ডার্বিতে রক্ষনই চিন্তার ভাঁজ অস্কারের সঙ্গে আনোয়ারের বিকল্প কে ?

ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) কলকাতা ডার্বিতে (Kolkata Derby) ফের মুখোমুখি ময়দানের দুই শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব মোহনবাগান (Mohun Bagan SG) এবং ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC)। যদিও…

East Bengal FC coach Oscar Bruzon criticizes referee decisions

ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) কলকাতা ডার্বিতে (Kolkata Derby) ফের মুখোমুখি ময়দানের দুই শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব মোহনবাগান (Mohun Bagan SG) এবং ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC)। যদিও এবারের লড়াই কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন স্টেডিয়ামে নয়, বরং ব্রহ্মপুত্রের কোলঘেঁষে গুয়াহাটিতে হবে। এই লড়াইয়ে বাগান শিবির এখন অপরাজিত। অন্যদিকে, লাল-হলুদ শিবির এই ম্যাচে বাজি ধরবে নিজেদের ইতিহাস ও চ্যালেঞ্জের সামনে। সেখানে আজ আইএসলের মঞ্চে তাদের সাখ্যাৎ হতে চলেছে দশম বারের জন্য।

এবারের ডার্বি নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা তৈরি হয়েছে প্রথমত কোচিং স্টাফের মধ্যে। মোহনবাগান যে শক্তিশালী দল হয়ে উঠেছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আজ থেকে প্রায় তিন মাস আগে তথা ১৯ অক্টোবর ডার্বির সকালে কলকাতাতে পা রেখেছিলেন লাল-হলুদের নব নিযুক্ত স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজো। সেদিনের ম্যাচে বাগান শিবিরের কাছে ০-২ গোলে পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এরপর দিন বদল হয়েছে,লিগ টেবিলে লাস্ট বয়ের তকমা মুছে ফেলেছে ময়দানের এই প্রধান। শেষ সাত ম্যাচের মধ্যে চার ম্যাচে জয়, দুটিতে ড্র এবং এক ম্যাচে পরাজিত হয়েছে মশাল ব্রিগেড।

   

আজকের ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের ধারাবাহিকতা এবং আক্রমণাত্মক খেলা ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোকে নতুন পরিকল্পনা সাজাতে বাধ্য করতে পারে। এই প্রসঙ্গে তিনি ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠকে বলনে, “এটা অবশ্যই একটি কঠিন ম্যাচ, তবে আমাদের লক্ষ্যও স্পষ্ট। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে হবে এবং ভুল না করে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে।” তবে ইস্টবেঙ্গল কোচ আশাবাদী, যে কোনো পরিস্থিতিতেই তারা নিজেদের কৌশল প্রয়োগ করতে সক্ষম।

এদিকে, ইস্টবেঙ্গলের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি চাপে ফেলেছে দলকে। আনোয়ার আলি, মহম্মদ রাকিপ এবং প্রভাত লাকরা এই ম্যাচে থাকছেন না বলেই জানা গিয়েছে। তাদের অনুপস্থিতি দলের রক্ষণ শক্তির জন্য বড় ধাক্কা। বিশেষত, আনোয়ার আলির অভাব দলের রক্ষণের শক্তিকে দুর্বল করে তুলতে পারে। কিন্তু, কোচ অস্কার ব্রুজো জানিয়েছেন, তিনি রক্ষণ শক্তি আরও দৃঢ় করার জন্য পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে সাজানোর পরিকল্পনা করেছেন। “আমরা রক্ষণে আরও কঠোর হতে চাই, কারণ মোহনবাগান শক্তিশালী আক্রমণাত্মক দল। তবে আমাদের লড়াই করতে হবে। পরিকল্পনামাফিক একসঙ্গে খেলতে হবে,” বলেছেন তিনি।

শেষ কয়েকটি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে কিছুটা চাপে পড়তে দেখা গেছে। একদিকে, তারা শেষ দুটি ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট হারিয়েছে, অন্যদিকে মোহনবাগান ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেছে। কিন্তু, এই চাপের মধ্যেই তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। কোচ অস্কার মনে করেন, চাপই তাদের জন্য শক্তি। “আমরা জানি, চাপ থাকলে আমরা ভালো খেলি। এই চাপকে আমরা উপভোগ করি। শনিবারও এমন কিছু হবে,” বলেন অস্কার। এটা স্পষ্ট যে, তার দলের মনোভাব ইতিবাচক এবং তারা নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত।

এদিকে, ডার্বির জন্য কিছু নতুন ফুটবলারও দলে যোগ দিয়েছেন। সল ক্রেসপো এবং রিচার্ড সেলিসকে প্রস্তুত রাখছেন অস্কার। সেলিসের আগমন দলের আক্রমণাত্মক শক্তিকে আরও বাড়াতে পারে। এমনকি, তার দলে যোগ দেওয়া সেলিসও ডাগ-আউটে থাকতে পারেন। এর মানে হল যে, ইস্টবেঙ্গল পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে মাঠে নামবে।

তবে, ফুটবল খেলায় যে কোন মুহূর্তে অঘটন ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে যখন কথা আসে কলকাতার ডার্বির, তখন কিছুই বলা যায় না। ইস্টবেঙ্গল যদি তাদের সেরাটা দেয় এবং কোচ অস্কার ব্রুজোর পরিকল্পনাগুলি সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়, তবে এই ম্যাচে কিছু অবিশ্বাস্য কিছু ঘটতে পারে।

অন্যদিকে, মোহনবাগানও জানে যে, একটি ভুল তাদের সকল কিছুকে শেষ করে দিতে পারে। তবে তাদের শক্তিশালী দল এবং গতির মধ্যে মাপা পরিকল্পনাগুলি যথেষ্ট আস্থা জাগাচ্ছে। এই ডার্বি যে কোন দিকেই যেতে পারে, তবে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এটা হতে চলেছে একটি স্মরণীয় মুহূর্ত। সবমিলিয়ে, গুয়াহাটির ডার্বি ঠিক কেমন রঙ নেয় তা দেখে নিতে অপেক্ষা করতে হবে আজকের ম্যাচের ফলাফলের দিকে।