২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup) আমেরিকা (America) দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন স্টুয়ার্ট ল (Stuart Law)। তবে বিশ্বকাপ শেষে, আমেরিকান ক্রিকেটারদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ ওঠে। যার কারণে তাঁকে চাকরি থেকে সরানো হয়। এই ঘটনায় দেশটির ক্রিকেট দুনিয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং স্টুয়ার্ট ল নিজে এখন নতুন চাকরির খোঁজে সমাজমাধ্যমে আবেদন জানান।
বড় চমক! রবি হাঁসদাকে দলে টানল মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব
স্টুয়ার্ট ল, অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার। অতীতে বেশ কিছু দেশের ক্রিকেট দলের কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের জাতীয় দলের কোচিং করেছেন এবং সেই দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তবে তাঁর কোচিং জীবন সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় যখন তিনি আমেরিকা দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমেরিকা দলের কোচ হিসেবে স্টুয়ার্ট ল নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন, যখন তাঁর দল কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছেছিল। এটি ছিল আমেরিকার ক্রিকেট ইতিহাসে একটি বড় অর্জন, এবং ল-এর কোচিংয়ের প্রশংসাও হয়েছিল।
লক্ষ্য তিন পয়েন্ট, মুম্বইয়ের বিপক্ষে অস্কারের প্রথম একাদশে চার বিদেশি, আর কে কে?
তবে, বিশ্বকাপের পরে আমেরিকার ক্রিকেট দলের মধ্যে কিছু গোলযোগ দেখা দেয়। অভিযোগ ওঠে যে, ল তাঁর কোচিং দায়িত্ব পালনকালে কিছু ক্রিকেটারের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন। বিশেষ করে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রিকেটারদের প্রতি তাঁর আচরণ ছিল অপ্রত্যাশিত এবং কুৎসিত, যা দলের পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলেছিল। আমেরিকার ক্রিকেটে ভারতীয় বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের উপস্থিতি বেশ বড়ো এবং এই অভিযোগগুলো তাঁদের সঙ্গেই সম্পর্কিত।
২০২৪ সালে সেরা ১০ তালিকায় বাগান এবং লাল-হলুদের দুই ফুটবলার
এমন অভিযোগে বেশ কয়েকজন বর্ষীয়ান আমেরিকান ক্রিকেটার, যাদের মধ্যে অধিনায়ক মোনাঙ্ক পটেল, হরমিত সিং এবং মিলিন্দ কুমারের মতো ক্রিকেটারও ছিলেন, তাঁরা আমেরিকান ক্রিকেট সংস্থার কাছে একটি চিঠি লিখে স্টুয়ার্ট ল-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। চিঠিতে বলা হয় যে, কোচ নির্বাচিত ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে অবিশ্বাস, অপমান এবং মিথ্যাচারের পরিবেশ তৈরি করেছেন। ক্রিকেটারদের দাবি ছিল, ল কিছু খেলোয়াড়কে অযথা আক্রমণ করেছেন এবং এর ফলে দলের ভিতর অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর মিথ্যা কথার কারণে দলের মধ্যে একে অপরের প্রতি সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। এমনকি, বিশ্বকাপ চলাকালীনও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল, যা দলের মনোবলকে নষ্ট করেছিল।
মোনাঙ্ক পটেল অভিযোগ করেছিলেন যে, ল-এর চোখেমুখে মিথ্যা কথা ছিল এবং তিনি নিজের স্বার্থে দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছেন। পটেল এবং অন্যান্য ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রিকেটাররা অভিযোগ করেছিলেন যে, ল নির্দিষ্ট কিছু ক্রিকেটারকে বাড়তি সুবিধা দিতেন, কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের প্রতি তাঁর আচরণ ছিল দুর্বল ও বৈষম্যমূলক।
আইপিএল ২০২৫ অধিনায়কের তালিকায় কারা?
এই অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকার ক্রিকেট সংস্থা দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে এবং বিষয়টি নিয়ে তারা একটি নিরপেক্ষ পর্যালোচনা করতে উদ্যোগী হয়েছে। তবে, তদন্তের ফলাফল কী হয়, তা এখনও অনিশ্চিত।
চাকরি হারানোর পর, স্টুয়ার্ট ল তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন, যেখানে তিনি তাঁর কোচিং ক্যারিয়ারের পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য চাকরি খোঁজার আবেদন করেছেন। তিনি লিখেছেন, “আমার এখন একটি নতুন চাকরি দরকার। আমি কোচ বা সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করতে চাই।” এই পোস্টে ল তাঁর আগের অভিজ্ঞতা এবং সাফল্যের কথা উল্লেখ করেছেন, যেখানে তিনি বিশ্বকাপে আমেরিকা দলকে কোয়ার্টার ফাইনালে নিয়ে গিয়েছিলেন।