টেনে নিয়ে যান। মুনি ৪২ বলে ৫৬ রান করেন। তবে গার্ডনার ছিলেন দুর্দান্ত, ৩৭ বলে ৭৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। কিন্তু গুজরাতের বাকি বোলাররা তাদের পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়ে যায় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে আরসিবি দলের কাছে ম্যাচটি চলে যায়।
এই ম্যাচে আরসিবির বড় ধাক্কা অবশ্য ছিল শ্রেয়ঙ্কা পাটিলের আঙুলের চোট। ২২ বছরের তরুণীকে পুরো মরসুম থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা গেছে। তার ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দেখে তার মানসিক অবস্থার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তবে তিনি বলেছিলেন, ‘‘হৃদয় ভারাক্রান্ত হলেও আমি ফিরে আসব।’’
অবশ্য ম্যাচ শেষে সকলের নজর ছিল পরের দিনের মুম্বই বনাম দিল্লি ম্যাচে যেখানে দুই কিংবদন্তির দল পরস্পরের বিরুদ্ধে খেলবে। মুম্বইয়ের বোলিং কোচ ঝুলন গোস্বামী এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের ডিরেক্টর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই ম্যাচ হবে অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ। মুম্বই এবং দিল্লি দল অবশ্য গত দুটি বছরের ফাইনালিস্ট। তাই দিল্লির জন্য এটি একটি বদলার ম্যাচ হতে চলেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
গুজরাত জায়ান্টস ২০১-৫ (মুনি ৫৬, গার্ডনার ৭৯, রেণুকা ২-২৫)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ২০২-৪ (পেরি ৫৭, রিচা অপরাজিত ৬৪, গার্ডনার ২-৩৩)
পরবর্তী ম্যাচ
শনিবার ডব্লিউপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ানস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালস। সন্ধে ৭.৩০ থেকে, স্টার স্পোর্টস নেটওয়ার্কে।