India vs England: ভারতের কাছে দ্বিতীয় টি-২০আই ম্যাচ ছিল বিশেষ গুরুত্ব বহনকারী। চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ভারত ইংল্যান্ডকে দুই উইকেটে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। তিলক ভার্মার অপ্রতিরোধ্য ৭২ রানের ইনিংসের উপর ভর করে এই জয়টি নিশ্চিত হলো। তিলক ভার্মা ৫৫ বল খেলে ৭২ রান করেন, যেখানে ছিল ৪টি বাউন্ডারি এবং ৫টি ছক্কা। তাঁর এই অনবদ্য ইনিংস ভারতকে ১৬৫ রানের টার্গেট তাড়া করতে সহায়তা করে, যেখানে এক সময় ভারত ছিল বিপদের মধ্যে ১২৬/৭।
ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস
ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ১৬৫/৯ স্কোর করে। ভারতীয় বোলারদের দাপটে ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা তেমন বড় ইনিংস গড়তে পারেননি। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার ৩০ বল খেলে ৪৫ রান করেন, যেটি ছিল দলটির পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর। লিয়াম লিভিংস্টোন ১৩ রান করে দ্রুত আউট হন। তবে ইংল্যান্ডের অন্যতম আশার আলো হিসেবে ক্রিস ব্রাইডন কারস ১৭ বলের মধ্যে ৩১ রান যোগ করেন, যা ইংল্যান্ডকে একটি লড়াকু স্কোরে পৌঁছাতে সহায়ক হয়।
ভারতীয় বোলাররা ম্যাচে নিজেদের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করেছেন। অক্ষর পটেল ইংল্যান্ডের দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানকে আউট করেন— অধিনায়ক জস বাটলার এবং লিয়াম লিভিংস্টোন। তিনি ৪ ওভারে ২টি উইকেট নেন। পাশাপাশি, ভরুণ চক্রবর্তী ২টি উইকেট নিয়ে ভারতের পক্ষে শীর্ষ বোলার হন। শোভন বোলিং পারফরম্যান্সে ছিলেন আবিষেক শর্মা (১/১২) এবং ওয়াশিংটন সুন্দর (১/৯)। ভারতের বোলিং দলে সব মিলিয়ে ছিল ধারাবাহিকতা এবং আক্রমণাত্মক মনোভাব।
ভারতের জয়ে তিলক ভার্মার অবদান
ভারতের লক্ষ্য ছিল ১৬৫ রান, যা মোটেও সহজ ছিল না। এক সময় ভারতের স্কোর ১২৬/৭ হয়ে যাওয়ার পর পরিস্থিতি ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং। তবে তরুণ তিলক ভার্মা একাই ম্যাচটি ভারতের পক্ষে নিয়ে আসেন। ২২ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের সাহসী ব্যাটিং শো দেখে প্রত্যেকেই মুগ্ধ। তিলক ৭২ রান করার পথে ৫৫টি বল মোকাবেলা করেন, যার মধ্যে ৪টি বাউন্ডারি এবং ৫টি ছক্কা ছিল। তাঁর ব্যাটিংয়ে ছিল অনেক স্থিরতা, যে কারণে ভারত শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিততে সক্ষম হয়। তিলক ভার্মার এই ইনিংসটি ছিল ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য একটি নতুন উজ্জ্বল অধ্যায়।
এর পাশাপাশি, আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন ভারতের অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দর। ১৯ বল খেলে ২৬ রান করেন তিনি, যা দলের স্কোর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে। এছাড়া, রবি বিশ্নোইও তিলকের সঙ্গে ভালো ব্যাটিং করেন এবং ২টি বাউন্ডারি মারেন। তবে ভারতীয় শিবিরে আরও কিছু ব্যাটসম্যান ব্যর্থ হন, কিন্তু তিলক ভার্মার অপরাজিত ইনিংসই দলের জয়ের মূল চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়ায়।
ইংল্যান্ডের বোলিং পারফরম্যান্স
ইংল্যান্ডের পক্ষে, ক্রিস ব্রাইডন কারস সর্বোচ্চ সফল বোলার ছিলেন। তিনি ৪ ওভারে ৩টি উইকেট নেন এবং ২৯ রান দেন। তবে ইংল্যান্ডের বোলিং বিভাগে কিছুটা ভগ্ন ছিল। ইংল্যান্ডের বোলাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলতে পারেননি এবং পিচের সুবিধা সত্ত্বেও তারা নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি।
ভারতীয় দলের বোলিং পারফরম্যান্স
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে অক্ষর পটেল, বরুণ চক্রবর্তী এবং আবিষেক শর্মার মতো বোলাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অক্ষর পটেল এবং ভরুণ চক্রবর্তী দুটি করে উইকেট নেন। এছাড়া, ভারতের দলের অন্যান্য বোলাররা নিজেদের নির্ধারিত ওভারে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করেন, যেহেতু তারা ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের বড় স্কোর করতে দিতে পারেননি।
ম্যাচের ফলাফল ও সিরিজের পরিস্থিতি
দ্বিতীয় টি-২০আই ম্যাচে ভারতের জয়ে, তারা সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল। এখন শুধু তিনটি ম্যাচ বাকি এবং ভারত পুরো সিরিজে আক্রমণাত্মক মনোভাব বজায় রাখতে চায়। তিলক ভার্মার এই জয়ী ইনিংসটি ভারতীয় ক্রিকেটে তাঁর অবস্থান আরও শক্ত করেছে। এছাড়া, বোলিং বিভাগের মধ্যে অক্ষর পটেল এবং ভরুণ চক্রবর্তীদের পারফরম্যান্সও বেশ প্রশংসনীয়।
ইংল্যান্ডের জন্য অবশ্য দ্বিতীয় ম্যাচের ফলাফল হতাশাজনক। তাঁরা কিছু ভালো পারফরম্যান্স দেখানোর পরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। সিরিজে এখন ইংল্যান্ডের জন্য ফিরে আসা কঠিন হতে পারে। তবে, পরবর্তী ম্যাচগুলিতে আরও ভালো খেলতে চাইবে তারা।
এখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের জন্য পরবর্তী লক্ষ্য হবে এই সিরিজ জয় নিশ্চিত করা। দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেলে ভবিষ্যতে আরও ভালো ফল পাওয়া সম্ভব।