কলকাতা ডার্বি (Kolkata Derby), এক প্রাণবন্ত লড়াই যেখানে বাংলার ফুটবল প্রেমীরা নিজেদের দলের প্রতি আনুগত্য এবং উত্তেজনা উজাড় করে দেন, সেই ডার্বির অপেক্ষা আর মাত্র কয়েকদিন। আগামী ১১ জানুয়ারি গুয়াহাটির স্টেডিয়াম সেজে উঠবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan SG) এবং ইস্টবেঙ্গল এফসির (East Bengal FC) মধ্যে মহাযুদ্ধে। এই ম্যাচের গুরুত্ব সেই অর্থে আরও বেড়ে গেছে। কারণ ডার্বির ফলাফল কেবল আইএসএল টুর্নামেন্টের পয়েন্ট টেবিলের হালচালই বদলাবে না, বরং দুই দলের মর্যাদার প্রশ্নও জড়িত। তবে, এই ম্যাচের আগে কিছু বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে চোটে জর্জরিত ইস্টবেঙ্গল এফসিকে (East Bengal FC) । কিন্তু এরই মধ্যে সুখবর, বুধবার সকালে কলকাতায় এসে পৌঁছেছেনা লাল-হলুদের স্প্যানিশ ফুটবলার (Spanish Footballer) সাউল ক্রেসপো (Saul Crespo)।
UPDATE : East Bengal captain Saul Crespo left Madrid. Probably arrive in kolkata tomorrow early morning.#JoyEastBengal #EastBengalFC
– @ShibajiSports pic.twitter.com/TPPIWZ2DUx— Tᴏʀᴄʜ Bᴇᴀʀᴇʀs 🔴🟡 (@torch__bearers) January 7, 2025
সন্তোষ জয়ের পর ফের নয়া মুকুট বাংলার ফুটবলে, টক্কর ইস্টবেঙ্গলকে
গত কয়েকটি মরসুমে কলকাতা ডার্বির উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দলের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা চলে আসে, এবং যে কোনও দলই চাইবে এই ঐতিহ্যবাহী ম্যাচে জয় পেতে। বিশেষত ইস্টবেঙ্গল, যারা এবারের আইএসএল মরসুমে অতটা সফল হতে পারেনি, তারা এই ডার্বিতে সাফল্য পেলে মর্যাদার প্রশ্নে মোহনবাগানকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে। তবে, সাফল্যের পথটি সহজ নয়।
মহল বাহিনীর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তাদের চোটপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের অবস্থা। স্প্যানিশ তারকা সাউল ক্রেসপো, যিনি ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণভাগের মূল স্তম্ভ, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ চোটের কারণে মাঠের বাইরে। চলতি মরশুমে ওডিশার বিরুদ্ধে খেলার সময় চোট পান ক্রেসপো, এবং এরপর বেশ কিছু ম্যাচে তাকে দেখা যায়নি। তবে, আজ সকালেই কলকাতায় পা রেখেছেন তিনি। এদিনই ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলনে তার উপস্থিতি সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস তৈরি করেছে। তবে, সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, তিনি কলকাতা ডার্বিতে খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সাউল ক্রেসপোর খেলা ইস্টবেঙ্গলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।
ইস্টবেঙ্গলের ছোঁয়াচে রোগ? ডার্বির ৭২ ঘন্টা আগে ধাক্কা বাগান শিবিরে
এদিকে, ক্রেসপোর সঙ্গে চোটের শিকার হয়েছেন মাদিহ তালালও। কিন্তু, তার চোট সাউল ক্রেসপোর তুলনায় অনেক বেশি গুরুতর। তালাল এখন পুরো মরসুম থেকেই ছিটকে গিয়েছেন, যার ফলে ইস্টবেঙ্গলকে তার অভাব অনুভব করতে হবে। তালালের বিকল্প হিসেবে, সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার ফরোয়ার্ড রিচার্ড সেলিসকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যদিও, তারও ডার্বিতে খেলার সম্ভাবনা খুব কম। এই কারণে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণভাগ দুর্বল হতে পারে এবং মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের মতো শক্তিশালী দলটির বিরুদ্ধে তাদের আরও বেশি চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে।
তবে, ইস্টবেঙ্গলের সেরা অস্ত্র হতে পারে তাদের ঐতিহ্য এবং সমর্থকদের উন্মাদনা। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ডার্বি মানেই আলাদা কিছু, এবং ইতিহাস দেখিয়েছে যে কখনে কখন ইস্টবেঙ্গল তার কষ্টকর পরিস্থিতির মধ্যে থেকেও অপ্রত্যাশিতভাবে ভালো পারফরম্যান্স করেছে। এবারেও তাদের তরুণ ফুটবলাররা বড় দায়িত্ব নিতে পারে। সবার দৃষ্টি থাকবে আক্রমণভাগে যারা খেলবেন, তাদের উপর। তবে, এই পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গলের খেলা কতটা সমন্বিত এবং তীব্র হতে পারে, সেটা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে।
নতুন পরিকল্পনা ম্যানেজমেন্টের, আরসিবির দায়িত্বে ফিরছেন কিং কোহলি?
পয়েন্ট টেবিলের বর্তমান অবস্থা ইস্টবেঙ্গলের জন্য বেশ হতাশাজনক। তারা ১১ নম্বরে অবস্থান করছে, এবং ১৪ ম্যাচে মাত্র ১৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। অন্যদিকে, তাদের চির প্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান শীর্ষে অবস্থান করছে। এই অসম অবস্থানে, ইস্টবেঙ্গলের জন্য ডার্বি জেতা আরও বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে। এই মুহূর্তে একমাত্র তিন পয়েন্টই তাদের জন্য বিশেষ কিছু অর্জন হতে পারে এবং দলের সমর্থকদের জন্য একটি বড় উৎসাহের বিষয়।
ভিসা জটে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে কপাল পুড়ল পাকিস্তানের
এখন দেখার বিষয়, চোট সমস্যা সত্ত্বেও ইস্টবেঙ্গল কীভাবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে। তাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে যারা সুযোগ পাবে, তারা কতটা নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারে, সেটাই শেষ পর্যন্ত ডার্বির ফলাফল নির্ধারণ করবে। ইস্টবেঙ্গল যদি তাদের সম্পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করতে পারে, তাহলে এ ম্যাচটি হতে পারে ঐতিহাসিক, যা তাদের মরসুমের গতিপথ বদলে দিতে পারে।