প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে দেখা যাবে নৌবাহিনীর শক্তি, থাকবে শক্তি প্রদর্শন

Navy R-Day Parade: দেশজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে চলছে প্রজাতন্ত্র দিবসের (Republic Day) প্রস্তুতি। রাজধানী দিল্লিতে ২৬ শে জানুয়ারির মূল অনুষ্ঠানের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ও সাজসজ্জার…

Indian Navy Parade

Navy R-Day Parade: দেশজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে চলছে প্রজাতন্ত্র দিবসের (Republic Day) প্রস্তুতি। রাজধানী দিল্লিতে ২৬ শে জানুয়ারির মূল অনুষ্ঠানের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ও সাজসজ্জার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে এবারের বিশেষ বিষয় হল ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy) ট্যাবলো। এবার নৌবাহিনী তার ট্যাবলোতে সেসব বাহিনীকে প্রদর্শন করবে যা দেশের নিরাপত্তা ও শক্তির প্রতীক। নৌসেনার এই ট্যাবলোতে, সম্প্রতি যুক্ত হওয়া সাবমেরিন এবং যুদ্ধজাহাজগুলি বিশেষভাবে দৃশ্যমান হবে। এর মধ্যে রয়েছে আইএনএস ভ্যাগশির (INS Vagsheer), আইএনএস সুরত (INS Surat) এবং আইএনএস নীলগিরি (INS Nilgiri)।

আইএনএস ভ্যাগশির- এটি হল স্করপেন শ্রেণীর সবচেয়ে আধুনিক সাবমেরিন। আইএনএস ভ্যাগশির সম্প্রতি নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সাবমেরিনের শক্তি এবং প্রযুক্তি শত্রুদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ট্যাবলোতে এটি একটি বিশেষ স্টাইলে উপস্থাপন করা হবে।

   

আইএনএস সুরত – ভারতীয় নৌসেনার চতুর্থ স্টিলথ গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী, এটি তার অনন্য নকশা এবং শক্তির জন্য পরিচিত। ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তায় এটি একটি বড় পদক্ষেপ।

আইএনএস নীলগিরি – এটি ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রকল্প 17A এর অধীনে নির্মিত প্রথম স্টিলথ ফ্রিগেট। দেশের সামুদ্রিক সীমান্তের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ট্যাবলোতে এর আভাস দেখতে খুব বিশেষ হবে।

Navy R-Day Parade: ট্যাবলোটি বিশেষভাবে সাজানো হবে

নৌসেনার এই ট্যাবলোটি শুধুমাত্র প্রযুক্তিগত শক্তি প্রদর্শন নয়, এটি ভারতের স্বনির্ভরতা এবং মেক ইন ইন্ডিয়ার দৃষ্টিভঙ্গিরও প্রতীক। ট্যাবলোটি বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে দেখা যাবে ভারতীয় ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সঙ্গম। এবার ট্যাবলোতে নৌসেনার শক্তি, আত্মনির্ভরশীলতা এবং জাতির নিরাপত্তায় তাদের অবদান তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

Navy R-Day Parade: আইএনএস ভ্যাগশির, আইএনএস সুরত, আইএনএস নীলগিরি প্রধান আকর্ষণ

আইএনএস ভ্যাগশির, আইএনএস সুরত এবং আইএনএস নীলগিরি, তিনটিই এই ট্যাবলোর প্রধান আকর্ষণ। তাই ভারতীয় নৌবাহিনীর সেনারা কুচকাওয়াজের অংশ হতে পেরে গর্বিত বোধ করছে। এই ট্যাবলোর পরিচালনা করছেন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মমতা সিহাগ এবং লেফটেন্যান্ট বিপুল সিং গেহলট। ট্যাবলো ভারতীয় নৌবাহিনীর বহুমাত্রিক ক্ষমতা এবং সামুদ্রিক স্বার্থ রক্ষার প্রতি তার উৎসর্গ প্রদর্শন করে।

Navy R-Day Parade: 144 জন তরুণ সেনা এগিয়ে যাবেন

Indian Navy parade

এবার নৌসেনা মার্চিং কন্টিনজেন্টকে ১৪৪ জন তরুণ সেনা নিয়ে কর্তব্যের পথে মার্চ করতে দেখা যাবে। এই যুবকদের গড় বয়স ২৫ বছর। এই যুবকরা ভারতীয় নৌসেনার বিভিন্ন শাখা থেকে নির্বাচিত হয়েছে। এই দলটি কুচকাওয়াজের জন্য দুই মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছে। মার্চিং স্কোয়াডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সাহিল আহলুওয়ালিয়া। তার সঙ্গে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ইন্দ্রেশ চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কাজল ভারভি এবং প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে লেফটেন্যান্ট দিবিন্দর কুমার রয়েছেন। বিশেষ বিষয় হল এই দলটি মিনি-ভারতের প্রতীক, কারণ এতে 17টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অফিসার এবং নাবিকরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

Navy R-Day Parade: নৌ ব্যান্ডে ৬ জন মহিলা সদস্য

এছাড়াও, ভারতীয় নৌসেনার ব্যান্ড এবারের কুচকাওয়াজে দুর্দান্ত পারফর্ম করবে। ব্যান্ডটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন এম. অ্যান্টনি রাজ, মাস্টার চিফ পেটি অফিসার (মিউজিশিয়ান ফার্স্ট ক্লাস)। ৮০ জন সঙ্গীতশিল্পীর এই দল, যার মধ্যে প্রথমবারের মতো ৬ মহিলা সদস্যও রয়েছে।

Navy R-Day Parade: সশস্ত্র বাহিনীর ত্রি-সেবা ট্যাবলো কুচকাওয়াজের অংশ

প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে প্রথমবারের মতো ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ত্রি-পরিষেবা ট্যাবলো কুচকাওয়াজের অংশ হবে। যার থিম- ‘শক্তিশালী ও সুরক্ষিত ভারত’। এই ট্যাবলো সশস্ত্র বাহিনীর ঐক্য ও সংহতির শক্তি প্রদর্শন করবে। ট্যাবলোর প্রধান আকর্ষণ হবে – একটি যৌথ অপারেশন রুম, যেখানে তিনটি পরিষেবার মধ্যে নেটওয়ার্কিং এবং যোগাযোগ প্রদর্শন করা হবে।

Navy R-Day Parade: তিন বাহিনীর যৌথ অভিযানের প্রদর্শনী

Indian Navy tableau

ট্যাবলোতে একটি যুদ্ধের দৃশ্য দেখানো হবে, যেখানে সেনা, নৌ ও বায়ুসেনার যৌথ অভিযান হবে। অর্জুন প্রধান যুদ্ধ ট্যাঙ্ক, তেজস এমকেআইআই যুদ্ধবিমান, উন্নত লাইট হেলিকপ্টার, ডেস্ট্রয়ার আইএনএস বিশাখাপত্তনম এবং দূরবর্তীভাবে চালিত বিমানের শক্তি প্রদর্শন করা হবে। এই ট্যাবলোটি শুধুমাত্র ত্রি-পরিষেবার সমন্বয় দেখাবে না, বরং ‘স্বনির্ভর ভারত’-এর লক্ষ্যকেও তুলে ধরবে।

২০২৫ সালকে ‘সংস্কারের বছর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধ সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ‘যৌথ ও সংহতি’কে প্রধান ভিত্তি করেছে। তিন বাহিনীর এই সমন্বয় শুধু আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে শক্তিশালী করবে না, সেই সঙ্গে এই বার্তাও দেবে যে ভারত এখন যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রস্তুত এবং সক্ষম।