সুপার সিক্সে থেকে ক্রমে দূরে সরছে ইস্টবেঙ্গল

আগের ম্যাচ ড্র করার পর ঘরের মাঠে মুম্বাই এফসির বিরুদ্ধে হেরে সুপার সিক্সে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ করে ফেলল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। ফুটবল বিশেষজ্ঞরা কাঠগড়ায়…

East Bengal FC coach Oscar Bruzon to Footballer

আগের ম্যাচ ড্র করার পর ঘরের মাঠে মুম্বাই এফসির বিরুদ্ধে হেরে সুপার সিক্সে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ করে ফেলল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। ফুটবল বিশেষজ্ঞরা কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন কোচকেই। তাঁরা বলছেন, যুবভারতী স্টেডিয়ামে অস্কার ব্রুজোর দল ঠিক কি করতে চাইল স্পষ্ট নয়।

তাঁরা বলছেন, শৌভিক চক্রবর্তীকে বসিয়ে রেখে আনোয়ারকে অনভ্যস্ত মাঝমাঠে খেলানোর কি মানে আছে বোঝা গেল না। শৌভিক আগের ম্যাচে কার্ড দেখে ছিল এটা ঠিক, কিন্তু ওই পজিশনে আনোয়ার কখনওই শৌভিকের বিকল্প হতে পারে না। তাছাড়া ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণভাগকে দেখে রীতিমত করুণা হচ্ছিল। প্রথমার্ধে ত ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণভাগ থেকে বল মাঝমাঠে সাপ্লাই হল না। রক্ষণভাগের অজস্র ফাঁক দিয়ে বল গলে যেতে লাগল। মুম্বাই সিটি ইচ্ছেমত থ্রু পাস বাড়িয়ে গেল। বিপিন, নিকোসরা অনেক সহজ সুযোগ নষ্ট করলেন। আর কিছু অতিমানবীয় সেভ করলেন প্রভসুখান গিল। নইলে প্রথমার্ধেই লাল-হলুদের পাঁচ গোলে পিছিয়ে পড়ার কথা। তার জায়গায় চাঙ্গতে আর নিকোসের গোলে মুম্বাই সিটি এফসি এগিয়ে রইল ২-০ গোলে বিরতিতে।

   

বিরতির পর কিছুটা হলেও ইস্টবেঙ্গল গা ঝাড়া দিয়ে উঠল। দিয়ামানতাকোসের নেতৃত্বে ইস্টবেঙ্গলের ফরোয়ার্ড লাইনকে কিছুটা চনমনে মনে হল। তাও খেলায় আধিপত্য ছিল মুম্বাইয়েরই। তাও ৬৬ মিনিটে খেলার গতির বিপক্ষে মুম্বাইয়ের বক্সে জটলার মধ্যে থেকে সাহিল পানওয়ারের পায়ে লেগে বল গোলে ঢুকে যায়। এরপর কিছুটা আক্রমণের তীব্রতা বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। ৮৩ মিনিটে ডেভিড গোল করে ম্যাচে সমতাও ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু ৮৭ মিনিটে ক্ষমার অযোগ্য ভুল করলেন হিজাজি। ধারাবাহিকতা বলে কোনও শব্দ হিজাজির অভিধানে নেই। আজ ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স করলেন হিজাজি। প্রথমার্ধে তার পাশ দিয়েই সবচেয়ে বেশি বল গলেছে, ৮৭ মিনিটে খুব ক্যাজুয়ালি বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে একেবারে পায়ের তলা দিয়েই বল গলিয়ে দিয়ে বল সাজিয়ে দিলেন অরক্ষিত থাকা নিকোসকে। প্রভাত লাকরা আর আনোয়ারও দুঃস্বপ্নের মত ম্যাচ খেললেন। এক পয়েন্টও মাঠে ফেলে রেখে এল ইস্টবেঙ্গল। ১৪ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে লীগ তালিকার ১১ নম্বরেই রইল ইস্টবেঙ্গল। তাদের সুপার সিক্সে যাওয়ার আশা আরও ক্ষীণ হয়ে এল এই হারের পর।

ম্যাচের পর আলভিটো ডি কুনহা কার্যত স্বীকার করে নিলেন এই হার ডার্বির আগে অনেকটাই ব্যাকফুটে ঠেলে দিল ইস্টবেঙ্গলকে। মোহন-ইস্ট কলকাতা ডার্বিতে মোহনবাগান এসজির হোম ম্যাচ আয়োজিত হতে চলেছে গুয়াহাটিতে। স্বভাবতি আসামের বাঙালিদের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের সংখ্যা বেশি থাকবে। কিন্তু তারপরেও এই ম্যাচে ফেভারিট হিসাবে শুরু করবে লীগ তালিকার এক নম্বরে থাকা মোহনবাগানই। এতগুলি ম্যাচের মধ্যে এই মুম্বাই সিটির বিরুদ্ধেই অস্কার ব্রুজোঁর পরিকল্পনা ছিল সবচেয়ে দুর্বল, তার ম্যাচ রিডিং-ও ছিল সবচেয়ে খারাপ। তাই ঘরের মাঠেও পয়েন্ট হারিয়ে লীগ তালিকায় আরও বিপাকে পড়তে হল লাল-হলুদ শিবিরকে। ক্রমেই সুপার সিক্সে পৌছানোর স্বপ্ন ক্ষীণ হয়ে আসছে ইস্টবেঙ্গলের। এটা ক্লাবের প্রাক্তন তারকা ফুটবলাররাও কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছেন।