মণিপুরে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সংবিধানিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।তাদের দাবি, মণিপুর বিধানসভা অধিবেশন ডাকার জন্য গভর্নর কেন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না?কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘আজ মণিপুর বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য সংবিধানিকভাবে নির্ধারিত শেষ দিন।’’ তিনি দাবি করেছেন, সংবিধানের ১৭৪(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দুটি অধিবেশনের মধ্যে ছয় মাসের বেশি সময় পার হতে পারে না। সুতরাং, মণিপুরের রাজ্যপাল কেন সংবিধানিকভাবে বাধ্যতামূলক অধিবেশন ডাকার জন্য কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।
সংবিধানের ১৭৪(১) অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘‘কোনো বিধানসভার অধিবেশন শেষ হওয়ার পর পরবর্তী অধিবেশন ডাকা না হওয়া পর্যন্ত ছয় মাসের বেশি সময় পার হতে পারে না।’’ জয়রাম রমেশ আরও বলেছেন, ‘‘কেন মণিপুরের রাজ্যপাল এই বিধান লঙ্ঘন করছেন এবং মণিপুর বিধানসভা অধিবেশন ডাকার জন্য কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না?’’ রমেশ দাবি জানিয়েছেন, গত সোমবার যখন কংগ্রেস মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বিরেন সিংহের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন বিজেপি তার উত্তরসূরি নির্বাচন করতে পারেনি এবং মুখ্যমন্ত্রী বিরেনকে অবশেষে রবিবার রাতেই পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংহের পদত্যাগের পরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তা ‘বিলম্বিত’ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, ‘‘মণিপুরে চলমান অস্থিরতার মধ্যে এরকম একটি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল অনেক আগেই।’’ ২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা শুরুর পর থেকেই কংগ্রেস দলটি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে এসেছিল। সেসময় কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল যে, বিরেন সিংহের নেতৃত্বে রাজ্যে নৃশংস দাঙ্গা এবং সহিংসতা তীব্র হয়ে উঠেছিল।
মণিপুরের মর্মান্তিক পরিস্থিতি নিয়ে কংগ্রেসের বক্তব্য আরও স্পষ্ট হয় যখন তারা বলেছিল, ‘‘মণিপুরের জনগণ এখন ‘আমাদের নিয়মিত বিদেশ সফরে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী’ নরেন্দ্র মোদির আগমনের অপেক্ষায় রয়েছে।’’ কংগ্রেসের দাবি, বিরেন সিংহের পদত্যাগ খুবই বিলম্বিত ছিল, যেটি ২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরের জাতিগত সহিংসতা শুরুর পর থেকেই রাজ্যবাসীর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল।
মণিপুরে এই সহিংসতার কারণে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে। মণিপুরে ছড়িয়ে পড়া জাতিগত সহিংসতা এবং এর পরবর্তী অস্থিরতার ফলে রাজ্যের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রের উদাসীনতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
মণিপুর বিধানসভা অধিবেশন ডাকার জন্য গভর্নরের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় কংগ্রেসের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের জনগণের জন্য এখন তাজা নেতৃত্বের প্রয়োজন। রাজ্যবাসী আশা করছে, নতুন সরকার দ্রুত স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করবে এবং সহিংসতার অবসান ঘটানোর জন্য পদক্ষেপ নেবে।