২০২৩ সালের প্রাথমিক টেটের ফলাফল এখনও প্রকাশিত হয়নি। ১৩ মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও কেন ফল প্রকাশিত হচ্ছে না, তা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তিনি বলেছেন, তিন সপ্তাহের মধ্যে পর্ষদকে সুনির্দিষ্টভাবে হলফনামা জমা দিতে হবে, যাতে কেন এত সময় পার হয়ে গেল তাও জানা যায়।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রাথমিক টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এখনো পরীক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে, কারণ ১৩ মাস পরেও কোনও ফলাফল প্রকাশ হয়নি। ফলে, এ বিষয়ে হাই কোর্টে একটি মামলা করা হয়। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বসু পর্ষদের আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন এত দেরি হচ্ছে। পর্ষদের আইনজীবী জানান, ওবিসি শংসাপত্রের একটি মামলা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে, যার জন্য ফল প্রকাশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে, মামলাকারী পরীক্ষার্থীর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এর বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন, কিন্তু সেখানে কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি। ফলে, ওবিসি শংসাপত্রের কারণে টেটের ফল প্রকাশে কোনও বাধা নেই।
বিচারপতি বসু তখন মন্তব্য করেন, “ওবিসি মামলায় কি সমস্যা রয়েছে? না কি অন্য কোনো কারণে ফল প্রকাশ আটকে রয়েছে? পর্ষদ হলফনামা দিয়ে তা স্পষ্ট করুক।” তিনি আরও বলেন, “যদি ডিভিশন বেঞ্চের জন্যই ফল প্রকাশ আটকে থাকে, তবে সেটি হলফনামায় জানানো হোক।”
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল গত বছরের ডিসেম্বরে জানিয়েছিলেন, আইনি জটিলতার কারণে ২০২৩ সালের টেটের ফল প্রকাশ করা হয়নি। তিনি বলেন, “২০১৭ ও ২০২২ সালের টেটের বেশ কিছু পরীক্ষার্থী আদালতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন, এবং সেই আইনি জটিলতা না মিটিয়ে ২০২৩ সালের ফল প্রকাশ করা সম্ভব নয়।” এর ফলে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা দ্রুত ফল প্রকাশের দাবি জানাচ্ছে।
এদিকে, হাই কোর্টের নির্দেশে পর্ষদকে এই বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের টেটের ফল প্রকাশ না হওয়ায় অনেক পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এবং তারা এখন রায়প্রকাশের জন্য আদালতের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন।