প্যারিস: প্যারিসে এআই অ্যাকশন সামিটে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এআই নিয়ে ঢালাও প্রশংসা করেন তিনি। কিন্তু, তার সঙ্গেই সতর্কবার্তাও শোনা যায় তাঁর মুখে৷
মানব জীবনে এআই-এর ভালো প্রভাব রয়েছে। নীতি, অর্থনীতি, নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সমাজ- সবক্ষেত্রেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রভাব ফেলছে৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই শতাব্দীতে মানবতার কোড হচ্ছে এআই। কিন্তু মানবতার ইতিহাসে প্রযুক্তিগত যা যা মাইলস্টোন তৈরি হয়েছে এটি তার থেকে আলাদা। অবিশ্বাস্য গতিতে এর উন্নতি হচ্ছে। আগের চেয়ে অনেক দ্রুতগতিতে গ্রহণ করা হচ্ছে এবং কাজে লাগানো হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং এর শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যাতে বিশ্বব্যাপী সবার জন্য এর সুফল নিশ্চিত করা যায়। “এআইয়ের শাসন ব্যবস্থা শুধুমাত্র ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, বরং এটি নতুনত্বের জন্য, বৈশ্বিক কল্যাণে প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্যও অপরিহার্য,” যোগ করেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে গ্লোবাল সাউথ বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য প্রযুক্তির অ্যাক্সেস সহজ করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, “এআই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাহায্য করবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে।”
এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যা দেশের বৈচিত্র্য এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তিনি বলেন, “ভারত তার নিজস্ব বৃহৎ ভাষার মডেল তৈরি করছে এবং এর জন্য একটি শক্তিশালী পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেল গড়ে তুলছে, যা প্রযুক্তির উন্নয়নে সহায়ক হবে।”
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, যিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তৃতার আগে ভাষণ দেন, ইউরোপীয় দেশগুলোকে এআই প্রযুক্তির বিকাশে আইনি প্রতিবন্ধকতা কমানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এআইকে উদ্ভাবনী এবং প্রবৃদ্ধির জন্য একটি সুবিধাজনক পরিবেশের প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, যিনি প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তৃতার পর বক্তব্য রাখেন, বলেন, “এআই কখনোই মানুষকে প্রতিস্থাপন করবে না, বরং এটি মানুষের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবে। এটি আমাদের কাজের ধরণ পরিবর্তন করবে, তবে মানুষের স্থান নেবে না।” তিনি আরও বলেন, “এআই-কে অবশ্যই আদর্শগত দিক থেকে পক্ষপাতিত্ব মুক্ত রাখতে হবে, যাতে তা সবার জন্য সমানভাবে উপকারী হয়।”