মঙ্গলবার মণিপুর সরকার জনগণকে সরকার সতর্ক করেছে শান্ত থাকার জন্য এবং যেকোন গুজব, অপপ্রচার বা অযাচিত তথ্যের থেকে বিরত থাকার। সরকার বলেছে এসব ভুল তথ্য জনগণের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে এবং রাজ্যের শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ব্যাহত করতে পারে।
এই আহ্বানটি জানানো হয়েছে যখন রাজ্যে নেতৃত্ব সংকটের মধ্যে ৯ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগ করেছেন। মুখ্য সচিব পি কে সিংয়ের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সরকারের নজরে এসেছে যে কিছু অসাধু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে, ভুয়া তথ্য, উস্কানিমূলক বিষয়বস্তু বা মিথ্যা গল্প প্রচার করে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “এ ধরনের প্রচেষ্টা আইন অমান্য করার উদ্দেশ্যে করা হয়, এবং জনগণকে দৃঢ়ভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যেন তারা এমন ভুল তথ্য বা উস্কানির প্রতি সাড়া না দেয়।”
ভুল তথ্যের কারণে যাতে জনগণের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি না হয়, তার জন্য সরকার একটি কন্ট্রোল রুম চালু করেছে, যেখানে যেকোনো খবর বা তথ্য যাচাই করা যেতে পারে। কন্ট্রোল রুমটি ২৪ ঘন্টা চালু রাখা হবে। এবং এর হেল্পলাইন নম্বরটি হলো ৯৪৮৫২৮০৪১৯।
সরকার বলেছে, “শান্তি এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা আমাদের সকলের একটি সমষ্টিগত দায়িত্ব। জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে যাতে তারা এমন কোনো উস্কানিমূলক তথ্য বা গুজবের শিকার না হন, যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। যে কেউ আইন ভঙ্গ করার চেষ্টা করবে, তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে যে সম্প্রদায়ের নেতা, নাগরিক সমাজ, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, ছাত্র সংগঠন, বুদ্ধিজীবী এবং সাধারণ জনগণ একত্রিত হয়ে শান্তি, সম্প্রীতি এবং আস্থা পুনর্স্থাপন করার জন্য কাজ করুক।
“চলুন, আমরা আমাদের প্রিয় রাজ্যের উন্নয়ন এবং শান্তি বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করি,” বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
২০২৩ সালের মে মাস থেকে মণিপুরের ইম্ফল উপত্যকার মৈতেই এবং পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি অঞ্চলের কুকি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে প্রায় ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে। এই সহিংসতা এখনো অব্যাহত রয়েছে এবং রাজ্যের পরিস্থিতি অস্থির।
মণিপুর সরকার জনগণের প্রতি শান্তি বজায় রাখার এবং অযাচিত তথ্য ও গুজবের প্রতি সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, “আমরা একে অপরকে বুঝতে পারি এবং আমাদের রাজ্যকে আরও সমৃদ্ধশালী, শান্তিপূর্ণ এবং উন্নত করতে একত্রিত হতে পারি।”