Budget 2025 : মোদীর স্বপ্নপূরণে কল্পতরু নির্মলা

কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) খেলো ইন্ডিয়া (Khelo India) প্রকল্পকে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১,০০০ কোটি টাকা, যা…

Nirmala Sitharaman on Budget 2025

কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) খেলো ইন্ডিয়া (Khelo India) প্রকল্পকে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১,০০০ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ২০০ কোটি টাকা বেশি। অর্থমন্ত্রী (Finance Minister) নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitharaman) ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেট (Budget 2025) পেশ করার সময় এই ঘোষণা করেন। সব মিলিয়ে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রকের (Ministry of Youth Affairs & Sports) জন্য ৩৭৯৪.৩০ কোটি টাকার বাজেট ধার্য করা হয়েছে। যা গত অর্থবর্ষের থেকে ৩৫১.৯৮ কোটি টাকা বেশি। যদিও চলতি বছরে অলিম্পিক (Olympic), কমনওয়েলথ বা এশিয়ান গেমসের (Asian Games) মত কোনও বড় প্রতিযোগিতা নেই।

খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্পটি মূলত তৃণমূল স্তর থেকে প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ অন্বেষণের জন্য চালু করা হয়েছিল। তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও উন্নতির ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন আশা সৃষ্টি করার লক্ষ্য নিয়ে এটি কাজ করে। এই প্রকল্পের আওতায়, খেলার প্রতি আগ্রহী ছোট ছেলে-মেয়েদের সন্ধান ও তাদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। যাতে তারা আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের মেধা প্রমাণ করতে পারে। বিশেষ করে অলিম্পিক, প্যারালিম্পিক, কমনওয়েলথ গেমস কিংবা এশিয়ান গেমসের মতো বড় প্রতিযোগিতায় দেশের পক্ষে সাফল্য অর্জন করার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের জন্য মোট ১,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা দেশব্যাপী ক্রীড়ার পরিকাঠামো উন্নত করার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ।

   

তবে, যদিও বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি ঘটেছে। তবুও অনেকেই মনে করছেন যে এটি যথেষ্ট নয়। গত কয়েক বছর ধরেই দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে বাজেটের বৃদ্ধি ঘটছে। কিন্তু সেই বৃদ্ধি আদতে সেভাবে দেশীয় ক্রীড়াব্যবস্থার উন্নতি ঘটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের জন্য ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, তবে বরাদ্দের এই বৃদ্ধি সত্ত্বেও, ক্রীড়াঙ্গনে আসল পরিবর্তন ঘটানোর জন্য আরও বৃহত্তর বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।

বিশেষত, এক দশকের বাজেট পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, প্রতি বছরই ক্রীড়াখাতে বাজেট কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে গত কয়েক বছরে ক্রীড়াব্যবস্থার জন্য বরাদ্দ হওয়া অর্থে তা বড় ধরনের উন্নতি এনে দিতে পারেনি। গত বছরেই ৪৫.৩৬ কোটি টাকার মতো খুব সামান্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এর পাশাপাশি, ২০৩৬ অলিম্পিকে ভারতের উপস্থিতি ও সাফল্য অর্জনের জন্য খেলো ইন্ডিয়া প্রকল্পের মধ্যে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হচ্ছে, যাতে আগামী দিনে বিশ্বকাপে ভারত আরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক হতে পারে।

এছাড়া, ক্রীড়ামন্ত্রকের জন্য ৭৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা ক্রীড়াঙ্গনের নানা ক্ষেত্রের উন্নতি সাধনের জন্য ব্যবহৃত হবে। তবে সঠিক দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনার অভাবে এখন পর্যন্ত দেশের খেলাধুলায় তেমন উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়নি। দেশীয় ক্রীড়া ফেডারেশনের জন্যও বরাদ্দ ৩৪০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৪০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, তবে এই অর্থের পরিমাণও খুবই সীমিত, যা বিশ্বমানের ক্রীড়াব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথেষ্ট নয়।

মোদি সরকারের আমলে ২০৩৬ অলিম্পিকের আয়োজনের পরিকল্পনা বারবার শোনা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাতীয় গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অলিম্পিক আয়োজনের বিষয়ে তার আশাবাদী মনোভাব ব্যক্ত করেছিলেন। এই বিষয়টি মাথায় রেখে ক্রীড়াব্যবস্থায় বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে এবং আশা করা যাচ্ছে, আগামী বছরগুলোতে এই প্রকল্পের আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হবে। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে সঠিক উন্নতি সাধন করতে সহায়ক হবে।

তবে, বাজেটের বৃদ্ধির পরেও অনেকেই মনে করছেন যে, দেশের ক্রীড়াব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে এখনও অনেক কাজ বাকি। যেহেতু ২০৩৬ অলিম্পিকের দিকে নজর রেখেই এই বৃদ্ধি ঘটানো হয়েছে। তাই এই সময়ে খেলার প্রতি সরকারের তৎপরতা বাড়ানো দরকার। দেশীয় ক্রীড়া প্রতিভার উন্নয়নে আরও বিনিয়োগ করা, আন্তর্জাতিক স্তরে ক্রীড়াবিদদের জন্য ভালো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং আরও শক্তিশালী পরিকাঠামো তৈরি করা প্রয়োজন। তবেই ভারত আন্তর্জাতিক ক্রীড়াজগতে তার পরিচিতি এবং শক্তি আরও বৃদ্ধি করতে পারবে।